Thank you for trying Sticky AMP!!

সূচকের উত্থান থামিয়ে দিল ‘গুজব’

শেয়ারবাজারে গতকাল মঙ্গলবার সূচকের বড় উত্থানকে মিলিয়ে দিল ‘গুজব’। তাও লেনদেনের শেষ এক ঘণ্টায়। এ সময় বাজারে ব্যাপকভাবে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। এ গুজবের সত্যাসত্য নিশ্চিত না হয়েই একদল বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। তাতে দিন শেষে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স হারায় ৭৭ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ। অথচ সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর মাত্র ১৫ মিনিটে সূচকটি আগের দিনের চেয়ে ৯০ পয়েন্ট বা সোয়া ১ শতাংশ বেড়েছিল।

গুজবের পাশাপাশি গতকালের বড় পতনের পেছনে ভূমিকা রেখেছে এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের শেয়ার। লেনদেনের শেষ ভাগে এসে কোম্পানিটির শেয়ার ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়ে। তার আগে এটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতনও ঘটে। বর্তমান শেয়ারবাজারে বহুল আলোচিত একজন কারসাজিকারক ব্যাংকটিসহ একাধিক কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজিতে জড়িত রয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তাঁর কারসাজির কারণে পুরো বাজার হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির শেয়ারনির্ভর হয়ে পড়েছে। এতে অন্যান্য কোম্পানির শেয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বেলা সোয়া একটার পর বাজারে ব্যাপকভাবে ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়ে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন। এ গুজবে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের অনেকে শেয়ার বিক্রি করে দেন। কয়েক দিনের টানা পতনে এমনিতেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক ভর করেছিল। সেই আতঙ্কে ঘি ঢেলে দেয় ‘পদত্যাগ গুজব’। তাতে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স নেমে আসে প্রায় ৭ হাজারের ঘরে।

শেয়ারবাজারে এ নিয়ে টানা সাত দিন দরপতন ঘটল। এ সাত দিনে ঢাকার বাজারের প্রধান সূচকটি কমেছে ৩৪৮ পয়েন্ট বা পৌনে ৫ শতাংশ। তার মধ্যে চলতি সপ্তাহের তিন কার্যদিবসে সূচকটি কমেছে ২২৩ পয়েন্ট। গতকাল সাড়ে চার ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইএক্স সূচকের ১৬৭ পয়েন্টের উত্থান-পতন ঘটেছে। কারণ, সকালে ৯০ পয়েন্ট বেড়ে, দিন শেষে ৭৭ পয়েন্ট কমেছে সূচকটি।

সূচক কমলেও ঢাকার বাজারে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ২৮৯ কোটি টাকা বেশি। ঢাকার বাজারে লেনদেন বাড়লে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন আগের দিনের চেয়ে ২৬ কোটি টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৯ কোটি টাকায়।

বিএসইসিতে বৈঠক

বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল বিকেলে শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বিএমবিএ, ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সেখানে বাজারে তারল্য প্রভাব বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বলা হয়, তারল্য সংকট কাটাতে বাজার মধ্যস্থতাকারীরা চাইলে বন্ড ইস্যু করতে পারবে। এ ছাড়া পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিলের অর্থ দ্রুত বাজারে বিনিয়োগে আনার বিষয়েও সভায় আলোচনা হয়।

ব্লক মার্কেট বিপুল লেনদেন

গতকাল ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ২৩০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। তার মধ্যে ১৮৮ কোটি টাকায় ডেল্টা লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রায় ৯৩ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয়। আর ব্লক মার্কেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন ছিল ফরচুন শুর। এদিন ব্লকে কোম্পানিটির পৌনে ২২ লাখ শেয়ারের হাতবদল হয় প্রায় ২৩ কোটি টাকায়। এ দুই কোম্পানির শেয়ার নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারের আলোচিত ওই বিনিয়োগকারী কারসাজির মাধ্যমে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটাচ্ছেন বলে বাজারসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ব্লক মার্কেটে গতকাল ডেল্টা লাইফের বিপুল শেয়ার কিনতে গিয়ে ওই বিনিয়োগকারী মূল বাজারে এনআরবিসি ব্যাংকের বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রি করেন।