Thank you for trying Sticky AMP!!

৭০ হাজার পিপিই দিচ্ছে গ্রামীণ ফেব্রিকস

>■ দুস্থ মানুষকে দুই বেলা খাবার সংস্থানের জন্যও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট এবং গ্রামীণ কল্যাণ।
■ খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকেরা।

করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানে ২০ হাজার পিপিই সরবরাহ করেছে গ্রামীণ ফেব্রিকস অ্যান্ড ফ্যাশনস লিমিটেড। আরও ৫০ হাজার পিপিই প্রস্তুতির কাজ চলছে বলে জানিয়েছে তারা। গতকাল শনিবার ইউনুস সেন্টার থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রামীণ ফেব্রিকস অ্যান্ড ফ্যাশনস লিমিটেড থেকে ইতিমধ্যে ২০ হাজার পিপিই বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা হয়েছে। আরও ১০ হাজার পিপিই তৈরির কাজ চলমান আছে। এ ছাড়া যেসব চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী সামনে থেকে এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁদের সুরক্ষার জন্য উচ্চ গ্রেডের ২০ হাজার পিপিই তৈরির জন্য নির্ধারিত কাপড় ও সিম সিলিং টেপ আমদানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব কাঁচামাল ১৮ এপ্রিলের মধ্যে দেশে পৌঁছাবে। 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকমের আর্থিক সহায়তায় গ্রামীণ ফেব্রিকস অ্যান্ড ফ্যাশনস এসব পিপিই উৎপাদন করছে। প্রথম ধাপে এসব পিপিই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, স্বাস্থ্য বিভাগ, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, খুলনা শিশু হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড, উত্তরা উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ডিএসকে হাসপাতাল, সুইস কন্টাক্ট বাংলাদেশ, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, বিএমএ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করা হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ছাড়া যেসব স্বাস্থ্যরক্ষাকারী সামগ্রী দেশে উৎপাদন করা যাচ্ছে না, সেগুলো বিদেশ থেকে আনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ২ লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, ৫০ হাজার এম৯৫ মাস্ক, ৫০ হাজার কেএন৯৫ মাস্ক, ৫০ হাজার হ্যান্ড গ্লাভস ও ১০ হাজার প্রটেকটিভ গ্লাভস তাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। যেসব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসার কাজে নিয়োজিত, তাদের কাছে এসব সামগ্রী সরকারি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করে দেওয়া হবে। 

যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে এসব সামগ্রীর অভাব আছে, তাদের প্রয়োজনের কথা জানিয়ে রাখার জন্য (e-mail: info@grameentelecom. net. bd) গ্রামীণ টেলিকম অনুরোধ জানিয়েছে। 

এদিকে দুস্থ মানুষকে দুই বেলা খাবার সংস্থানের জন্যও কর্মসূচি গ্রহণ করেছে গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট এবং গ্রামীণ কল্যাণ। এই কর্মসূচির অধীনে প্রাথমিকভাবে দেশের আড়াই হাজার দুস্থ পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পরিবারগুলোকে দুর্যোগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত খাবারের টাকা সরবরাহ করা হবে। 

দেশব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজধানীর খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ ও বিমানবন্দর সড়কসংলগ্ন এলাকার প্রধান প্রধান সড়ক, ফুটপাত ও আশপাশের পরিবেশ জীবাণুমুক্ত রাখতে জীবাণুনাশক ওষুধ ছিটানোর কাজ করছে নৌবাহিনী। গতকাল নৌবাহিনীর সদস্যরা দিনব্যাপী এসব কার্যক্রম পরিচালনা করেন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও খুলনার দায়িত্বপূর্ণ সমুদ্র ও উপকূলীয় জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, বরগুনা, আমতলী, বেতাগী, বামনা, পাথরঘাটা, তালতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে নৌবাহিনী। 

গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লকডাউন মেনে চলা ও প্রয়োজন ছাড়া বাইরে লোকসমাগম বন্ধ রাখতে নৌসদস্যরা কঠোরভাবে স্থানীয় জনগণকে নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি সচেতন করার কাজ করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে এলাকার মসজিদ–মন্দিরসহ বিভিন্ন উপাসনালয়ে যাতে অতিরিক্ত জনসমাবেশ না হয়, তা কঠোরভাবে তত্ত্বাবধান করছেন নৌসদস্যরা। তাঁরা স্থানীয় হাটবাজার ও দোকানগুলো নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খোলা রাখা নিশ্চিত করাসহ এসব স্থানে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে স্থানীয়দের সচেতন ও বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন। এ ছাড়া স্থানীয় রাস্তাঘাট, যানবাহনগুলো জীবাণুমুক্ত রাখতে নিয়মিতভাবে জীবাণুনাশক ওষুধ ছেটানো হচ্ছে। 

এ ছাড়া নৌসদস্যরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে নিয়মিত মাইকিং করা ও বিভিন্ন প্রচারপত্র বিতরণ করছেন। জনসমাগম পরিহার করে স্থানীয় গরিব, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জীবাণুনাশক সাবান ও মাস্ক, চাল, ডাল, আলুসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করছেন। 

এদিকে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকেরা। পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ হাটবাজার ও জনসমাগম স্থানকে জীবাণুমুক্ত করতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রচারপত্র বিতরণ, সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং প্রতিনিয়ত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ তাদের নানা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। 

গতকাল পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশের দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে খাদ্যসহায়তা প্রদান কার্যক্রমও গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। প্রথম পর্যায়ে রাজধানীসহ দেশের ৪০ হাজার পরিবারের মধ্যে সাত দিনের জন্য ফুড পার্সেল (চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণ ও সুজি) বিতরণ শিগগিরই শুরু করবে তারা।