Thank you for trying Sticky AMP!!

পদ্মা ব্যাংকে কতটা দুর্নীতি হয়েছে, এখনো জানতে পারিনি: অর্থমন্ত্রী

বেসরকারি পদ্মা ব্যাংক নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘ব্যাংকটির পর্ষদে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ভালোভাবে চালাতে পারেননি। আর এখনো জানতে পারিনি,পদ্মা ব্যাংকে কতটা দুর্নীতি হয়েছে। তবে অন্যায় যাঁরা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁদের অনেকে জেলে আছেন।’

আজ বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, বেসরকারি পদ্মা ব্যাংক সরকারি একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে চেয়ে সরকারের কাছে যে আবেদন করেছে, এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান কী? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কোনো আবেদন পাইনি। তবে এর মালিকানা কাঠামোতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো জড়িত আছে। সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) জড়িত আছে।’
যে আবেদন পদ্মা ব্যাংক করেছে, তা বিবেচনা করা হচ্ছে কি না, আবার জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, একীভূত করার বিষয়ে আইন তৈরির কাজ চলছে। তবে ব্যাংকটিতে যাঁরা শেয়ারহোল্ডার, তাঁদের স্বার্থ দেখা হবে। ব্যাংকটি যেন বন্ধ না হয়ে যায়, সে কারণেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে একে সহযোগিতা করা হয়েছিল।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যাঁরা এর পর্ষদে ছিলেন, তাঁরা ভালোভাবে চালাতে পারেননি ব্যাংকটি। আর এখনো জানতে পারিনি ব্যাংকটিতে কতটা দুর্নীতি হয়েছে। তবে অন্যায় যাঁরা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁদের অনেকে জেলে আছেন। এ ছাড়া সরকারের আর কী করার আছে?’

পদ্মা ব্যাংক সম্প্রতি একটা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তারা বিদেশি বিনিয়োগ আনার চেষ্টা করছে। এখানে মূল খবরটি তাহলে কোথায়, বিদেশি বিনিয়োগ না একীভূত হওয়া—এ ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা বলা তো আপনাদের দায়িত্ব।’
পদ্মা ব্যাংক গত ৮ জুলাই সরকারি কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আবেদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ মতামতের জন্য তা পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে।

সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন ঘটে ২০১৭ সালে। ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন সাংসদ মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এবং কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান তিনি। অর্থের অভাবে চলতে না পারায় ব্যাংকটিকে ৭১৫ কোটি টাকার মূলধন দেয় রাষ্ট্রমালিকানাধীন ৪ ব্যাংক ও আইসিবি।

পদ্মা ব্যাংকের আবেদনে বলা হয়, এ ব্যাংকের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হচ্ছে। ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০২০ সালে ব্যাংকের ১৬০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। ২০২১ সালে জুন পর্যন্ত পরিচালন লোকসান হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। আরও জানানো হয়, ২০১৯ সালে পদ্মা ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারস ইকুইটি ছিল ৪৮৭ কোটি টাকা। ২০২০ সালে সেটা কমে হয়েছে ৩৩২ কোটি টাকা। আর ২০২১ সালের প্রথম ৬ মাসে তা আরও কমে ২২১ কোটি টাকা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২১ সালের শেষে শেয়ারহোল্ডারস ইকুইটি ১০০ কোটি টাকার নিচে চলে আসবে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থা জীবন বীমা করপোরেশনের (জেবিসি) জমা রাখা ৭টি মেয়াদি আমানতের ১২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ফেরত দিচ্ছে না পদ্মা ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে গত ৩১ মার্চ এ কথা জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। পরে ব্যাংকটিকে ২০২৯ সালের মধ্যে কিস্তিতে টাকা ফেরতের সুযোগ দেওয়া হয়। আগে একই ঘটনা ঘটেছিল পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জলবায়ু তহবিল এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (বিটিআরসির) তহবিলের ক্ষেত্রেও। এ নিয়ে তিন বছর আগে জাতীয় সংসদেও কথা উঠেছিল।