Thank you for trying Sticky AMP!!

যাঁরা ডিম ভাজি খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ

সকালের নাশতায় পরোটা বা রুটির সঙ্গে যাঁরা ডিম ভাজি খেতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য দুঃসংবাদ আছে। পেঁয়াজের দাম আগে থেকেই বাড়তি ছিল। নতুন খবর হচ্ছে ডিমের দামও বেড়েছে। কম দামি নিত্যপণ্যের তালিকা থেকে চড়া দামের তালিকায় যোগ দিয়েছে ডিম। বাজারে এখন এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়। কয়েক দিন আগেও ঢাকায় প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ১০০ টাকার মধ্যে ছিল। আর ডিম ভাজির আরেক উপকরণ কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০-৮০ টাকা।

ঢাকার পাড়া-মহল্লার ছোট দোকানে একটি-দুটি ডিম কিনতে গেলে মানুষকে হালিপ্রতি ৪০ টাকাই দিতে হচ্ছে। হাঁসের ডিমের দাম আরও চড়া। প্রতি ডজন ১৪০ টাকা ও হালি ৪৮ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।

ঢাকার অনেক রেস্তোরাঁয় এখন ডিম ভাজির দাম ২০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছেন মালিকেরা, যা আগে ছিল ১৫ টাকা। রেস্তোরাঁর মালিকেরা বলছেন, ডিমের দাম যেমন চড়া, তেমনি ডিম ভাজার পেঁয়াজের দামও লাগামছাড়া। খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম না বাড়িয়ে উপায় নেই।

তবে ডিমের দাম এত বেশি কেন, জানতে চাইলে তেজগাঁও ডিমের আড়ত মালিক সমিতির উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ডিমের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম। খামারিদের অনেক মুরগি গত কয়েক মাসে রোগে (এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা) মারা গেছে। অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। আবার অনেক খামারি নতুন করে তাঁদের খামারে মুরগি ওঠাননি। ফলে এখন সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ডিমের দাম প্রায়ই ওঠা–নামা করে।

এর আগে অবশ্য গত জুলাই মাসে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১২০ টাকা উঠেছিল। তখনো সরবরাহসংকটের কথা বলেছিলেন ব্যবসায়ীরা।

নিত্যপণ্যের আড়তদারেরা জানান, পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করে ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে। এর আগের দিন ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলারে (প্রায় ৭২ হাজার টাকা) বেঁধে দেয়। এ খবর জানার পরদিনই ঢাকার পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকা হয়ে যায়, এখন যা কেজিপ্রতি ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ কিছুটা কম দামে কেজিপ্রতি ৭০ টাকা দরে পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, গত বছর দেশে প্রায় ১১ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়, যার প্রায় পুরোটাই আসে ভারত থেকে। আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে ২৪ লাখ টনের মতো পেঁয়াজের চাহিদা আছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, উৎপাদন ২৩ লাখ টনের মতো। এর ৩০ শতাংশ অবশ্য সংরক্ষণকালে পচে যায়। সব মিলিয়ে বড় একটি অংশের জন্য আমদানিনির্ভরতা থাকেই।

>

পেঁয়াজের দাম কোনোভাবেই কমছে না
ডিমের দামও বেড়েছে
ডিমের ডজন ১১০-১১৫ টাকা
রসুন-আদার দাম আগের মতোই চড়া
কাঁচা মরিচ কেজিপ্রতি ৬০-৮০ টাকা

ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা মিসর ও তুরস্কের পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন। তা আগামী সপ্তাহে বাজারে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সেখানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬২-৬৫ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম আগের চেয়ে সামান্য কম।

এদিকে টিসিবি (ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ) আগামী সপ্তাহে ঢাকায় পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ বাড়াবে। সংস্থাটির মুখপাত্র হ‌ুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল শনিবার থেকে ১৬টি ট্রাকে করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হবে। গতকাল পর্যন্ত ঢাকায় ১০টি ট্রাকে প্রতিটিতে ১ হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। টিসিবির পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা, যা বাজারের চেয়ে প্রায় ২৫ টাকা কম।

পেঁয়াজের মতো রসুন ও আদার বাজারেও ক্রেতাদের জন্য কোনো সুখবর নেই। বাজারে এখন দেশি রসুন ১৫০-১৬০ টাকা, চীনা রসুন ১৪০-১৬০ টাকা ও চীনা আদা ১৫০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সব মিলিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম চড়া। আগামী শীতে নতুন মৌসুমের পণ্য বাজারে ওঠার আগে দাম নিয়ন্ত্রণে আসার সুখবরও দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

এদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। এত দিন পবিত্র ঈদুল আজহার প্রভাবে ব্রয়লার মুরগির দর কম ছিল। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। ঈদের সময় ছিল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।

তবে চাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি ও অন্যান্য পণ্যের দামে তেমন কোনো হেরফের হয়নি।