Thank you for trying Sticky AMP!!

রডের দাম বাড়বে ১০,৯২৫ টাকা

প্রথম আলো ফাইল ছবি

আগামী অর্থবছরের বাজেটে উৎপাদন থেকে বিক্রয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট এবং অগ্রিম আয়কর বাড়ানোর প্রস্তাবের কারণে প্রতি টন রডের দাম ১০ হাজার ৯২৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। তাতে প্রতি টন রডের দাম ৭০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে খুচরা পর্যায়ে প্রতি টন রডের দাম ব্র্যান্ডভেদে ৬২ হাজার থেকে ৬৭ হাজার টাকা।

রড উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, রডের দাম ১০ হাজার টাকার বেশি বাড়লে ভবনের কাঠামোর নির্মাণ খরচ ১০-১২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। সেটি হলে চাপে পড়বেন ভোক্তারা। পাশাপাশি সরকারের অবকাঠামো নির্মাণ ব৵য়ও বাড়বে। তা ছাড়া নির্মাণ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৩ হাজার ৬০০ পণ্য ও সেবার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপ বিক্রয়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে টনপ্রতি স্ক্র্যাপে ভ্যাট ৩০০ টাকা। আর স্ক্র্যাপ আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া বাজেটে বিলেট বিক্রয়ে প্রতি টনে ৪৫০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা, উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি টনে রডে ৪৫০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে রড বিক্রিতে প্রতি টনে ২০০ টাকার পরিবর্তে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া বাজেটে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপ, বিলেট ও রড বিক্রিতে টনপ্রতি সর্বনিম্ন ৩ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপের প্রস্তাবের কথা বলা হয়। অবশ্য গতকাল সোমবার এক প্রজ্ঞাপনে বিলেট বিক্রয়ে অগ্রিম আয়কর হ্রাস করে দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) সমিতি হিসাব দিয়ে বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাটের হার বাড়ানোর কারণে টনপ্রতি রডে ৭ হাজার ৬৫০ টাকা খরচ বাড়বে। আর তিনটি পর্যায়ে নতুন করে অগ্রিম আয়কর আরোপ করায় বাড়বে ৩ হাজার ২৭৫ টাকা। সব মিলিয়ে প্রতি টন রডের দাম ১০ হাজার ৯২৫ টাকা বাড়তে পারে।

জানতে চাইলে বিএসএমএর চেয়ারম্যান মানোয়ার হোসেন গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতি টন রডে ১০ হাজার ৯২৫ টাকা দাম বাড়লে তা ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। পুরো বাজারেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে।’ তিনি বলেন, রডের দাম বাড়লে সরকারের অবকাঠামো নির্মাণ খরচও বৃদ্ধি পাবে। তাতে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে যাবে।

স্ক্র্যাপ আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর আরোপের বিষয়ে মানোয়ার হোসেন বলেন, কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর দিতে হলে কারখানাগুলোর পরিচালন মূলধনে টান পড়বে। এটি শুধু বাণিজ্যিক আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হওয়া দরকার।

>

রডের দাম বাড়লে নির্মাণ ব্যয় বাড়বে
চাপে পড়বেন ভোক্তারা
সরকারের অবকাঠামো নির্মাণ খরচও বাড়বে

রড উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর কমানোর বিষয়ে গত রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইস্পাত খাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা রডের দাম কত বাড়তে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা দেন। একই সঙ্গে স্ক্র্যাপ বিক্রিতে প্রতি টনে ৪৫০ টাকা, বিলেটে ৭৫০ টাকা, রডের উৎপাদন পর্যায়ে ৭৫০ টাকা ও বিক্রয় পর্যায়ে ৩০০ টাকা ভ্যাট আরোপ করার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। তাঁরা জানান, এতে করে ৪৬৭ কোটি টাকা বাড়তি ভ্যাট আসবে।

এ ছাড়া স্ক্র্যাপ ও বিলেট বিক্রিতে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা কেবল রড বিক্রিতে টনপ্রতি ৩০০ টাকা অগ্রিম আয়কর দিতে চান। এতে বাড়তি ১৬৫ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে এনবিআরকে আশ্বাস দেন ব্যবসায়ীরা।

মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘গ্রামগঞ্জের মানুষ পাকা বাড়িঘর নির্মাণ করেন। রডের দাম বাড়লে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রী রডের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে রাখতে সুনজর দেবেন। সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।’