Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা আরসিবিসির

অর্থ চুরির ঘটনার জেরে এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংক করপোরেশন (আরসিবিসি)। ম্যানিলাভিত্তিক ব্যাংকটির দাবি, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইবার চুরির ওই ঘটনায় আরসিবিসির বিরুদ্ধে সহযোগিতার যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৬ মার্চ ম্যানিলার মাকাতি সিটির রেজিওনাল ট্রায়াল কোর্টে মানহানির মামলাটি করা হয়েছে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘প্রকাশ্য ও প্রবল আক্রমণের’ কারণে আরসিবিসির মানহানি হয়েছে। এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে অন্তত ১০ কোটি পেসো (১৯ লাখ মার্কিন ডলার) দাবি করেছে ব্যাংকটি।

বিবৃতিতে আরসিবিসি বলে, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশ্যে মানহানি, হয়রানি ও হুমকি দিয়ে আরসিবিসির সুনাম, মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। আরসিবিসি যে অর্থ কখনোই নেয়নি, তা পেতেই এই প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ও বাংলাদেশ ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান এবং চলতি সপ্তাহে ফিলিপাইন সফর করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যদের বিবাদী করা হয়েছে। ফিলিপাইনের ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে ওই প্রতিনিধিদল দেশটিতে সফর করে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি দল ফিলিপাইনে অবস্থান করছে। সেখানে নিউইয়র্ক ফেড ও নিউইয়র্কের আইনি সংস্থার প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী উপস্থিত রয়েছেন। আইন অনুযায়ী কোনো সমঝোতা করা যায় কি না, ঠিক এই উদ্দেশ্যে যখন দলটি ফিলিপাইন গেল, তখনই তারা মামলাটি করল। এখন বাংলাদেশের পক্ষের আইনি সংস্থা বিষয়টি দেখবে।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেন হ্যাকাররা। চুরি হওয়া অর্থের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় যাওয়া ২ কোটি ডলার ফেরত আসে। আর ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এখনো ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার উদ্ধার হয়নি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৫৭ কোটি টাকা। ওই অর্থ ম্যানিলায় আরসিবিসির একটি শাখার মাধ্যমে ফিলিপাইনের ক্যাসিনো শিল্পে পাঠানো হয়।

ওই অর্থ উদ্ধারে ও দোষী ব্যক্তিদের বিচারে গত ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা করে বাংলাদেশ। মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রায় তিন বছর আগে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার অজ্ঞাতনামা হ্যাকাররা হাতিয়ে নেন। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরির সঙ্গে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও এগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা জড়িত।

এর আগে রিজার্ভ চুরির ওই ঘটনায় গত জানুয়ারিতে ফিলিপাইনের একটি আদালত আরসিবিসি ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মাইয়া দেগুইতোকে মানি লন্ডারিংয়ের আটটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কারাদণ্ড ও মোট ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানা করেন। মাইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে প্রমাণিত প্রতিটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন চার বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে ফিলিপাইনে। সে হিসাবে তাঁকে ৩২ বছর থেকে ৫৬ বছর পর্যন্ত কারাভোগ করতে হবে। আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন তিনি। বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন মাইয়া।