Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে তেলসংকট

ভোজ্যতেলের বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী ।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘সয়াবিন তেলের সংকটের পেছনে কারসাজি করেছেন খুচরা ব্যবসায়ী ও পরিবেশকেরা। তাঁদের কারসাজির কারণেই বাজারে তেলের সংকট তৈরি হয়েছে। অথচ রমজান মাসে ভোজ্যতেলের দাম না বাড়াতে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছিলাম আমরা। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সে কথা রাখেননি। ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করাটাই ছিল আমাদের ভুল।’

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ভোজ্যতেলের বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট কেন তৈরি হলো, তেলের দাম কেন বাড়ল, তা জানতে এ বৈঠকের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিকুল আথহার, এস আলম গ্রুপের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের ব্যর্থতা এটা ঠিক। কারণ, ব্যবসায়ীদের ভালোবেসে বলেছিলাম, রমজান মাসে সয়াবিন তেলের দাম বাড়াবেন না। তাঁদের বিশ্বাস করেছিলাম। এই বিশ্বাস করা আমাদের ব্যর্থতা। ছোটবেলায় পড়েছিলাম, মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ। মানুষকে বিশ্বাস করতে হয়। কিন্তু ব্যবসায়ীরা কথা রাখেননি।’

রোজার ঈদের আগে হঠাৎ করে বাজার থেকে সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যায়। ঈদের ছুটি শেষে প্রথম কর্মদিবসে সরকার প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করে। আর খোলা সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৮০ টাকা করা হয়। দাম বাড়ানোর পরও সয়াবিন তেলের বাজার এখনো স্বাভাবিক হয়নি।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, তেলের সংকটের জন্য মিলমালিকেরা দায়ী নন। তেল বাজারে আছে, তেল বাজার থেকে শেষ হয়ে যায়নি। হঠাৎ করে দাম বাড়ার সিদ্ধান্তে খুচরা বিক্রেতারা বাজারে সংকট তৈরি করেছেন। দু-এক দিনের মধ্যে বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের আমদানিমূল্য ১ হাজার ৭৫০ ডলার ধরে দেশে প্রতি লিটার তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯৮ টাকা। কিন্তু এখন প্রতি টন সয়াবিন তেল আমদানিতে খরচ পড়ছে ১ হাজার ৯৫০ ডলার। দেখেন সামনে কী হতে যাচ্ছে। এ কথাগুলো গণমাধ্যমে বলা দরকার।’ নতুন বাড়তি দর হিসাব করে পরে আবার দাম সমন্বয় করতে হবে বলে জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে সত্য বলতে হবে, তা যত কঠিন হোক। আমি যেমন স্বীকার করেছি, ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করা ভুল হয়েছে। ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়েছেন। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দাম বাড়াবেন না, কিন্তু কথা রাখেননি।’ মন্ত্রী জানান, আগামী জুন মাস থেকে এক কোটি পরিবারকে ন্যায্যমূল্যে তেল দেওয়া হবে টিসিবির মাধ্যমে।