Thank you for trying Sticky AMP!!

করোনাকালে সংকটে এনজিওগুলো

প্রতীকী ছবি। ছবি: রয়টার্স

করোনা পরিস্থিতিতে সম্পদের ঘাটতিতে পড়েছে দেশের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো (এনজিও)। এসব সংস্থা আর্থিক সংকটসহ নানা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের কাজে সমন্বয়ের ঘাটতিও আছে। এমন কি সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকৃতিও নেই।

এক ভার্চুয়াল সংলাপে তৃণমূল পর্যায়ের উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা নিজেদের দুর্দশার কথা জানিয়েছেন। আজ বুধবার টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এই সংলাপের আয়োজন করে।

'স্থানীয় পর্যায়ের চলমান পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা: অর্জন ও চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসডিজি প্ল্যাটফর্মের আহবায়ক দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সভাপতিত্ব করেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টও বদিউল আলম মজুমদার।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থাগুলো মোটাদাগে আট ধরনের সমস্যায় পড়েছে। এগুলো হলো সম্পদের অপ্রতুলতা; সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কার্যক্রম পরিচালনায় অসুবিধা; মাঠকর্মীদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব; প্রাকৃতিক দুর্যোগে কার্যক্রম ব্যাহত; প্রকল্পের টাকা কোভিড ১৯ মোকাবিলায় ব্যবহারে নমনীয়তার অভাব; স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতা, স্থানীয় প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ ও স্থানীয় প্রশাসনের অসহযোগিতা।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে সরকারি নীতি কৌশল ও কর্মপন্থায় যুক্ত করা হয়নি। এ জন্য জাতীয় কৌশল গ্রহণ করতে হবে। কেননা কোভিড সংকট একদিনে শেষ হবে না।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন সংস্থাগুলোর নিজেদের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আছে। তাদের মধ্যে কাজের সমন্বয় করা উচিত।

দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর বদিউল আলম মজুমদারের মতে, সরকার ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কাজের মধ্যে যেমন সমন্বয় থাকতে হবে, তেমনি এনজিওগুলোর নিজেদের মধ্যেও সমন্বয় থাকতে হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে এনজিওগুলোর সম্পদের অভাব আছে।
সংলাপে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা নিজেদেও অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।

বরিশালের এনজিও আভাসের নির্বাহী পরিচালক রহিমা সুলতানা জানান, করোনাকালে এনজিওগুলোর নারী কর্মীরা কোনে সহযোগিতা পাননি। অনেক সংস্থা সম্পদের অভাবে কর্মী ছাটাই করেছে।

খুলনাখিত্তিক এনজিও রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার গুহ বলেন, করোনার কারণে এনজিওগুলোর কর্মকান্ড স্থবির হয়ে আছে। অনেক কর্মী কর্মহীন হয়ে বসে আছেন। শহরের মতো ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে কাজ করাও সম্ভব হচ্ছে না। অংশীজনদের অনেকের ডিজিটাল ডিভাইস নেই। ইন্টারনেট সমস্যাও প্রকট।

কুস্টিয়ার নারী মুক্তি ও শিশু উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মমতাজ আরা বেগম বলেন, করোনাকালে তাঁর নিজের কর্ম এলাকায় (২০ টি ইউনিয়ন) বাল্যাবিবাহ বেড়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহার নেই বললেই চলে। মোবাইল ফোন ব্যবহার করা মানুষের মধ্যে ৮৫ শতাংশের স্মার্টফোন নেই। অনেকের জিবি কেনার সামর্থ্য নেই।

দারিদ্র্যপ্রবন কুড়িগ্রামের এনজিও সলিডারিটির প্রধান হারুণ উর রশিদ বলেন, করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি ওই এলাকার চরাঞ্চলের মানুষের জীবন আরও ঝুঁকিপূণ করে তুলেছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। তাঁদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।