Thank you for trying Sticky AMP!!

'৭০ সাল থেকে অটুট বন্ধুতা

ভাইয়ে ভাইয়ে এক থাকতে পারেন না অনেকেই, অর্থের জন্য বন্ধুত্বও ঠুনকো হয়ে যায়। সেদিক থেকে ব্যতিক্রম ইউনাইটেড গ্রুপ। সেই ৭০ সাল থেকে তাঁদের বন্ধুত্ব। শুরুতে ছিলেন চারজন, পরে যুক্ত হয়েছেন আরও দুই বন্ধু। তাঁরা হলেন হাসান মাহমুদ রাজা, আহমেদ ইসমাইল হোসেন, আকতার মাহমুদ রানা, খোন্দকার মইনুল আহসান শামীম, আবুল কালাম আযাদ ও ফরিদুর রহমান খান।

ব্যবসার অংশীদার হওয়ার পাশাপাশি পরিবার–পরিজন নিয়ে এ বন্ধুদের বসবাসও একসঙ্গে। একই ছাদের নিচে। সব বন্ধু মিলে পরিবার–পরিজন নিয়ে থাকেন এক বাড়িতে। যে বাড়ির প্রতিটি ফ্ল্যাটের আকার একই। পরিবর্তন যেটুকু সেটুকু শুধু অন্দরসজ্জায়। গ্রুপের মুনাফা থেকে প্রত্যেক বন্ধু নির্দিষ্ট হারে মুনাফা পান। তবে অংশীদারত্বে হেরফের থাকায় মুনাফাপ্রাপ্তিতে কম–বেশি হয়। যাঁর যত শেয়ার, তার ভিত্তিতেই মুনাফা বণ্টিত হয়, কিন্তু হার একই। এ ছাড়া চিকিৎসা, গাড়িসহ কিছু খরচ কোম্পানিই বহন করে। ব্যবসা থেকে পরিবার–বন্ধুত্বের এ পথচলা পাশাপাশি।

 মঈন উদ্দিন হাসান রশিদ বলেন, ‘যখন গ্রুপ থেকে গাড়ি কেনা হয়, তখন তাঁদের ছয় বন্ধুর জন্য একই ব্র্যান্ডের ও একই দামের গাড়ি কেনা হয়। শুধু গাড়ি রংটা ভিন্ন ভিন্ন হয় নিজ নিজ পছন্দের ভিত্তিতে। একইভাবে চিকিৎসা বাবদ খরচেও সবার জন্য বরাদ্দ একই। শুরু থেকে এ নীতি অনুসরণ করে আসছি আমরা।’

হাসান মাহমুদ রাজা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা বন্ধুরা একই বাড়িতে বসবাসের কারণে আমাদের সন্তানেরাও বড় হয়েছে একে অপরের বন্ধু হিসেবে। আমাদের বন্ধুত্বের বীজ তাই জন্ম থেকেই পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও রোপিত হয়ে আছে।’

অকৃত্রিম এ বন্ধুত্বের রসায়ন কী জানতে চাইলে একেক বন্ধু বলেন একেক মৌলের কথা। যেসব মৌলের মিশ্রণে গড়ে উঠেছে এ রসায়ন। হাসান মাহমুদ রাজা বলেন, ‘শুরু থেকে একে অপরের প্রতি আমাদের আস্থা ছিল অবিচল। একে অপরের সিদ্ধান্তের প্রতি ছিল অগাধ বিশ্বাস।’

আহমেদ ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘পৃথিবীজুড়ে বেশির ভাগ সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার পেছনে বড় কারণ অর্থ। এই একটি ক্ষেত্রে আমরা কেউই কখনো ওভারস্টেপ বা সীমা অতিক্রম করিনি। প্রত্যেকেরই হয়তো আলাদা আলাদাভাবে টাকার চাহিদা ছিল। কিন্তু আমরা কখনো নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করিনি।’

খোন্দকার মইনুল আহসান বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্বের সবচেয়ে বড় শক্তি আস্থা ও বিশ্বাস। ব্যবসায় আমরা প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা দায়িত্ব পালন করেছি। যখনই যে সিদ্ধান্ত যে নিয়েছি, তাতে প্রত্যেকের অন্ধভাবে সমর্থন ছিল। ফলে কোনো বিষয় নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো দ্বিমত হয়নি।’

গ্রুপের দুই প্রজন্মের সঙ্গে আলাপকালে আরও জানা যায়, দেশে এবং অফিসে থাকলে এখনো ছয় বন্ধু দুপুরে খাবার খান একসঙ্গে, এক টেবিলে বসে। কখনো কখনো গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সন্তানেরা থাকেন সঙ্গে। খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে চলে খুনসুটি, হাসি–তামাশা।