Thank you for trying Sticky AMP!!

মোবাইল ফোন ব্যবহারে আয় বাড়ে!

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে মোবাইল ফোন। যেসব এলাকায় মানুষ এখনো বিদ্যুৎ-সুবিধাবঞ্চিত, সেখানে একটি পরিবারের আয় ৭ থেকে ১০ শতাংশ বাড়ছে মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাঁস-মুরগি, মাছের খামার, ব্যবসার মতো অকৃষি খাতে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের আয়ই বেশি বাড়ছে মোবাইল ফোনের কল্যাণে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রান্তিক এলাকায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে একটি পরিবারে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে, তা নিয়ে গবেষণাটি করেছেন বিআইডিএসের গবেষক মনজুর হোসেন ও বিশ্বব্যাংকের হোসাইন সামাদ। বাংলাদেশের নদী, চর, সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী ৩ হাজার ৫৪০টি খানা জরিপের তথ্য নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে।

এসব এলাকার মানুষ সৌরবিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। গবেষণার অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলো হলো সিরাজগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, পটুয়াখালী ও ফরিদপুর।

গবেষণার ফলাফল বলছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি পরিবারে মোবাইল ফোন থাকলে তা পণ্য বিপণন, যাতায়াত খরচ ও সময় সাশ্রয়ে ভূমিকা রাখে। এর ফলে একটি পরিবারের উৎপাদনশীলতা ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়। যেমন: মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে মাছ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা জেলেদের আয় ৭ থেকে ১০ শতাংশ বাড়ে। কারণ এর মাধ্যমে জেলেরা মাছের বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পান, যা তাঁদের ভালো দাম পেতে সহায়তা করে।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে তৃণমূলে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির বিষয়টিও গবেষণায় উঠে এসেছে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে নারীর নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ ১ শতাংশীয় পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ঘরের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য কেনা, পরিবার পরিকল্পনা ও শিশুদের শিক্ষার মতো কাজে নারীরা এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন।

গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তির পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতেও সহায়ক ভূমিকা রাখে মোবাইল ফোন। যে পরিবারে মোবাইল ফোন নেই, দুর্যোগে তাদের ভোগব্যয় কমে ৮ শতাংশ। আর যাদের মোবাইল ফোন আছে, তাদের ভোগব্যয় আগের মতোই থাকে। দুর্যোগের পর মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী পরিবারের খাদ্যঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কা প্রায় ৩ শতাংশ কমে যায়।

গবেষণায় বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেখানো হয়েছে ১২ কোটি ৮০ লাখ। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোবাইল ফোনের সক্রিয় সংযোগ বা সিমসংখ্যা হয়েছে ১৪ কোটি ৭ লাখ। সক্রিয় মোবাইল ফোনের সংযোগকেই বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা হিসেবে দেখানো হয়।

মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএমএর হিসাবে, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ বা সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মুঠোফোনের একক বা ইউনিট ব্যবহারকারী। একজন ব্যক্তির একাধিক সিম কার্ড থাকলেও একক ব্যবহারকারী হিসাব করতে জিএসএমএ একটি সিম কার্ডকেই বিবেচনায় নেয়। এই পদ্ধতিতে হিসাব করেই একক মুঠোফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।