Thank you for trying Sticky AMP!!

এসভিবি বন্ধের ঘটনায় তদন্ত করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ

তিন দিনের ব্যবধানে দুটি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। দেশটির বিচার বিভাগ সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের (এসভিবি) বন্ধ হয়ে যাওয়া তদন্ত করবে। একই সঙ্গে, দেশটির সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সমান্তরাল তদন্ত শুরু করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, তদন্ত এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। এই তদন্ত থেকে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা হবে বা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হবে, এমনটা নাও হতে পারে। সেই সঙ্গে এসভিবির মালিক এসভিবি ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপের কর্মকর্তারা যে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার আগে স্টক বিক্রি করেছিলেন, সেই ঘটনার তদন্তও করা হচ্ছে। এমনকি এসভিবির প্রধান নির্বাহীও সপ্তাহখানেক আগে স্টক বিক্রি করেছিলেন বলে জানা গেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান গ্যারি জেন্সলার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তাঁরা মূলত বাজারের স্থিতিশীলতা পর্যবেক্ষণ করছে এবং সেই সঙ্গে এসভিবির তরফ থেকে কোনো ধরনের অসদাচরণ করা হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে।

এসভিবির বন্ধ হওয়ার তিন দিনের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরেক ব্যাংক সিগনেচার ব্যাংক। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক খাতের পূর্বাভাস স্থিতিশীল থেকে অবনমন করে নেতিবাচক করেছে।

এদিকে এসভিবির শেয়ারহোল্ডাররা এসভিবি ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপ ও ব্যাংকের দুই শীর্ষ নির্বাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। শেয়ারহোল্ডারদের অভিযোগ, গ্রুপ ও ব্যাংকের শীর্ষ কর্তারা তাঁদের একটি বিষয়ে কখনো অবগত করেননি। সেটা হলো, ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বৃদ্ধির কারণে যে ব্যাংক এমন চাপে পড়তে পারে, সে বিষয়ে শেয়ারহোল্ডারদের সতর্ক না করা।

বিষয়টি হচ্ছে, গত বছরের শুরুতেই ফেডের নীতি সুদহার ছিল শূন্যের কাছাকাছি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধজনিত মূল্যস্ফীতির প্রভাব মোকাবিলায় গত এক বছরে ফেড আটবার নীতি সুদহার বৃদ্ধি করেছে। এ কারণে বাণিজ্যিক ঋণের সুদহারও বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে সে দেশের বন্ডের সুদহার বেড়েছে। ঋণ ও বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ার সম্মিলিত ফল হলো, বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি এড়িয়ে নিরাপদ জায়গায় বিনিয়োগ করার সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়া। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাণিজ্যিক প্রকল্পে বিনিয়োগ না করে বরং বন্ডে বিনিয়োগ করাই ভালো, আরামে সুদ খাওয়া যাবে।

এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো। বিনিয়োগকারীরা স্টার্টআপে বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়ায় সিলিকন ভ্যালির এ স্টার্টআপগুলো সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে রক্ষিত আমানত ভেঙে খেতে শুরু করে। তাতে সিলিকন ভ্যালির ব্যাংকের আমানতে টান পড়ে। এ বাস্তবতায় এসভিবি গত বুধবার ২১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১০০ কোটি ডলারের বন্ড বিক্রি করে, যার সিংহভাগই ছিল মার্কিন ট্রেজারি বন্ড। এর সুদহার ছিল ১ দশমিক ৯ শতাংশ, অথচ ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার প্রায় ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। ফলে বন্ড বিক্রি মুখ থুবড়ে পড়ে। তাদের ক্ষতি হয় ১৮০ কোটি ডলার।

এরপর সেই ক্ষতি পোষাতে বৃহস্পতিবার এসভিবি ২২৫ কোটি ডলার সমমূল্যের ইকুইটি বিক্রির ঘোষণা দেয়। বলা যায়, এটা ছিল কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার মতো। হুড়মুড়িয়ে আমানত তুলে নিতে শুরু করেন আমানতকারীরা। পতন হয় ৪০ বছরের পুরোনো এই ব্যাংকের।