Thank you for trying Sticky AMP!!

এবার শেয়ারবাজারের ১৫ সিইওর কাছে ব্যাখ্যা তলব বিএসইসির

শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরুর আগেই শেয়ারের আগ্রাসী বিক্রয়াদেশ দেওয়ার অভিযোগে ১৫টি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) কাছ থেকে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আজ মঙ্গলবার এ ব্যাখ্যা তলব করেছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

লেনদেন শুরুর আগে প্রি–ওপেনিং সেশনে ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ার ২ শতাংশ কম দামে আগ্রাসী বিক্রয়াদেশকে বিএসইসি বাজারে দরপতন ঘটানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছে।

বিএসইসি বলছে, এসব ব্রোকারেজ হাউস থেকে আজ সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর আগেই মৌলভিত্তির কিছু কোম্পানির বড় অঙ্কের শেয়ারের বিক্রয়াদেশ দেওয়া হয় দিনের সর্বনিম্ন দামে। তখনো বাজারে লেনদেন শুরু হয়নি। লেনদেন শুরুর আগে প্রি–ওপেনিং সেশনে ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ার ২ শতাংশ কম দামে আগ্রাসী বিক্রয়াদেশকে বিএসইসি বাজারে দরপতন ঘটানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।

Also Read: ডিএসইর লেনদেন এক বছর আগের অবস্থানে

যেসব ব্রোকারেজ হাউসের শীর্ষ নির্বাহীর কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে, সেগুলো হলো শাহেদ সিকিউরিটিজ, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ, আইডিএলসি সিকিউরিটিজ, এস অ্যান্ড এইচ ইক্যুইটিজ, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ, বিডি ফাইন্যান্স সিকিউরিটিজ, এমটিবি সিকিউরিটিজ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ, গ্লোব সিকিউরিটিজ, শান্তা সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ, আইসল্যান্ড সিকিউরিটিজ, কাইয়ূম সিকিউরিটিজ ও মিডওয়ে সিকিউরিটিজ।

১৫টি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহীর কাছ থেকে আমরা আগ্রাসী বিক্রয়াদেশ দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করেছে। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোহাম্মদ রেজাউল করিম, নির্বাহী পরিচালক, বিএসইসি

জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৫টি ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহীর কাছ থেকে আমরা আগ্রাসী বিক্রয়াদেশ দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা তলব করেছে। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বিএসইসি বলছে, আজ মঙ্গলবার লেনদেন শুরুর আগেই ১৫টি ব্রোকারেজ হাউস থেকে কিছু কোম্পানির শেয়ারের আগ্রাসী বিক্রয়াদেশ আসায় কোম্পানিগুলোর দাম লেনদেনের শুরুতেই সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়। তাতে লেনদেন শুরুর প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫০ পয়েন্ট কমে যায়।

নিয়ম অনুযায়ী, বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারে।

যদিও দিন শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি ৪৮ পয়েন্ট বা পৌনে ১ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে ৬০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। কয়েক দিন ধরে বাজারে বড় ধরনের দরপতন চলছিল। এ দরপতন ঠেকাতে বাজারে তদারকি বাড়ায় বিএসইসি। তাতে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে আইন লঙ্ঘন করে লেনদেনের তথ্য মেলে।
নিয়ম অনুযায়ী, বর্তমানে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারে।
ব্যাখ্যা তলব করা একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, লেনদেন শুরুর আগেই কিছু বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার ২ শতাংশ কম দামে বিক্রির আদেশ দেন। বিনিয়োগকারীদের ইচ্ছেতাই আইন মেনে দিনের সর্বনিম্ন দামে বিক্রয়াদেশ দেওয়া হয়। যেহেতু প্রি–ওপেনিং সেশনে শেয়ারের ক্রয়াদেশ বা বিক্রয়াদেশ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে, তাই বিনিয়োগকারীরা ওই সময় তাঁদের শেয়ার বিক্রির আদেশ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঈদ ঘনিয়ে আসায় এখন অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নিতে চাচ্ছেন। এ কারণে অনেকে লোকসানেও শেয়ার বিক্রি করছেন। আর লেনদেনকারী ব্রোকারেজ হাউস হিসেবে আমরা সেসব আদেশই কার্যকর করি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঈদ ঘনিয়ে আসায় এখন অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নিতে চাচ্ছেন। এ কারণে অনেকে লোকসানেও শেয়ার বিক্রি করছেন। আর লেনদেনকারী ব্রোকারেজ হাউস হিসেবে আমরা সেসব আদেশই কার্যকর করি।
এর আগে গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ৯টি ব্রোকারেজ হাউসের ১৫ জন অনুমোদিত প্রতিনিধি বা অথরাইজড রিপ্রেজেনটেটিভকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছিল বিএসইসি। এসব অনুমোদিত প্রতিনিধি শেয়ারবাজারে ট্রেডার হিসেবে পরিচিত। ট্রেডারদের বিরুদ্ধে বিএসইসির অভিযোগ ছিল, ভালো ভালো কোম্পানির শেয়ার সোমবার তারা ‘জিরো প্রাইসে বা মার্কেট প্রাইসে’ বিক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন। যার কারণে ওই দিন ওই সব শেয়ারের দরপতন ঘটে।

Also Read: অভিনব পন্থায় শেয়ার বিক্রির চেষ্টা, ১৫ ট্রেডারকে বহিষ্কারের নির্দেশ

তবে একাধিক ব্রোকারেজ হাউসের প্রতিনিধি ও শেয়ারবাজারের লেনদেনের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেয়ারবাজারে অহরহই মার্কেট প্রাইসে শেয়ার বিক্রির ঘটনা ঘটে। কারণ, ডিএসইর লেনদেন যন্ত্রেই শেয়ার বিক্রির এ ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যবস্থাটি বিদ্যমান থাকায় ট্রেডাররা শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে এটি কম বেশি ব্যবহার করেন।