Thank you for trying Sticky AMP!!

পুঁজিবাজারে দরপতন, মুদ্রানীতির প্রভাব দেখছেন বিশ্লেষকেরা

সূচকের ব্যাপক দরপতন দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে লেনদেন শেষে ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১১৭ পয়েন্ট।

পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই দরপতনকে আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক মূল্য সংশোধন হিসেবে দেখলেও মুদ্রানীতি ঘোষণার প্রভাব বলেও মনে করছেন। আজ মুদ্রানীতি ঘোষণায় শেয়ারবাজারে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর—এটাও বাজারে সূচক পতনের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তাঁরা।

ডিএসইতে ১৮ জানুয়ারি থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ কার্যদিবসে সূচক বৃদ্ধি পায় ১৭৪ পয়েন্ট। এরপর ২৪ জানুয়ারি থেকে আজ ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তিন কার্যদিবসে সূচক কমল ২০৮ পয়েন্ট। অর্থাৎ সূচক যে পরিমাণ বেড়েছিল, তাতে অস্বাভাবিকতার কিছু দেখছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) শেষার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে আজ বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতি ঘোষণায় গভর্নর ফজলে কবির জানান, ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে যে বিনিয়োগ রয়েছে, তা আইনের মধ্যে রাখার জন্য নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া ঋণ গ্রাহকেরা যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার করেন, সে বিষয়ে নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

গভর্নরের বক্তব্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা ভীতি তৈরি করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ হেলাল বলেন, ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আজকে মুদ্রানীতি ঘোষণায় ব্যাংকিং খাতের বাইরে গিয়ে পুঁজিবাজার নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার কথা বলেছেন; যা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা ভীতি তৈরি করেছে। বর্তমানে বাজারে শেয়ারের মূল্য কিছুটা ভালো ছিল, এ অবস্থায় গভর্নরের বক্তব্যের পর তাঁরা মুনাফা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

তবে বাজারে কিছুটা নড়াচড়া হলেও এ ধরনের মূল্য সংশোধনে ভয়ের কিছু নেই বলে মনে করেন মোহাম্মদ হেলাল। তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে আজকে যে দর পড়েছে, তাতে ভয়ের কিছু নেই। বাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে। বাজারে সূচক বেড়ে একটা পর্যায়ে গিয়ে থামবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট খুজিস্তা নূর-ই-নাহরিন বলেন, বাজারে আজকে স্বাভাবিক নিয়মেই মূল্য সংশোধন হয়েছে। তবে মুদ্রানীতি নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে; যার একটা নেতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে আজকের পুঁজিবাজারে।

তিনি বলেন, মাসের শেষ দিকে ব্যাংক ও নন ব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল করপোরেশনগুলোকে বিনিয়োগসীমা (এক্সপোজার লিমিট) প্রতিবেদন দিতে হয় বাংলাদেশ ব্যাংককে। তাই মাসের শেষে কিছুটা সূচক কমে পুঁজিবাজারে। এটা স্বাভাবিক নিয়ম।

ডিএসইতে আজ ১ হাজার ১৩৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ১৩২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা কম। গত কার্যদিবস ডিএসইতে ১ হাজার ২৬৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

ডিএসইতে আজ সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো বেক্সিমকো লিমিটেড, এসিআই, ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, আরএসআরএম স্টিল, একমি ল্যাবরেটরিজ, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স, যমুনা অয়েল, আরএকে সিরামিকস, সাইফ পাওয়ার টেক ও ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। ডিএসইতে আজ ৩২৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৭টির শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে ২৭৫টির। অপরিবর্তিত ৫টির দাম।

অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও আজ সার্বিক সূচক বেড়েছে ৪১১ দশমিক ১১ পয়েন্ট। আজ লেনদেনের পরিমাণ ৬৮ কোটি টাকা। হাতবদল হওয়া ২৬৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির, কমেছে ২১৯টির, অপরিবর্তিত ৬টির।