Thank you for trying Sticky AMP!!

সৈয়দপুরে বন্ধ ৫ পাটকল, ১৫ হাজার শ্রমিক বেকার

নীলফামারীর সৈয়দপুরের ছয়টি বেসরকারি পাটকলের মধ্যে পাঁচটিরই উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন এসব মিলের প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক।

পাটকলমালিকেরা বলছেন, স্থানীয় বাজারে কাঁচা পাটের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অথচ উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। এ কারণে মিলগুলো বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে। তাই কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিলমালিকেরা। বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা সৈয়দপুরের ছয়টি পাটকল হলো ইকু জুট প্রসেস, পোদ্দার অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, এনবি জুট মিলস, রানু অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, আফজাল জুট মিলস ও সেলিম জুট মিলস।

কারখানা বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে ইকু জুট প্রসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিকুল আলম বলেন, ‘স্থানীয় বাজারে হঠাৎ করেই তিন হাজার টাকার কাঁচা পাটের দাম বেড়ে হয়েছে ছয় হাজার টাকা। দুই মাস ধরেই এ অবস্থা চলছে। অথচ আমাদের উৎপাদিত পাটপণ্যের দাম মোটেই বাড়েনি।’

স্থানীয় একাধিক পাটকলমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে পাটের তৈরি সুতলি প্রতি মণ তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি পাটের বস্তার দাম ৬৫ টাকা। ১ মণ পাটে ৪৫টি বস্তা তৈরি হয়। ফলে এক মণ পাটে তৈরি বস্তা বিক্রি করে পাওয়া যাচ্ছে তিন হাজার টাকার কম। একইভাবে পাটের চটও প্রতি মণ তিন হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক মণ কাঁচা পাট কিনতেই খরচ হচ্ছে ছয় হাজার টাকা। তার সঙ্গে শ্রমিকের মজুরি, বিদ্যুৎ বিল, প্রশাসনিক ব্যয়সহ সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বাবদ আরও ৩০ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয়। সেখানে কাঁচা পাটের খরচই উঠছে না পণ্য বিক্রি করে। উৎপাদন খরচ বা লাভের হিসাব তো আরও দূরের বিষয়। ফলে আর্থিক ক্ষতি কমাতে পাঁচটি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মিলমালিকেরা।

সৈয়দপুর বিসিক শিল্পনগরীর পোদ্দার অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক রাজকুমার পোদ্দার বলেন, বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে পাট রপ্তানি হচ্ছে। এ কারণে দাম হু হু করে বাড়ছে। আর রানু অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান সুশীল কুমার দাস মনে করেন, পাটকলগুলো চালু রাখতে হলে পাটের দাম কমানোর বিকল্প নেই।

সৈয়দপুরের পার্শ্ববর্তী তারাগঞ্জ হাটের পাট ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছর অতিবৃষ্টির কারণে দেশে পাটের উৎপাদন কম হয়েছে। আবার রপ্তানিও বেড়েছে। এ কারণে হাটে পাটের সরবরাহ কম।

এদিকে স্থানীয় কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক সুলতান হোসেন বলেন, গত ফেব্রুয়ারি থেকে হঠাৎ পাটের দাম বেড়েছে। এতে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। তবে কৃষকেরা এখন পাটের উৎপাদন অনেক কমিয়ে দিয়েছেন।