Thank you for trying Sticky AMP!!

বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্কছাড় দাবি

দেশে বর্তমানে রিকন্ডিশন্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি আমদানিতে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত অবচয় হার রয়েছে। এটিকে আরও ১৫ শতাংশ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। সংগঠনটি বলেছে, এ প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হলে দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি বাড়বে; তাতে রাজস্বও বাড়বে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রাক্-বাজেট আলোচনায় এই প্রস্তাব দেন বারভিডার নেতারা। ঢাকার আগারগাঁওয়ে এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সভাপতিত্ব করেন। বারভিডার পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেটবিষয়ক দাবিদাওয়া তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি মো. হাবিব উল্লাহ। এ সময় এনবিআরের সদস্য মাসুদ সাদিক, এ কে এম বদিউল আলম ও বারভিডার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, দেশে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, ব্যবসা–বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কৃষি, অবকাঠামো, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রেখে চলেছে। তবে করোনা মহামারি, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলার– সংকটের কারণে এই খাত অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে। এখন রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি কমে গেছে, ব্যাংকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত মার্জিন দিয়েও ঋণপত্র খোলা যাচ্ছে না এবং গাড়ির দামও বেড়েছে ৩৫–৪০ শতাংশের মতো। সব মিলিয়ে এ খাতের ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে রয়েছেন।

গতকালের প্রাক্–বাজেট আলোচনায় ৯টি প্রস্তাব দেয় বারভিডা। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সব ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, আমদানি করা রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বয়স গণনাপদ্ধতি সংশোধন ও এই গাড়ির অবচয় হার বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা।

প্রস্তাবে বলা হয়, বাংলাদেশে একমাত্র জাপান থেকে ব্যবহৃত বা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি হয়। আমদানির ক্ষেত্রে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি হিসেবে বিবেচিত হওয়ার শর্ত হচ্ছে—সংশ্লিষ্ট গাড়ির প্রথম নিবন্ধনের তারিখ ও নিবন্ধন বাতিলের তারিখের মধ্যে পার্থক্য ন্যূনতম ৩৬৫ দিন হতে হবে এবং গাড়িটি কমপক্ষে এক হাজার কিলোমিটার চলতে হবে। তবে উৎপাদনকারী দেশ জাপানে এ ধরনের নিয়ম বিবেচনায় নেওয়া হয় না। ফলে নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে জালজালিয়াতির সুযোগ থাকে। এ জন্য চেসিস বুক অনুসরণ করে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির সংজ্ঞা ও বয়স গণনাপদ্ধতি নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে বারভিডা।

পরিবেশ ও জ্বালানিসহায়ক হিসেবে হাইব্রিড গাড়ির আমদানি সহজলভ্য করতে হাইব্রিড গাড়ির সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্কহার পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব করেছে বারভিডা। যেমন বর্তমানে ১৮০০ সিসি পর্যন্ত যে করভার রয়েছে, তা ২০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করা। এভাবে হাইব্রিড গাড়ির অন্যান্য সিসি স্ল্যাবেও পুনর্বিন্যাস করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, এতে ভোক্তারা উপকৃত হবেন ও রাজস্ব আদায় বাড়বে।

মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। তারা বৈদ্যুতিক গাড়িতে শুল্ক রেয়াতসহ বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। এ কারণে বাংলাদেশেও বৈদ্যুতিক গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছেন গাড়ি আমদানিকারকেরা। বর্তমানে ১০–১৫ আসনবিশিষ্ট মাইক্রোবাসের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক রয়েছে। গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত এ গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার চান তিনি।