Thank you for trying Sticky AMP!!

রডের দাম বাড়লে উন্নয়ন শ্লথ হবে

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ), বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে। ছবি: প্রথম আলো

আগামী অর্থবছরের বাজেটে রডের ওপর যে হারে ভ্যাট বৃদ্ধি ও অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হয়েছে, সেটিকে অবাস্তব হিসেবে উল্লেখ করেছে ইস্পাত খাতের ব্যবসায়ীদের তিন সংগঠন। তারা বলছে, টনপ্রতি রডের দাম ১২ হাজার টাকা বেড়ে যেতে পারে। সেটি হলে উন্নয়নের গতি শ্লথ ও ভোক্তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ), বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন আজ মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে।

সংবাদ সম্মেলনে তিন সংগঠনের নেতারা বলেন, রডের কাঁচামাল, উৎপাদন ও বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট বৃদ্ধি ও তিন পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর আরোপ করায় রডের দাম টনপ্রতি ১২ হাজার ৩০০ টাকা বৃদ্ধি পাবে। তাতে খুচরা পর্যায়ে রডের দাম টনপ্রতি ৭৫ হাজার টাকা হতে পারে। সেটি হলে রডের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।

অবশ্য গতকাল সোমবার এক প্রজ্ঞাপনে বিলেট বিক্রয়ে অগ্রিম আয়কর ৩ শতাংশ থেকে হ্রাস করে দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। সেটি হিসাবে নিলে টনপ্রতি রডে বৃদ্ধি পাবে ১০ হাজার ৯২৫ টাকা বলে জানান বিএসএমএর চেয়ারম্যান মানোয়ার হোসেন।

মানোয়ার হোসেন বলেন, স্টিল পণ্যের দাম সহনীয় থাকায় দেশের অবকাঠামো ও গ্রাম পর্যায়ে আবাসন নির্মাণে গত ১০ বছরে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ সালে দেশে স্টিলের ব্যবহার ছিল মাত্র ১৬ লাখ টন। বর্তমানে সেটি বেড়ে ৫৫ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া রডের ওপর ভ্যাট ও শুল্ক বাড়ানোর বিপক্ষে। তবে এনবিআরের নিচের পর্যায়ের কর্মকর্তারা ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির পেছনে নানা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বিষয়টি বুঝতে পারবেন।

রডের কাঁচামাল, উৎপাদন ও বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট বৃদ্ধি এবং তিন পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর আরোপের বিষয়টি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। অবশ্য তার আগেই বিষয়গুলো সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মানোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘৩০ জুন পর্যন্ত আমরা রডের বাজার শক্তভাবে তদারকি করছি, যাতে বাজার কোনোভাবেই অস্থিতিশীল না হয়। এই সময়ে কেউ (ব্যবসায়ী) রডের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তাঁকে আমরা উৎপাদকেরা পণ্য দেওয়া বন্ধ করে দেব।’

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপ বিক্রিতে ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে টনপ্রতি স্ক্র্যাপে ভ্যাট ৩০০ টাকা। বিলেট বিক্রিতে টনপ্রতি ৪৫০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা ভ্যাট নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া উৎপাদন পর্যায়ে প্রতি টন রডে ৪৫০ টাকার পরিবর্তে ২ হাজার টাকা ভ্যাট এবং খুচরা পর্যায়ে রড বিক্রিতে প্রতি টনে ২০০ টাকার পরিবর্তে ৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাজেটে রডের কাঁচামাল স্ক্র্যাপ, বিলেট ও রড বিক্রিতে টনপ্রতি ৩ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা স্ক্র্যাপ বিক্রিতে প্রতি টনে ৪৫০ টাকা, বিলেটে ৭৫০ টাকা, রডের উৎপাদন পর্যায়ে ৭৫০ টাকা ও বিক্রয় পর্যায়ে ৩০০ টাকা ভ্যাট আরোপ করার দাবি জানান।এ ছাড়া স্ক্র্যাপ ও বিলেট বিক্রিতে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করে কেবল রডের ওপর টনপ্রতি ৩০০ টাকা অগ্রিম আয়কর নির্ধারণের দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্টিল মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শেখ ফজলুর রহমান, রি-রোলিং ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর হোসেন, সহসভাপতি আবু বকর সিদ্দিক, বিএসএমএর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাসাদুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শহিদউল্লাহ, এমএস রড মার্চেন্ড অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন প্রমুখ।