Thank you for trying Sticky AMP!!

অর্থমন্ত্রীর ইতিবাচক মন্তব্যে সূচক বেড়েছে বাজারে

দেশের শেয়ারবাজারে গতকাল রোববার সপ্তাহের শুরুটা হয়েছে সূচকের ঊর্ধ্বগতি দিয়ে। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়েছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটি বেড়েছে ৮৬ পয়েন্ট। সূচক বাড়লেও দিন শেষে উভয় শেয়ারবাজারে লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে কমেছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গতকালের বাজারে সূচকের উত্থানের পেছনে অবদান রেখেছে শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ইতিবাচক বক্তব্য। গত শনিবার নিজ জেলা সিলেটে পুঁজিবাজার-বিষয়ক বিনিয়োগ শিক্ষা মেলার উদ্বোধন করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘পুঁজিবাজার কোনোমতেই ফাটকা বাজার নয়। যাঁরা এমনটি মনে করেন, তাঁরা পুঁজিবাজারের শত্রু।’ অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। কারণ অতীতে অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজারকে ‘দুষ্টু বাজার’ হিসেবে অভিহিত করেন। ২০১২ সালে সংসদে অর্থমন্ত্রী শেয়ারবাজারকে ‘দুষ্টু শেয়ারবাজার’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, ‘এটা নিয়ে চিন্তা না করলে অর্থনীতির কোনো ক্ষতিই হবে না।’ তাই শেয়ারবাজার নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ইতিবাচক মন্তব্য বিনিয়োগকারীদের আশাবাদী করেছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকে।

এদিকে ঢাকার বাজারে গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানি ইস্টার্ন কেবলস। গতকাল এক দিনেই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৪ টাকা বা প্রায় ৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৬ টাকায়। চলতি বছরের প্রথম কার্যদিবসে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১৯৬ টাকা। ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত নভেম্বর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ারের দামের ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। গত ১ নভেম্বরও কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১৪০ টাকা। আড়াই মাসের ব্যবধানে তা ৭৬ টাকা বেড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের একটি বড় শিল্প গ্রুপ বাজার থেকে কোম্পানিটির বিপুল শেয়ার কেনে। এ খবরে একটানা বাড়তে থাকে এটির শেয়ারের দাম।

১৯৮৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া ইস্টার্ন কেবলসের ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক সরকার। কোম্পানিটির মূলধন ২৪ কোটি টাকা, যা ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ২ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারে বিভক্ত। একাধিক মার্চেন্ট ব্যাংকার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছোটো মূলধনি কোম্পানি হওয়ায় এবং শেয়ারের একটি বড় অংশ সরকারের হাতে থেকে যাওয়ায় কৃত্রিমভাবে এটির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি ঘটানো সহজ।

মার্চেন্ট ব্যাংক আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টসের গতকালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকালের বাজারে সূচকের উত্থানে ভূমিকা ছিল টেলিকম, ওষুধ ও রসায়ন এবং প্রকৌশল খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধি। এদিন টেলিকম খাতের লেনদন হওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম গড়ে প্রায় ১ শতাংশ করে বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে গ্রামীণফোনের দাম।

ডিএসইর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, টেলিকম খাতের কোম্পানি গ্রামীণফোনের প্রতিটি শেয়ারের দাম গতকাল দিন শেষে ৩ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮৮ টাকায়। মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি গতকাল কোম্পানিটি ঢাকার বাজারে লেনদেনে চতুর্থ অবস্থানে ছিল। এদিনও ঢাকার বাজারে লেনদেনে শীর্ষে ছিল স্কয়ার ফার্মা। গতকাল রোববার এককভাবে ডিএসইতে কোম্পানিটির ২৮ কোটি টাকার শেয়ারের হাতবদল হয়। আর দিন শেষে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে প্রায় ২ টাকা।

ডিএসইতে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৪৪ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১৫ কোটি টাকা কম। অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে এদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৮ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৬ কোটি টাকা কম।