Thank you for trying Sticky AMP!!

শুল্ক কমল, চিনির দাম কেজিতে কমবে ৫ টাকা

দেশে বছরে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। এর মধ্যে শুধু রোজার মাসেই চাহিদা থাকে ৩ লাখ টনের।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)

পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে চিনির বাজারে অস্থিরতা কমাতে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ ছাড়া প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানির ওপর প্রযোজ্য ৩ হাজার টাকা ও পরিশোধিত চিনিতে ৬ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে সংস্থাটি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে এনবিআর এই শুল্ক কমিয়েছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, হ্রাসকৃত শুল্কে চিনি এলে কেজিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমতে পারে। ব্যবসায়ীদের এই কথা সত্য হলেও চিনির কেজি ১০০ টাকার ওপরেই থাকবে।

দেশের বাজারে কয়েক মাস ধরে চিনির দামে অস্থিরতা চলছে। কারণ, নিয়ন্ত্রিত সরবরাহের কারণে বাজারে চিনির ঘাটতি চলছে। প্যাকেটজাত চিনিও কম পাওয়া যাচ্ছে। সে জন্য বাজার স্বাভাবিক করতে শুল্ক কমানোর সুপারিশ করে গত জানুয়ারিতে এনবিআরকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপরই এনবিআর শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেয়।

এনবিআর গতকাল রোববার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশে নামিয়েছে। একই সঙ্গে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ৩ হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনিতে ৬ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। এই সুবিধা আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের বাজারদরের তালিকায় দেখা গেছে, ঢাকার বাজারে এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকা, যা এক বছর আগে ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরে চিনির দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

চিনি আমদানিতে যেটুকু শুল্ক কমানো হয়েছে, তাতে বাজারে কতটা প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কেজিতে ৫ টাকা কমতে পারে। তিনি আরও বলেন, পাইপলাইনে কয়েকটি চিনিবোঝাই জাহাজ রয়েছে। কাল (আজ) থেকেই কার্যকর হলে সেসব জাহাজের চিনি খালাসে শুল্কছাড় সুবিধা মিলবে। তাতে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সে জন্য অবশ্যই খুচরা ও পাইকারি বাজারে তদারকি থাকতে হবে।

জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক (করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স) বিশ্বজিৎ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, শুল্কছাড় দেওয়ায় প্রতি কেজি চিনিতে সাড়ে ৫ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে। সামনে চিনিবোঝাই কয়েকটি জাহাজ আসবে। তাতে রোজার আগে চিনির দাম কিছুটা কমবে বলে আশা করা যায় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের পর তৈরি হওয়া ডলার ও জ্বালানিসংকটের কারণে গত বছরের জুলাই–আগস্ট থেকে চিনির বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। এ অবস্থায় গত সেপ্টেম্বরে সরকার প্রথমবারের মতো চিনির দাম বেঁধে দেয়। এরপর আরও তিন দফায় চিনির দাম বাড়ানো হয়। সংকট কাটাতে বাজারে চালানো হয় অভিযান। এত কিছুর পরও বাজারে চিনির সংকট কাটেনি। ৬ মাসের বেশি সময় ধরে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বাড়তি দামেই ক্রেতাদের চিনি কিনতে হয়েছে। এই সময়ে প্যাকেটজাত সাদা চিনি কয়েকবার বাজার থেকে উধাও হয়েছে। প্যাকেটজাত লাল চিনি কিনতে হয়েছে কেজিপ্রতি ১৫০ টাকার আশপাশে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। এর মধ্যে শুধু রোজার মাসেই চাহিদা থাকে ৩ লাখ টন। অথচ দেশে সব মিলিয়ে উৎপাদন হয় মাত্র ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টন। সে জন্য বিপুল চাহিদার বড় অংশই জোগান দেওয়া হয় আমদানির মাধ্যমে।