Thank you for trying Sticky AMP!!

জ্বালানির মূল্য বেঁধে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি লিজ ট্রাসের

নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন লিজ ট্রাস। যে অভূতপূর্ব চাপের মুখে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে শুরুতেই তিনি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে জ্বালানির দাম। লিজ জানিয়েছেন, পারিবারিক জ্বালানি ব্যয়ের একটি সীমা নির্ধারণ করে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তাঁর।

লিজ ট্রাসের এ কথা বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন ব্রিটিশ পর্যবেক্ষকেরা। তাঁদের বক্তব্য, এই ঘোষণা কার্যকর হলে মূল্যস্ফীতির হার তেমন একটা আর বাড়বে না; অর্থাৎ যুক্তরাজ্যের মন্দা অতটা গভীর হবে না। খবর দ্য গার্ডিয়ানের

যুক্তরাজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের বক্তব্য হলো, এই প্যাকেজ ব্যয়বহুল হলেও কার্যকর হবে। সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ নেইল শিয়ারিং বলেছেন, এর অর্থ হচ্ছে মূল্যস্ফীতি আগামী মাসে বৃদ্ধি পাবে, তবে জানুয়ারি মাসে আর বাড়বে না। যদিও তখন মূল্যসীমা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। এতে মন্দার তীব্রতা অর্ধেক কমে আসবে।

শিয়ারিং বলেন, ‘নতুন সরকার গৃহস্থালি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেঁধে দিলে অক্টোবর মাসে মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশের মতো উঠতে পারে, যদিও পূর্বাভাস ছিল জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ৫ শতাংশে উঠতে পারে। তারপরও মন্দা হতে পারে, কিন্তু আমরা ধারণা করছি, জিডিপির সংকোচন ১ শতাংশ নয়, শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ দাঁড়াতে পারে।’

লিজ ট্রাসের পরিকল্পনা হলো, পারিবারিক জ্বালানি ব্যয় ২ হাজার ৫০০ পাউন্ডের মধ্যে বেঁধে রাখা। মূলত এই ব্যয় দাঁড়াবে ১ হাজার ৯৭১ পাউন্ড, এর সঙ্গে সবাইকে কমপক্ষে ৪০০ পাউন্ড সহায়তা দেওয়া হবে। আর এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৯০ বিলিয়ন বা ৯০ হাজার পাউন্ড। সরকার এই অর্থ সংগ্রহ করবে সাধারণ করদাতাদের কাছ থেকে, জ্বালানি বিল হিসেবে নয়।

এ লক্ষ্যে ব্রিটিশ সরকার জ্বালানি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আইনি বাধ্যবাধকতামূলক চুক্তি করবে। এর মধ্য দিয়ে জ্বালানির পাইকারি মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।

বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এলেন লিজ ট্রাস

৬ সেপ্টেম্বর ক্ষমতা গ্রহণ করলেন লিজ ট্রাস। সময়টা তাঁর জন্য মোটেও ভালো নয়। এ দিনই জানা গেল, আগস্টে যুক্তরাজ্যের উৎপাদন খাত সংকুচিত হয়েছে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ও চার্টার্ড ইনস্টিটিউট অব প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের (সিআইপিএস) প্রতিবেদনে উৎপাদন সংকোচনের তথ্য পাওয়া গেছে। আরও বলা হয়েছে, এই সংকোচন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উৎপাদন খাতের পাশাপাশি সেবা খাতের অবস্থাও ভালো নয়। বলা হয়েছে, দেশটির সেবা খাত দুর্বল হয়ে পড়েছে।

এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ও সিআইপিএসের যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো ব্যবসা করতে গিয়ে অতিরিক্ত ব্যয়ের চাপে পড়ছে। মূলত রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানির মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির পারিবারিক জ্বালানি ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।

দেশটির পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স এসঅ্যান্ডপি/ সিআইপিএস আগস্ট মাসে ৫০-এর নিচে নেমে গেছে। জুলাই মাসে যে মান ছিল ৫২ দশমিক ১, আগস্টে তা ৪৯ দশমিক ৬-এ নেমে এসেছে। ৫০-এর ওপর থাকলে বোঝা যায়, বেসরকারি খাতের সম্প্রসারণ হচ্ছে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশের ওপরে। এ বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের ভোগ ব্যয় কমেছে বলেও জানা গেছে। সেখানকার খুচরা ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো জানিয়েছে, আগস্টে মানুষের কেনাকাটা কমে গেছে।

ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়ামের (বিআরসি) তথ্যানুসারে, আগস্টে বার্ষিক হিসাবে বিক্রয় প্রবৃদ্ধি ছিল ১ শতাংশ, জুলাই মাসে যা ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ।