Thank you for trying Sticky AMP!!

ইভ্যালির ৬০/৪০ অফার বন্ধ করতে নির্দেশ

দেশে ডিজিটাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ক্যাশব্যাকের আওতায় ৬০ শতাংশ ব্যালান্স থেকে এবং ৪০ শতাংশ নিজ থেকে খরচের যে অফার দেওয়া হয়েছে, সেটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। গত সোমবার কমিশন থেকে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ইভ্যালিতে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার প্রতিযোগিতা কমিশনের কার্যালয়ে দুই পক্ষের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইভ্যালির ক্যাশব্যাক অফারের আওতায় শর্তযুক্ত যে অফার দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। দুই পক্ষের শুনানি শেষে প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, প্রতিযোগিতা আইন ২০১২ এর ধারা ১৫–এর উপধারা (৩)–এর দফা (ক)–এর বিধান অনুযায়ী, ঈদ ধামাকা বিজ্ঞাপনে উল্লিখিত ক্যাশব্যাক অফারের ৬০% ও ৪০% সমন্বয়–সংক্রান্ত শর্তযুক্ত বিক্রয় প্রতিযোগিতা বিরোধী। তাই ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডকে ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সফটওয়্যারে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে হবে। একই সঙ্গে এ ধরনের ক্যাশব্যাক অফারের সমন্বয়–সংক্রান্ত সব বিক্রয়ব্যবস্থা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

Also Read: ডিজিটাল ব্যবসার নতুন ফাঁদ ই–ভ্যালি

জানতে চাইলে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মফিজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এর আগেও ইভ্যালি শর্তযুক্ত বিক্রি উঠিয়ে ফেলার কথা বলেছিল। কিন্তু তারা সেটা করেনি। তাই গণশুনানিতে তাদের এই অফার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইভ্যালির জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ নিয়ে বলা হয়েছে, তারা প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে আদেশ পেয়েছে। ক্যাশব্যাক অফারের আওতায় শর্তযুক্ত অফার তারা নিজেরাই উঠিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইভ্যালির ক্যাশব্যাক অফার হলো, যদি আপনি ১০০ টাকার পণ্য কেনেন, তাহলে আপনাকে সমপরিমাণ টাকা অথবা তার চেয়ে বেশি টাকা ক্যাশ দেওয়া হয়। ক্রেতা ক্যাশব্যাকের ওই টাকার ৬০ শতাংশ ব্যালেন্স থেকে খরচ করতে পারে। বাকি ৪০ শতাংশ নিজ থেকে খরচ করার শর্ত রয়েছে। প্রতিযোগিতা কমিশন বলছে, এ ধরনের শর্তযুক্ত অফার প্রতিযোগিতা আইনের বিরোধী। উল্লেখ্য, ইভ্যালি ২০১৮ সালে নিবন্ধিত হয়। ক্রেতা পণ্য কিনলেই ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দেয় ইভ্যালি।

Also Read: আইন লঙ্ঘন করছে ই-ভ্যালি

মূলত, কিনলেই অর্থ ফেরতের অস্বাভাবিক ‘ক্যাশব্যাক’ অফার দেওয়ার মতো বিতর্কিত বিপণন পদ্ধতির মাধ্যমেই ব্যবসা শুরু করে ইভ্যালি। ১০০ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক অফার দেওয়া হয়। অর্থাৎ ১০০ টাকার পণ্য কিনলে সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি অর্থ ফেরত দেওয়ার লোভনীয় এই অফারে হাজার হাজার গ্রাহক আকৃষ্ট হলেও লাভবান হচ্ছেন অল্পই। বেশির ভাগই আছেন লাভবান হওয়ার অপেক্ষায়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সম্প্রতি ইভ্যালি বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়ে বলেছে, অনলাইনে পণ্য বেচাকেনার প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পণ্য বিক্রির কথা বলে মানুষের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিচ্ছে, কিন্তু অনেককেই সময়মতো পণ্য দিচ্ছে না। গ্রাহকেরা যে পণ্যের ফরমাশ (অর্ডার) দিচ্ছেন, অনেক সময় তাঁরা পাচ্ছেন অন্য ধরনের পণ্য। এমনকি মানহীন পণ্যও সরবরাহ করা হচ্ছে।

পণ্য সরবরাহ করতে না পারলে ইভ্যালি গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি তা নিজের কাছে রেখে দিচ্ছে। আর এসবের মাধ্যমে ইভ্যালি দণ্ডবিধি, ১৮৬০–এর পাঁচটি ধারা, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯–এর দুটি ধারা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮–এর একটি ধারা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। অগ্রিম মূল্য পরিশোধের বদলে ইভ্যালিকে ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’ পদ্ধতি প্রবর্তনে বাধ্য করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধও করা হয়েছিল ওই প্রতিবেদনে।