Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যাংক হিসাবের আওতায় আসছেন শ্রমিকেরা

৮০ শতাংশ রপ্তানি হয়, এমন কারখানার শ্রমিকেরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আসছেন। কারণ, এসব কারখানার মালিকেরা যদি সরকারের তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে শ্রমিকদের বেতন দিতে চান, তাহলে সব শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব লাগবে। যাঁদের হিসাব নেই, তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে হিসাব খুলতে হবে। ওই হিসাবেই শ্রমিকের মাসের বেতন জমা হবে। এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সব শ্রমিকের নিজের একটি ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব হবে, যা দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে এক ধাপ এগিয়ে নেবে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা। ফলে সহজেই জানা যাবে আর্থিক লেনদেনের চিত্র।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ‘রকেট’ পরিচালনা করছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যাংকটির এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সারা দেশে ছড়িয়ে আছে। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মোহাম্মদ শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকদের হিসাব খোলা এখন কোনো সমস্যাই না। এ জন্য তাঁদের উপস্থিত থাকতে হবে বা তাঁদের শিক্ষিত হতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। প্রতিটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের ডেটাবেইস আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে তার ভিত্তিতেই হিসাব খুলে দেওয়া সম্ভব। এখনই সঠিক সময়, সবার হিসাব খোলার।

রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকদের বেতন দিতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গ্রহণ করেছে সরকার। ওই তহবিল পরিচালনার নীতিমালা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী, বেতনের টাকা সরাসরি শ্রমিকের হিসাবে পাঠিয়ে দেবে ব্যাংকগুলো। যাঁদের হিসাব নেই, তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ভিত্তিতে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব (এমএফএস) খোলার উদ্যোগ নিতে হবে। শ্রমিকেরা চাইলে বিনা মসুলের ব্যাংক হিসাবও খুলতে পারেন। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই সব শ্রমিকের এনআইডি পরীক্ষা করতে হবে। বেতনের টাকা যেন সরাসরি শ্রমিকেরা পান, এ জন্যই এই উদ্যোগ। যদিও এ নিয়ে তৈরি পোশাক খাতের অনেক ব্যবসায়ীর আপত্তি আছে।

একাধিক বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আগে থেকে অনেক চেষ্টা করেছেন, যাতে সব শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। তবে সব কারখানার মালিক এতে রাজি ছিলেন না। কারণ, অনেক শ্রমিককে সময়মতো বেতন দেওয়া হয় না। আবার অনেককে ওভারটাইম করতে হয়। এসব তথ্য গোপন করতেই কারখানার মালিকেরা শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাব খুলতে দেননি। এখন যে সুযোগ এসেছে, তার পুরোপুরি ব্যবহার করতে হবে।

ব্যাংকাররা বলছেন, মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খোলা এখন বেশ সহজ। এনআইডি দিয়ে মিনিটেই হিসাব খোলা যায়। আবার এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার এজেন্টের থেকেও সহজেই হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে। ব্যাংক হিসাব খোলাও আগের চেয়ে সহজ হয়েছে। ডিজিটাল কেওয়াইসি (গ্রাহক-সম্পর্কিত তথ্য) ব্যবহার করে হিসাব খোলা যাচ্ছে। সরকার চাইলে বিশেষ বিবেচনায় শুধু এনআইডি দিয়ে হিসাব খোলার উদ্যোগ নেওয়া যাবে। এসব হিসাবে শুধু বেতনের টাকা জমা হবে।

বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শুরু থেকে কাজ করছেন ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী। ব্যাংক এশিয়া এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সারা দেশে বিস্তৃত। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সব শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব খোলার এখনই উপযুক্ত সময়। হিসাব খোলা কোনো সমস্যাই নয়। শুধু এনআইডি ও মোবাইল নম্বর দিয়ে হিসাব খোলা যায়। এভাবে আমরা বেশ আগে থেকে সরকারের সামাজিক ভাতা দিয়ে আসছি। এ জন্য প্রয়োজনে কেওয়াইসি নীতিমালায় একটু ছাড় দিতে হবে। হিসাবগুলো শুধু শ্রমিকদের বেতন প্রদানের জন্য ব্যবহার করা হবে।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, এখন মিনিটেই বিকাশ হিসাব খোলা যায়। এ জন্য কোথাও যেতেও হয় না।