Thank you for trying Sticky AMP!!

ভ্যাট অব্যাহতি চায় বেকারি খাত

দেশে বর্তমানে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫০ টাকা পর্যন্ত রুটি, বিস্কুট ও কেকের ওপর ভ্যাটমুক্ত রয়েছে।

হস্তচালিত রুটি, বিস্কুট ও কেক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার ধাক্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এর ওপর আটা, ময়দা, সয়াবিনসহ এই খাতের সব ধরনের প্রয়োজনীয় কাঁচামালের দাম বেড়ে গেছে। শুধু তা-ই নয়, দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি শিল্পগোষ্ঠী বেকারি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করায় হস্তচালিত রুটি, বিস্কুট ও কেক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে হাতে তৈরি পাউরুটি, বনরুটি, বিস্কুট ও কেক পণ্যকে (পার্টি কেক ছাড়া) ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রুটি বিস্কুট ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি। তারা বলেছে, বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসায় ধরে রাখতে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধাটি দরকার। কারণ, তারা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কম দামে বিস্কুট, পাউরুটি, বনরুটি ও কেক উৎপাদন করে। এ ধরনের পণ্যে রেয়াত নেওয়ার সুযোগ কম। আর উদ্যোক্তাদের বেশির ভাগই অশিক্ষিত। তাই হিসাবপত্র রাখার সুযোগ নেই তাঁদের। এ ছাড়া বিস্কুট, পাউরুটি, বনরুটি ও কেক তৈরির উপাদান আটা, ময়দা, চিনি ও তেলে ভ্যাট নেই। সে জন্য হাতে তৈরি পাউরুটি, বনরুটি, বিস্কুট ও কেকে ভ্যাট থাকা মোটেও কাম্য নয়।

ছোট ব্যবসায়ীদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে বিক্রয় পর্যায়ে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক লেনদেন ভ্যাটমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।
মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, সভাপতি, বাংলাদেশ রুটি বিস্কুট ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি

সমিতির তথ্য অনুযায়ী, করোনার আগে সারা দেশে প্রায় পাঁচ হাজার বেকারি ছিল। মহামারিকালে হাজারখানক সাময়িকভাবে বন্ধ হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হলে অনেকে ব্যবসায় ফেরেন। তারপরও প্রায় ২০০ বেকারি স্থায়ীভাবে ব্যবসা থেকে ছিটকে গেছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) দেওয়া বাজেট প্রস্তাবে বাংলাদেশ রুটি বিস্কুট ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি ২০১২ সালের মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইনের ২৬ ধারার আলোকে ভ্যাট অব্যাহতির তালিকায় হাতে তৈরি পাউরুটি, বনরুটি, বিস্কুট ও কেক অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। তাদের যুক্তি, দেশের গ্রামগঞ্জে, উপজেলা, জেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়কের পাশে ছোট ছোট দোকানে পাউরুটি, বনরুটি, কেক, বিস্কুটসহ বিভিন্ন ধরনের কনফেকশনারি বিক্রি হয়। আর এসব পণ্যের ভোক্তা হচ্ছেন দিনমজুর, শ্রমিক, রিকশাচালক, সবজি বিক্রেতাসহ সমাজের নানা শ্রেণি ও পেশার লোক। ফলে এসব পণ্যে ভ্যাট থাকা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়।

বর্তমানে হাতে তৈরি পাউরুটি, বনরুটি, বিস্কুট ও কেকের উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি কেজি ১৫০ টাকা পর্যন্ত রুটি, বিস্কুট ও কেকে ভ্যাট দিতে হয় না। বিক্রয় পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। তা ছাড়া বিক্রয় পর্যায়ে বছরে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন ভ্যাটমুক্ত ছিল। তবে এসআরওর মাধ্যমে বর্তমানে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট নেওয়া হচ্ছে। এমনটি উল্লেখ করে সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ছোট ব্যবসায়ীদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে বিক্রয় পর্যায়ে ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক লেনদেন ভ্যাটমুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।

মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন আরও বলেন, বিভিন্ন সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঝেমধ্যেই বেকারিগুলোতে অভিযান চালায়, জরিমানা করে। তাতে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হন। সেটি বন্ধে একটি সংস্থার অধীনে তদারকি হলে শৃঙ্খলা আসবে।