Thank you for trying Sticky AMP!!

সুসংবাদের আড়ালে দুঃসংবাদ!

.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। পোশাক রপ্তানিতে চলতি বছরের প্রথম দুই (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) ও তিন মাস (মার্চ) শেষে বাজারটিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৮২ এবং ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর চতুর্থ বা এপ্রিল শেষে সেটি বেড়ে ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে একক দেশ হিসেবে পোশাকের বড় এই বাজারে বাংলাদেশের তৃতীয় অবস্থানটি টিকে আছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বড় এই বাজারটিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়ে আসছিল বাংলাদেশের। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেটি ইতিবাচক ধারায় ফেরে। বছরের প্রথম চার মাস অর্থাৎ জানুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৬৩ কোটি বর্গমিটারের সমপরিমাণ ১৮২ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এই আয় গত বছরের একই সময়ের ১৭০ কোটি ডলারের চেয়ে ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ বেশি।
অবশ্য এই সুসংবাদের আড়ালে দুঃসংবাদও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগী দুই দেশ ভিয়েতনাম ও ভারতের কাছে প্রবৃদ্ধির বিচারে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। এ বছরের প্রথম চার মাসে ভিয়েতনাম ৩২৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাদের প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে ভারত একই সময়ে ১৪০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। ১১ দশমিক ৬৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে দেশটির। বছরের প্রথম দুই ও তিন মাস শেষে ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৭ দশমিক ৭১ ও ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্স অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (অটেক্সা) সম্প্রতি এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। অটেক্সা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক, বস্ত্র ও পাদুকার আমদানির তথ্য অর্থ ও পরিমাণ (বর্গমিটার) এই দুই হিসাবেই নিয়মিত প্রকাশ করে থাকে।
দুই প্রতিযোগী দেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নিট পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি ভালো সংবাদ নয়। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধস ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে পোশাকের ক্রয়াদেশ অন্য দেশে নিয়ে যায়। আর একবার ক্রয়াদেশ ফেরত গেলে তা ফিরিয়ে আনা খুবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে ভারত ও ভিয়েতনাম সরাসরিভাবে লাভবান হয়েছে। কারণ তারা আমাদের চেয়ে অনেক সুসংগঠিত হয়ে কাজ করছে।’
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি কিছুটা শক্তিশালী হওয়ায় সে দেশে রপ্তানি বেড়েছে বলে মনে করেন বিকেএমইএর সাবেক এই নেতা। তিনি বলেন, ‘কারখানা পরিদর্শনের কারণে কিছু কারখানা বসে গেছে। আবার অবকাঠামোগত সমস্যার কারণেও শিল্পে নতুন কারখানা আসছে না। ফলে খুব শিগগিরই এই অবস্থার উন্নতি হওয়ার আশা নেই।’ তবে শিল্পের উদ্যোক্তারা আরেকটু উদ্যোগী হয়ে বিপণনব্যবস্থার উন্নতি করতে পারলে পরিস্থিতি কিছুটা বদলাতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে, অটেক্সা বলছে, আলোচ্য সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশ থেকে পোশাক আমদানি বাড়িয়েছে। এ বছরের প্রথম চার মাসে ৮২২ বর্গমিটার সমপরিমাণ ২ হাজার ৫৬৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে দেশটি। এটি গত বছরের একই সময়ের ২ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলারের চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, বরাবরের মতো যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির শীর্ষস্থান বা ৩৮ শতাংশ চীনের দখলেই আছে। বছরের প্রথম চার মাসে দেশটি এই বাজারে ৮০৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ক্ষেত্রে তাদের প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে ভিয়েতনাম ও বাংলাদেশ। চতুর্থ ইন্দোনেশিয়া, রপ্তানি করেছে ১৭০ কোটি ডলারের পোশাক। পঞ্চম অবস্থানে আছে ভারত, মেক্সিকো ও কম্বোডিয়া। শেষ দুই দেশের রপ্তানি ১১৭ ও ৮২ কোটি ডলারের পোশাক। আর শীর্ষ সাতের মধ্যে ইন্দোনেশিয়া ও কম্বোডিয়ার ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।