Thank you for trying Sticky AMP!!

মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে ৮৪৭টি অভিযোগ

>
  • আজ ভোক্তা অধিকার দিবস।
  • ৯ মাসে চার অপারেটরের বিরুদ্ধে ৮৪৭ অভিযোগ।
  • অভিযোগের কোনো প্রতিকার করতে পারছে না অধিদপ্তর।

দেশের মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে (ডিএনসিআরপি)। গত জুন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নয় মাসে চারটি অপারেটরের বিরুদ্ধে গ্রাহকেরা ৮৪৭টি অভিযোগ করেছেন। ইন্টারনেট প্যাকেজের নামে প্রতারণা, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেবা না দেওয়া ও গ্রাহকের অজান্তে টাকা কেটে নেওয়ার ঘটনায় এসব অভিযোগ করা হয়েছে।
অবশ্য অধিদপ্তর এসব অভিযোগের কোনো প্রতিকার করতে পারছে না। কারণ, মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত এ বিষয়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। ফলে অন্যান্য অভিযোগ যেখানে দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে যাচ্ছে, সেখানে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মাসের পর মাস অপেক্ষায় রয়েছেন গ্রাহকেরা।
বর্তমানে অধিদপ্তরে ১ হাজার ২৪৫টি অভিযোগ অনিষ্পন্ন অবস্থায় আছে, যার মধ্যে ৬৮ শতাংশ মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে। জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, দেশের ১৩ কোটি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। অপারেটররা নানা ধরনের চটকদার প্যাকেজ দেয়। অনেক সময় গ্রাহকেরা সাংঘাতিকভাবে প্রতারণার শিকার হয়। অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি হলে গ্রাহকেরা কিছুটা হলেও প্রতিকার পেত। তাই রিট আবেদনটি দ্রুত নিষ্পত্তির অনুরোধ জানান গোলাম রহমান।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস পালন করবে বাংলাদেশ। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটাল বাজারব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিতকরণ’।
২০০৯ সালের ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন করে। এরপর ৩০ জুন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংস্থাটি ১১ মার্চ পর্যন্ত ক্রেতাদের কাছ থেকে ১৩ হাজার ৫৫৪টি অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১২ হাজার ৩০৯টি।
সম্প্রতি অভিযোগের হার খুব দ্রুত বাড়ছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অধিদপ্তরে গ্রাহকেরা ৬৬২টি অভিযোগ জমা দেন। পরের বছর তা বেড়ে ৩ হাজার ১৪০টিতে উন্নীত হয়।

মোবাইল অপারেটরের রিট
গ্রাহকের অভিযোগের ভিত্তিতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে গত বছরের শুরুতে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে ডিএনসিআরপি। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানান, প্রায় আটটি অভিযোগে তিনটি অপারেটরকে নয় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। আরও কয়েকটি অভিযোগ নিষ্পত্তির পর্যায়ে ছিল। এরই মধ্যে রবি জরিমানার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট আবেদন করে। এ ক্ষেত্রে তাদের যুক্তি হলো, আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার কোনো বিধিমালা নেই এবং জুডিশিয়াল গাইডলাইন নেই। এগুলো হওয়ার আগে অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।
অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, রবির রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ মে হাইকোর্ট কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ভোক্তা অধিকার আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এরপর আর রিট আবেদনটির শুনানি হয়নি।
অধিদপ্তরের পক্ষে মামলাটি পরিচালনায় আছেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জাকির হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলাটি কার্যতালিকায় আছে। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা প্রস্তুত। আশা করি, দ্রুতই এর শুনানি হবে।’
এদিকে মোবাইল ফোন অপারেটরদের বিরুদ্ধে জরিমানার খবরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত ১ জুন থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে ৮৪৭টি অভিযোগ জমা পড়ে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র ইকরাম কবীর বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন বলে উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্কর বলেন, ‘আমরা চাই এটি দ্রুত নিষ্পত্তি হোক, যাতে গ্রাহকের অভিযোগের একটা প্রতিকার করা যায়।’