Thank you for trying Sticky AMP!!

ফ্ল্যাটের সঙ্গে প্লটও চাই

আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের স্টলে ফ্ল্যাটের খোঁজ নিচ্ছেন ক্রেতারা। তাঁদের কাছে ফ্ল্যাটের পাশাপাশি প্লট ও ডুপ্লেক্স বাড়ি আছে। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। ছবি: প্রথম আলো
>
  • রিহ্যাবের আবাসন মেলার তৃতীয় দিন
  • অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান ফ্ল্যাটের বুকিং পেয়েছে
  • মেলা শেষ হবে কাল রোববার

ঢাকায় ফ্ল্যাটের জনপ্রিয়তাই সবচেয়ে বেশি। তবে ক্রেতাদের অনেকে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় পছন্দমতো প্লট বা জমিও খুঁজছেন। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে বেশ কয়েকটি আবাসন প্রতিষ্ঠানের কাছে রয়েছে বিভিন্ন এলাকার প্লট।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আবাসন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন রিহ্যাব আয়োজিত আবাসন মেলায় গতকাল শুক্রবার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্যই জানা গেছে। ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল মেলার তৃতীয় দিন সকাল থেকেই বিপুলসংখ্যক ক্রেতা–দর্শনার্থী আসতে থাকেন। ক্রেতারা তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলে ঢুঁ দিয়েছেন।

আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্টস ঢাকার পাশাপাশি সাভার ও মাওয়ায় কয়েকটি প্লট প্রকল্প নিয়ে এসেছে। সেগুলো হচ্ছে মতিঝিলের অদূরে গ্রিন মডেল টাউন, বনশ্রীর পাশে গ্রিন বনশ্রী, মাওয়ায় আমিন মোহাম্মদ সিটি, আরিচা মহাসড়কে আমিন মোহাম্মদ টাউন, উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পের কাছে আশুলিয়া মডেল টাউন, ঢাকা ইপিজেডের কাছে আলোকিত বাংলাদেশ। এসব প্রকল্পে আড়াই কাঠা থেকে শুরু করে ১০ কাঠা পর্যন্ত প্লট আছে। প্রকল্পভেদে প্রতি কাঠার মূল্য পড়বে ৬ লাখ থেকে ৬০ লাখ টাকা।

জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক (বিপণন ও বিক্রয়) শফিউল আলম লস্কর প্রথম আলোকে বলেন, অনেকেই জমির মালিক হতে চান। তা ছাড়া জমি থাকলে আবাসন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে বাড়ি বানিয়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়। সে জন্য প্লট কেনায় ক্রেতাদের আগ্রহ আছে। তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আমাদের প্লট বিক্রি বেড়েছে।’

আমিন মোহাম্মদ ছাড়াও মেলায় পূর্বাচল প্রবাসী পল্লী, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (বিডিসি), ভুলুয়া রয়েল সিটি, গ্রিন ল্যান্ড টাউন, ইনোভেশন হোল্ডিংস, মালুম হাউজিং লিমিটেড, প্রাইম অ্যাসেট ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, রূপান্তর ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, সুবর্ণভূমি হাউজিং লিমিটেড, স্বদেশ প্রপার্টিজ ঢাকাসহ আশপাশের এলাকার প্লট নিয়ে এসেছে।

আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক ২২ প্রকল্পের ৮০০ ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য এনেছে। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির স্টলে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: প্রথম আলো

প্লটের খোঁজখবর নিতে গতকাল দুপুরে মেলায় এসেছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইশতিয়াক হাসান। জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ঢাকার ভেতরে একটি প্লট খুঁজছি। এখনো চাহিদা অনুযায়ী পাইনি। তবে মেলায় একসঙ্গে অনেক প্রতিষ্ঠান থাকায় কিছুটা সুবিধা হয়েছে।’

এদিকে প্লটের পাশাপাশি ফ্ল্যাট নিয়ে এসেছে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপ। তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের কাছে গুলশান, বনানী, মগবাজার, ধানমন্ডি, শান্তিনগরে তাদের ৫০টি প্রকল্পের ৪০০ টির বেশি ফ্ল্যাট আছে। ১৩০০ থেকে ৪৫০০ বর্গফুট আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের মূল্য সাড়ে ৫ হাজার থেকে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে দি ভ্যালি নামের প্রকল্পে ৩,৪ ও ৫ কাঠা জমির ওপর ১৪৪টি ডুপ্লেক্স বাড়ি আছে তাদের। দাম আড়াই কোটি থেকে ৫ কোটি টাকার মধ্যে। ইতিমধ্যে ৪০টি ডুপ্লেক্স বুকিং হয়ে গেছে।

প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মির্জা কায়েস বেগ বলেন, মেলায় ভালোই সাড়া মিলছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ক্রেতারা পরিদর্শন করেছেন।

রাজধানীর লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, কলাবাগান, মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে ২৫ প্রকল্পের প্রায় দেড় শতাধিক ফ্ল্যাট নিয়ে এসেছে ক্রিডেন্স হাউজিং লিমিটেড। ১১০০ থেকে ৩০০০ বর্গফুট আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম সাড়ে ৬ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে। ১ কোটি টাকার মধ্যে মোহাম্মদপুরে দুটি ফ্ল্যাট আছে।

জানতে চাইলে ক্রিডেন্সের কর্মকর্তা মির্জা রোমেল ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ক্রেতারা সাধারণত ১২০০ থেকে ২৫০০ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাট চান। আমাদের কাছে সেই রকম অনেক ফ্ল্যাট আছে। ফলে ক্রেতাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি।’

আবাসন প্রতিষ্ঠান ক্রিডেন্সের স্টলে ফ্ল্যাটের খোঁজ নিচ্ছেন ক্রেতারা। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার গুলশান, বনানী, ধানমন্ডি, উত্তরা, বসুন্ধরা, শান্তিনগর, পল্টন, পশ্চিম ধানমন্ডি, জিগাতলা, কলাবাগানে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের ৪০০ ফ্ল্যাট নিয়ে এসেছে ডমিনো ডেভেলপমেন্টস। তাদের ফ্ল্যাটের আকার ৭৭০ থেকে ৩০০৫ বর্গফুট। প্রকল্পভেদে প্রতি বর্গফুটের দাম সাড়ে ৬ হাজার থেকে ২৪ হাজার টাকার মধ্যে। বনানী, মিরপুর, মালিবাগ ও রাজারবাগে ডমিনোর বাণিজ্যিক ভবন আছে। এসব বাণিজ্যিক ভবনের প্রতি বর্গফুটের মূল্য ২৫ হাজার থেকে ৪৫ হাজার টাকা।

ডমিনোর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন,৫-৬টি ফ্ল্যাট বিক্রির জন্য ক্রেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়েছে। মেলা শেষ হওয়ার আগে সেগুলো চূড়ান্ত হবে। আরও কিছু ফ্ল্যাট বুকিং হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আনোয়ার গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক বসুন্ধরা, উত্তর গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা, মিরপুর, শ্যামলীতে ২২ প্রকল্পের ৮০০ ফ্ল্যাট নিয়ে এসেছে। ফ্ল্যাটের আকার ৯৮০ থেকে ৬৫০০ বর্গফুট। প্রতি বর্গফুটের মূল্য ৬ হাজার থেকে ২৮ হাজার টাকার মধ্যে।

জানতে চাইলে আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের উপব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শহীদ পারভেজ গতকাল দুপুরে বলেন, ‘মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য মিরপুর ও শ্যামলীতে আমাদের ফ্ল্যাট আছে।’ তিনি বলেন, ‘মেলার প্রথম দুই দিন দর্শনার্থী তুলনামূলক কম ছিল। তবে তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ ছিলেন প্রকৃত ক্রেতা। আজ (গতকাল) অনেকে আসছেন। আশা করছি, শেষ পর্যন্ত মেলায় বিক্রিবাট্টা ভালোই হবে।’

রিহ্যাবের আবাসন মেলা গত বুধবার শুরু হয়েছে। এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে ২০২টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ১৬৮টি আবাসন প্রতিষ্ঠান, ২০টি নির্মাণসামগ্রী ও ১৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছে। মেলা শেষ হবে কাল রোববার।

ডমিনো ডেভেলপমেন্টসের স্টলে ফ্ল্যাটের তথ্য নিচ্ছেন একজন ক্রেতা। গতকাল বিকেলে রিহ্যাবের আবাসন মেলায়। ছবি: প্রথম আলো

জানতে চাইলে রিহ্যাবের সহসভাপতি কামাল মাহমুদ গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, মেলায় বিপুল ক্রেতা–দর্শনার্থী আসছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতা-দর্শনার্থী বেড়েছে। ইতিমধ্যে অনেক আবাসন প্রতিষ্ঠান ফ্ল্যাট ও প্লটের বুকিং পেয়েছে। অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রথম দুই দিনে পাঁচ হাজার দর্শনার্থী এসেছেন। আজ (গতকাল) এক দিনেই সেই পরিমাণ দর্শনার্থী আসবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।’