Thank you for trying Sticky AMP!!

ভেস্তে গেছে রিহ্যাব নির্বাচনে সমঝোতার চেষ্টা, ভোট হচ্ছে ১০ বছর পর

  • ঢাকার ২৯ পরিচালক পদের বিপরীতে ৮৬ প্রার্থী আছেন। আর চট্টগ্রামের তিনটি পরিচালক পদের বিপরীতে আছেন সাতজন প্রার্থী।

  • রিহ্যাবের এই নির্বাচন গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন এবং ভোটার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। একপর্যায়ে নির্বাচন স্থগিত হয়।

রিহ্যাব

আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (রিহ্যাব) সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া ভেস্তে গেছে। ফলে এক দশক পর বাণিজ্য সংগঠনটির নেতৃত্ব নির্বাচনে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট হতে যাচ্ছে।

একাধিক প্রার্থী জানিয়েছেন, এখন রিহ্যাবের সরাসরি ভোটে নির্বাচন নিয়ে আর কোনো বাধা নেই। ভোটারদের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহ রয়েছে, যা সংগঠনের জন্য ইতিবাচক। তবে সংগঠনের প্রভাবশালী যে গোষ্ঠী সমঝোতার চেষ্টা করছিলেন তারা নানাভাবে প্রার্থীদের নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন।

নির্বাচনী বোর্ড গত সোমবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, ঢাকার ২৯ পরিচালক পদের বিপরীতে ৮৬ প্রার্থী আছেন। আর চট্টগ্রামের তিনটি পরিচালক পদের বিপরীতে আছেন সাতজন প্রার্থী। চারজন প্রার্থী গত রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন।

সংগঠনটিতে ২৯ পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৯৩ ব্যবসায়ী।ভোট দেবেন ৪৭৬ জন সদস্য। নির্বাচনে লড়ছে চারটি প্যানেল। 

রিহ্যাবের এই নির্বাচন গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেই নির্বাচনের কমিশন গঠন এবং ভোটার তালিকায় অনিয়ম নিয়ে পাল্টাপাল্টি মামলার ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে নির্বাচন স্থগিত হয়। এ ছাড়া উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত হয় সংগঠনটির সব ব্যাংক হিসাব। একই সঙ্গে নভেম্বরের শেষ দিকে রিহ্যাবের তৎকালীন কমিটির বর্ধিত মেয়াদ স্থগিত করে প্রশাসক বসায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রশাসক পদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জান্নাতুল ফেরদৌস দায়িত্ব নেন। তারপর নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণা হয়।

রিহ্যাবের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চারটি প্যানেলে হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাপান গার্ডেন সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আবাসন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ, সেঞ্চুরি রিয়্যালটির চেয়ারম্যান এম জি আর নাসির মজুমদারের নেতৃত্বে ডেভেলপারস ফোরাম, রিহ্যাবের সাবেক সহসভাপতি নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে নবজাগরণ প্যানেল এবং সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও হামিদ রিয়েল এস্টেট কনস্ট্রাকশনের এমডি ইন্তেখাবুল হামিদের নেতৃত্ব ‘জয়ের ধারা’ নামে একটি প্যানেল। ইন্তেখাবুল হামিদ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ভাই।

Also Read: রিহ্যাবে প্রতি পাঁচজনে নেতা হতে চান একজন

জানতে চাইলে ডেভেলপারস ফোরাম প্যানেলের নেতা এম জি আর নাসির মজুমদার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখন আর শঙ্কা নেই। তবে একটি শঙ্কা আছে। প্রভাবশালী একটি প্যানেলের লোকজন বাকি তিন প্যানেলের প্রার্থীদের নিজেদের দলে ভেড়ানোর জন্য টানাটানি করছে। তিনি আরও বলেন, ভোটে জয়ী হলে আমরা রিহ্যাবকে শক্তিশালী করব। পাশাপাশি সরকারের সঙ্গে দেনদরবার করে আবাসন ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিসহায়তা আদায় করব।

এদিকে এবারের নির্বাচন প্রক্রিয়ার একপর্যায়ে গত সপ্তাহে সমঝোতার মাধ্যমে নেতৃত্ব চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নেন সংগঠনের কয়েকজন সাবেক প্রভাবশালী নেতা। তারই অংশ হিসেবে প্রার্থীদের সঙ্গে ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মতবিনিময় সভা করেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সভায় তিনি প্রার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনার পরামর্শ দেন। তার আগে ওই দিন সকালে নির্বাচনের তফসিল সংশোধন করে নির্বাচন বোর্ড। তাতে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ভোটের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পিছিয়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি করা হয়। যদিও আগের তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়সীমা ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছিল।

এদিকে সুষ্ঠু ভোট হবে বলে আশা প্রকাশ করে জয়ের ধারা প্যানেলের নেতা ইন্তেখাবুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, আমরা বিদায়ী কমিটির বাকি কাজ শেষ করব। ড্যাপ নিয়ে যেসব জটিলতা আছে তা সমাধানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেব।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শুক্রবার নিজের বাসভবনে রিহ্যাবের চার প্যানেল লিডারসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ প্রার্থীকে নিয়ে নির্বাচন নিয়ে সভা করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সেখানে তিনি বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমেই সংগঠনের নেতৃত্ব চূড়ান্ত হবে। কোনো সিলেকশন হবে না। যাঁরা নির্বাচন করতে চায় করবে। এরপর ওই দিন বিকেল থেকে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা শুরু করে দেন প্রার্থীরা।

রিহ্যাব নির্বাচনের আরেক প্যানেল আবাসন ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নেতা ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আশা করছি, চাপমুক্ত নির্বাচন হবে। নির্বাচনের মাধ্যমেই রিহ্যাবে শক্তিশালী নেতৃত্ব আসবে। আমরা জয়ী হলে সংগঠনে সংস্কার করব। ড্যাপের জটিলতা দূর করাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যে সমস্যা সমাধানে কাজ করব।

Also Read: রিহ্যাবের নির্বাচনে প্রার্থী কমাতে বললেন প্রতিমন্ত্রী