Thank you for trying Sticky AMP!!

বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা চাইলেন সবাই

বিনিয়োগের সঙ্গে বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করা না গেলে দেশের পুঁজিবাজারের কাঙ্ক্ষিত বিকাশ ঘটবে না। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দেশের শেয়ারবাজারে যা ঘটেছে, তা দেশের নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই হতাশার। তাই পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা সবার আগে দরকার—এমন মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদেরা।

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদেরা।

গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হোসেন সামাদ প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারের ভিশন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হতে হলে বিনিয়োগ বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। আর এ বিনিয়োগ বাড়াতে পুঁজিবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু যত দিন পুঁজি তথা বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না, তত দিন কার্যকর পুঁজিবাজারও আমরা দেখতে পারব না। পুঁজিবাজারে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে মোবাইল প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।’

মানসম্মত কোম্পানি, সুশাসন, যথাযথ জ্ঞান ও গবেষণাই পারে শেয়ারবাজারকে কাঙ্ক্ষিত উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে। আর বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানই হচ্ছে তাঁর প্রথম সুরক্ষা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, মানসম্মত কোম্পানি, সুশাসন, যথাযথ জ্ঞান ও গবেষণাই পারে শেয়ারবাজারকে কাঙ্ক্ষিত উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে। আর বিনিয়োগকারীদের জ্ঞানই হচ্ছে তাঁর প্রথম সুরক্ষা। ভালো কোম্পানি বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী নিয়ে আসার পাশাপাশি বাজারের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখে।

এ জন্য তিনি মেটলাইফ, নেসলে, ইউনিলিভারের মতো মানসম্মত কোম্পানি বাজারে আনতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য বিএসইসি ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এ–ও বলেন, শুধু মুখে বললে ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসবে না। এ জন্য কর ছাড়সহ নানা ধরনের সুবিধা দিতে হবে।

শেয়ারবাজারকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করতে কাজ চলছে। বাজারে আমরা এ বার্তা দিতে চাই, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থই আমাদের কাছে সবার আগে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গত ১০ বছরে যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসারই কথা না, সেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে। অথচ যাদের আসার কথা, তারা আসেনি। আবার বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ডকে দেখেছি গরুর খামারেও বিনিয়োগ করতে। নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। তা ধরে রাখতে হলে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হোসেন সামাদ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘করোনা–পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রথমত, কোন দেশ থেকে আমরা বিনিয়োগ আনতে চাই, সেটি ঠিক করা। দ্বিতীয়ত, কোন খাতে বিনিয়োগ আনতে চাই, তার একটি তালিকা করা এবং সবশেষে কার্যকর একটি পরিকল্পনা তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ করা।’

সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘শেয়ারবাজারকে পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করতে কাজ চলছে। বাজারে আমরা এ বার্তা দিতে চাই, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থই আমাদের কাছে সবার আগে। এ কারণে সিকিউরিটিজ আইন পরিপালনের ক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দিচ্ছি না।