Thank you for trying Sticky AMP!!

বাংলাদেশে জীবনবিমা বিকাশের সুযোগ আছে   

দুই দিনের সফরে সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন মেটলাইফের এশীয় অঞ্চলের প্রধান লিন্ডন অলিভার। মেটলাইফ ঢাকা কার্যালয়ে সম্প্রতি তিনি বাংলাদেশসহ এশিয়ার জীবনবিমা ব্যবসার নানা দিক নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশেষ প্রতিনিধি ফখরুল ইসলাম। 

লিন্ডন অলিভার
প্রশ্ন

এশিয়ায় মেটলাইফের ব্যবসার বিস্তৃতি কেমন? 

লিন্ডন অলিভার: এশিয়া মেটলাইফের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। মেটলাইফের বৈশ্বিক আয়ের প্রায় ২৫ শতাংশ আসে এশিয়া থেকে। ব্যবসায়িক পরিধি বিবেচনায় এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম বহুজাতিক বিমাপ্রতিষ্ঠান মেটলাইফ। বাংলাদেশসহ আমরা আছি জাপান, কোরিয়া, চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, নেপাল, ভিয়েতনাম ইত্যাদি দেশে। প্রতিটি দেশই নিজস্ব স্বকীয়তা ও শক্তি নিয়ে অবদান রেখে যাচ্ছে। 

প্রশ্ন

কোভিড–পরবর্তী সময়ে ও বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এশিয়ার বাজারে মেটলাইফ কীভাবে মানিয়ে নিচ্ছে? 

লিন্ডন অলিভার: আমি বলব, কোভিড পরিস্থিতি আমাদের জন্য নতুন কিছু উপলব্ধি আর শেখার সুযোগ করে দিয়েছে। সেবা নিয়ে গ্রাহকদের প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। তাঁরা এখন ডিজিটালি তাৎক্ষণিক সেবা পেতে চান এবং সেবা প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চান। এ পরিস্থিতিতে আমরা যেভাবে পরিবর্তিত হচ্ছি, তাকে আমি বলি, উচ্চপ্রযুক্তি ও উন্নততর সেবার সমন্বয়। 

 পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া এবং ভবিষ্যতে ভালো করার জন্য আমরা যে ব্যবসায়িক কৌশল নিয়েছি, তার নাম ‘নেক্সট হরাইজন স্ট্র্যাটেজি’। এর মাধ্যমে আমাদের কাজ, ব্যবসায়িক শক্তি ও মূলধন বিনিয়োগের ব্যাপারে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছি, জটিলতা ও ব্যয় কমিয়ে আনছি এবং নিজেদের ব্যবসায়িক স্বকীয়তা আরও সুদৃঢ় করছি।  

প্রশ্ন

‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ নামের নতুন এক বিমা পণ্য আসছে বলে আমরা শুনছি। এটি গ্রাহকদের জন্য কতটা সুবিধাজনক হবে? 

লিন্ডন অলিভার: বিমা কোম্পানি ও ব্যাংক—উভয়ের জন্যই সুফল বয়ে আনবে এ ব্যাংকাস্যুরেন্স। বিল দেওয়া, হিসাব খোলা, আর্থিক লেনদেন, সঞ্চয়ের মতো নানা প্রাত্যহিক কাজে ব্যাংক মানুষের জীবনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বিমা কোম্পানির তুলনায় ব্যাংকের অবস্থান মানুষের অনেক কাছাকাছি। ফলে একটি ব্যাংক আর্থিক সেবার সঙ্গে বিমা নিতেও আরও বেশিসংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো যাবে। বিভিন্ন ব্যাংকাস্যুরেন্স পরিচালনার ক্ষেত্রে মেটলাইফের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ব্যাংকাস্যুরেন্স চালুর জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। 

প্রশ্ন

বাংলাদেশের বিমা খাতের ভবিষ্যৎ কী? 

লিন্ডন অলিভার: আমি বাংলাদেশের সামনের দিনগুলোতে বিমা খাতের বিকাশে ভালো সম্ভাবনা দেখছি। এখনো বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিমার আওতার বাইরে। মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এ দেশে বিমার অবদান দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ বিমার আওতায় আসার মতো এখনো অনেক মানুষ আছেন।  

প্রশ্ন

বাংলাদেশে আয় করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান কার্যালয়ে মেটলাইফ বেশি খরচ পাঠাচ্ছে বলে আইডিআরএর প্রজ্ঞাপন আছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী? 

লিন্ডন অলিভার: প্রজ্ঞাপনটি দেখেছি এবং প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছি। এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারছি না।

প্রশ্ন

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা আছে মেটলাইফের? 

লিন্ডন অলিভার: দীর্ঘ সময় ব্যবসা চালিয়ে আসা একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বর্তমান অবস্থানের মাধ্যমে আমরা যথাযথ অবদান রাখতে পারছি। উন্নত প্রযুক্তি ও বৈশ্বিক দক্ষতা ব্যবহার করে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনতে পারছি কার্যকর বিমাসেবা। গ্রাহকের বিমা অভিজ্ঞতাকে আরও উন্নত করতে পারছি আমরা। 

প্রশ্ন

অন্যদের তুলনায় এ দেশে মেটলাইফ কীভাবে আলাদা? 

লিন্ডন অলিভার: আমরা ৭০ বছর ধরে বাংলাদেশে এবং ১৫০ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বিমাসেবা দিয়ে আসছি। বিশ্বে এত দীর্ঘ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম। আমরা নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং আমাদের আর্থিক সক্ষমতার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের ওপর বিশেষ আস্থা রাখেন। বিমাপণ্য যুগোপযোগী করে সেবার মানও উন্নত করে চলেছি। আমাদের সাফল্যের পেছনে আছে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য, যা বিশ্বের সব দেশেই এক। আমরা সব সময় মানুষের সঙ্গে আছি, এখানেই অন্যদের তুলনায় মেটলাইফ আলাদা।