Thank you for trying Sticky AMP!!

আগামী অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ৩০৮৯ ডলার: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল

আগামী ২০২২–২৩ অর্থবছরে দেশের মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৮৯ মার্কিন ডলারে এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে দেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৫৫৪ ডলার।

আজ রোববার ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে তাঁর এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে আমাদের মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ৮৯ মার্কিন ডলার হবে। সে বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এটা আমার মোটামুটি হিসাব।’

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিয়েছে। সেখানে বাংলাদেশকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন এবং বাংলাদেশিদের মাথাপিছু আয়ই বা বৃদ্ধি পাবে কিসের ভিত্তিতে, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি (২০২১–২২) অর্থবছরে জিডিপিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আর জিডিপির আকার হবে ৪৫৫ বিলিয়ন (৪৫ হাজার ৫০০ কোটি) ডলার।’

অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যাটি হচ্ছে, ৪৫৫ বিলিয়ন ডলারকে মোট জনগোষ্ঠী দিয়ে ভাগ দিলেই মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৮৫ ডলার হয়। এটা হচ্ছে চলতি অর্থবছরের হিসাব। তাঁর মতে, আইএমএফ ৬ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলেছে। সংস্থাটি সব সময় রক্ষণশীলভাবে প্রক্ষেপণ করে। সব দেশের জন্যই রক্ষণশীল তারা। তবে অতীতের মতো অর্থমন্ত্রীর বিশ্বাস, তিনি যা বলছেন, সেটাই অর্জন করতে পারবেন।

এদিকে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে সম্প্রতি সরকারের আনুষ্ঠানিকভাবে জারি করা বিধিমালা নিয়েও কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ না দিলে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ চলে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি বন্ধ করে রাখি, তাহলে পিছিয়ে থাকব। অনেকেই সৃজনশীল ধারণা নিয়ে বিদেশে বিনিয়োগের চেষ্টা করছেন। এটা অন্যায় কিছু নয়। যদি অনুমতি না দেওয়া হয়, তাহলে এটা চলে যাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে। তার চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন দেওয়াই ভালো।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘দেশীয় ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগ একটা ভালো উদ্যোগ। এতে দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিদেশে বিনিয়োগ হলে সেখান থেকে আয়ও আসবে। আমাদের জনগণই সেখানে গিয়ে চাকরি করবে।’
প্রসঙ্গত, দেশের ব্যবসায়ীদের আগে অবশ্য কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হতো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, সরকার ২০১৩ সালে প্রথম দেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি দেয়। এরপর বেশ কয়েকটি কোম্পানি বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি পায়। বর্তমানে দেশের ১৭টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি আছে। আরও অনেক কোম্পানি বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছে।

তবে নতুন বিধিমালায় সবাইকে এ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, যাঁরা রপ্তানি করেন এবং নিজের ব্যাংক হিসাবে রপ্তানির বিপরীতে রিটেনশন মানি (জামানতের অর্থ) যদি থাকে, তাহলে সেখান থেকে ২০ শতাংশ অর্থ তাঁরা বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন। সেই ২০ শতাংশের হিসাবটি হবে এ রকম—মোট সম্পদ থেকে দায় বাদ দিলে যে নিট সম্পদ থাকবে, তার সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ টাকা বিদেশে বিনিয়োগ করা যাবে।

এবার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ২৫ শতাংশ কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিনিয়োগ অন্য জিনিস। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে অনেক দেশই আছে। সব দেশই তাদের বৈদেশিক মুদ্রার হারটা আস্তে আস্তে অনুমোদন করে। বিদেশে বিনিয়োগের জন্য এটা করা হয়। আমরাও সেই পথে যাচ্ছি।’