Thank you for trying Sticky AMP!!

নিত্যনতুন ডিজিটাল সেবা না আনলে পিছিয়ে পড়বে ব্যাংক

দেশের ব্যাংক খাতে ডিজিটাল সেবার দ্রুত বিকাশ ঘটছে। গ্রাহকেরাও দিন দিন এই সেবার দিকে ঝুঁকছেন। এই অবস্থায় ডিজিটাল সেবার বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান
প্রশ্ন

প্রথম আলো: করোনাকালে প্রায় সব ব্যাংকই তাদের সেবাগুলোকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করেছে। আসলে কতটা ডিজিটাল হলো ব্যাংক সেবা?

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: আমরা অনলাইনভিত্তিক সেবা চালু করেছি। গ্রাহক ব্যাংকে না এসেও এখন অ্যাপসভিত্তিক সব ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছেন। কার্ডের পিনের জন্যও ব্যাংকে আসতে হচ্ছে না। চেক বই গ্রহণ করা ছাড়া আর কোনো কাজে ব্যাংকে আসার প্রয়োজন নেই। কল সেন্টারে ফোন করেও অপেক্ষা করতে হচ্ছে না গ্রাহকদের। একদিকে আমরা গ্রাহকদের জন্য অনলাইনভিত্তিক সেবা নিয়ে এসেছি, অন্যদিকে ব্যাংকের অভ্যন্তরের কার্যক্রমকে কাগজবিহীন ও ব্যাংকারদের বাসায় বসে সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেছি। এতে সেবার গতি বেড়েছে। বর্তমানে ছোট অঙ্কের ঋণ কোনো নথিপত্র ছাড়াই দেওয়া হচ্ছে। ফলে গ্রাহকসেবার মান বেড়েছে, ব্যাংকের কর্মীদের সেবা প্রদানের মানও বাড়ছে।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: ব্যাংকের কী পরিমাণ গ্রাহক ডিজিটাল সেবায় যুক্ত হলেন? সামনে কী রকম ভবিষ্যৎ দেখছেন? কার্ডের গ্রাহকই বা কেমন।

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও যৌথ মিলিয়ে আমাদের বর্তমানে আট লাখের মতো গ্রাহক রয়েছে। তবে আমাদের অ্যাপস ব্যবহার করছেন ৭০-৮০ হাজার গ্রাহক। কারণ, এখনো সবার হাতে স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট পৌঁছায়নি। আমাদের ক্রেডিট কার্ডের এক লাখ ও ডেবিট কার্ডের তিন লাখের মতো গ্রাহক আছেন। এর ওপর আমরা বাজারে ভার্চ্যুয়াল প্রিপেইড কার্ড সেবা নিয়ে এসেছি। প্লাস্টিক কার্ড ছাড়াই এই সেবার লেনদেন করা যায়। সে জন্য ভবিষ্যতে ভার্চ্যুয়াল কার্ডের গ্রাহক বাড়বে, ধীরে ধীরে প্লাস্টিক কার্ড উঠে যাবে। অর্থাৎ কোডনির্ভর সেবায় ঝুঁকবেন সবাই।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: ক্যাশলেস বা নগদবিহীন বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে লেনদেনের প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠছে বাংলা কিউআর কোড। কতটা এগিয়েছে এই কার্যক্রম?

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ৭৫ শতাংশ লেনদেন ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিয়ে আসার কথা বলেছেন। এটা সবে শুরু হয়েছে। সামনে অনেক কাজ করতে হবে। কিছু জায়গায় আমরা কাজ শুরু করেছি। ভালো সাড়াও পাওয়া যাচ্ছে। এতে কোনো খরচ দিতে হচ্ছে না, ফলে কিউআর কোড ব্যবহারকারী বিক্রেতারা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এখন পর্যন্ত ১৮ ব্যাংক এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছে। এই কার্যক্রম জোরদার করতে সামনে স্মার্টফোনের গ্রাহক আরও বাড়াতে হবে। কারণ, ভবিষ্যতে ডিজিটাল লেনদেনের কোনো বিকল্প নেই।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: ডিজিটাল লেনদেন নিয়ে একধরনের ভীতিও আছে। এটা কীভাবে দূর হবে? গ্রাহকদের উদ্দেশে আপনার পরামর্শ কী?

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান: সব সেবাতেই ঝুঁকি আছে। তাই বলে তো সেবা বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। কেউ যদি কারও সঙ্গে পিন ভাগাভাগি না করেন, তাহলে জালিয়াতি হওয়ার ঝুঁকি কম। ব্যাংক সেবার পিন পরিবারের সদস্যদেরও জানানো যাবে না। এমন অনেক ঘটনা পাওয়া যাচ্ছে, পরিবারের সদস্যরাই পিন জেনে জালিয়াতিতে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। এই সেবার জন্য ব্যাংকগুলো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সামনের দিনে ব্যাংক সেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও রোবোটিকস আনতে হবে। যেসব ব্যাংক নিত্যনতুন ডিজিটাল সেবা আনতে পারবে না, তারা পিছিয়ে পড়বে।