প্রণোদনার অর্থ

যারা ঋণ পাওয়ার যোগ্য, তাদের কাছে যাচ্ছে না

করোনার ব্যবসায়িক ক্ষতি পোষাতে সরকারঘোষিত প্রণোদনার বড় অংশ সহায়তা পাওয়ার যোগ্য যারা, তাদের কাছে যাচ্ছে না বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংকগুলো থেকে অনেকেই সহায়তা পাননি। কেন এটা হলো?’

গতকাল বৃহস্পতিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কোভিড-১৯ মোকাবিলা এবং টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে আয়োজিত দ্বিতীয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিন দফার সিরিজ মতবিনিময় সভায় গতকালের প্রতিপাদ্য ছিল ‘কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন’।

গতকালের সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া বক্তব্য দেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মাসুদুর রহমান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, এফবিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য শামসুল আলম প্রমুখ।

গতকাল এক আলোচনা সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এ অভিযোগ করেন। এ পরিস্থিতিতে কেউ কেউ দাবি করছেন দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজের

মোট ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে ৬টি প্যাকেজ কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলো হচ্ছে পাঁচ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার কর্মসূচি, ৫ হাজার কোটি টাকার কৃষি পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচি, ৩ হাজার কোটি টাকার কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুনঃ অর্থায়ন কর্মসূচি, ১ হাজার ২৫৭ কোটি টাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরাসরি নগদ সহায়তা কর্মসূচি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের (এসএমই) শিল্প এবং কুটিরশিল্পের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার চলতি মূলধন ঋণ। এ ছাড়া রয়েছে এসএমই খাতের জন্য ঋণঝুঁকি কর্মসূচি। প্রবন্ধে এগুলোর কথা উল্লেখ করে বলা হয়, কিছু সমস্যা থাকলেও প্যাকেজগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, এসএমই খাতে প্রণোদনার টাকা ভালোভাবে বিতরণ না হওয়ার কারণ, অধিকাংশ উদ্যোক্তার ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তাঁদের ব্যাংকের আওতায় আনার উদ্যোগ নিতে হবে। নইলে প্রণোদনা কাজে আসবে না।

তবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রণোদনার পর আবার প্রণোদনা সঠিক সমাধান নয়। অর্থ ছিল, অর্থ দেওয়া হয়েছে। এখন প্রণোদনা ভর্তুকি কমিয়ে বরং নীতিসহায়তা বেশি দেওয়া যেতে পারে। এতে ভালো ফল আসবে।

গভর্নরের উদ্দেশে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আইন আইনই। আইনকে অসম্মান করা যাবে না। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, কোনো কোনো ব্যাংক আইন মানছে না। আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে প্রকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছাতে না পারা ।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কর্মসৃজন ও দারিদ্র্য নিরসনে কৃষি খাতের অবদান আরও বাড়তে পারে। গবেষণা নেই ও আধুনিকীকরণ কম। তবে ভালো যে তরুণ জনগোষ্ঠী এ খাতে এগিয়ে আসছে।