Thank you for trying Sticky AMP!!

হিমায়িত খাদ্যের গরম ব্যবসা

অনলাইনে কেনাকাটা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে হিমায়িত খাদ্যের ব্যবসা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে

মহামারির কারণে হিমায়িত খাদ্য বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে। এই সময় মানুষের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও অনলাইনে কেনাকাটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্র্যান্ডভেদে হিমায়িত খাদ্য বিক্রিতে ২১৮ শতাংশ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করে সাধারণ চলাচল সীমিত করার ফলেই মূলত অনলাইনে হিমায়িত খাদ্যের বিক্রি বাড়ে। সুপারশপ চেইন মীনা বাজারের অপারেশনস বিভাগের প্রধান শামীম আহমেদ জাহাঙ্গীর জানান, সাধারণ সময়ে প্রতি মাসে তাঁদের হিমায়িত খাবার বিক্রি হতো এক কোটি টাকার। লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তা প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।

আরেক বড় সুপারশপ স্বপ্নের প্যাকেটজাত খাদ্য ব্যবসার পরিচালন প্রধান মো. ইকবাল হোসেন জানান, সাধারণ ছুটির সময়ে তাঁদের হিমায়িত খাবারের বিক্রি ৬২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

দেশের অন্যতম অনলাইন গ্রোসারি শপ বা মুদি ব্যবসা চালডালের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা জিয়া আশরাফ জানান, করোনাকালে তাঁদের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া পণ্যগুলোর তালিকায় শীর্ষে ছিল হিমায়িত খাদ্য। চলতি ২০২০ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির তুলনায় এপ্রিল-জুন মাসে তাঁদের হিমায়িত পণ্য বিক্রি ১৬৪ শতাংশ বেড়েছে। চালডালে গত এক বছরে হিমায়িত খাদ্যের বিক্রি বেড়েছে ২১৮ শতাংশ। এসব পণ্য বিক্রি করে তাদের আয় বেড়েছে ১৮৩ শতাংশ।

বাংলাদেশে ১৯টি প্রতিষ্ঠান হিমায়িত খাবার তৈরি করে। বাজারে এ ধরনের পণ্য উৎপাদনের সবচেয়ে পুরোনো প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন হারভেস্ট সূত্রে জানা গেছে, সাধারণ ছুটিতে তাদের পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ শতাংশ। লকডাউন শেষে সাধারণ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটির হিমায়িত খাদ্য বিক্রি গত বছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে।

গোল্ডেন হারভেস্টের উপপরিচালক মো. হামিদুর রহমান খান বলেন, ‘করোনার সময়ে পণ্যের চাহিদা আমাদের উৎপাদনক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে যায়। এখন চাহিদা কিছুটা কমলেও আমাদের খাবার তৈরির জন্য নতুন মেশিন বসাতে হয়েছে।’

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হিমায়িত পণ্যের ব্র্যান্ড ঝটপট দেশের পাশাপাশি বিদেশের বাজারেও পণ্য বিক্রি করে। করোনাকালে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৩০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তাই ঝটপটও উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি করার কথা ভাবছে।

কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হায়দার চৌধুরী বলেন, কাজী ফুডের হিমায়িত খাবার বিক্রি বেড়েছে ১১-১২ শতাংশ। কাজীর কিয়স্কগুলো (ছোট খুচরা বিক্রির দোকান) বন্ধ হওয়ায় সার্বিকভাবে বিক্রি কমেছে। তবে সুপারমার্কেট ও অনলাইনে বিক্রি বেড়েছে।

বৈশ্বিক ও দেশীয় বাজার

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড মার্কেটের তথ্য অনুযায়ী, ফ্রোজেন ফুডের দেশীয় বাজার বছরে ৫০০ কোটি টাকার। ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ফ্রোজেন ফুডের বাজারের আকার হবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার। বাজার বিশ্লেষণকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড মার্কেটসের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে হিমায়িত খাদ্যের বৈশ্বিক বাজার ছিল ২৯ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের। এই বাজার ২০২৭ সাল নাগাদ বেড়ে ৪০ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে উঠতে পারে।

হিমায়িত খাদ্যের বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশেরও সম্ভাবনা আছে বলে মনে করেন কাজী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের সিইও তানভীর হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, হিমায়িত পণ্য পরিবহনে কেন্দ্রীয় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা নেই। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারলে বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্যের বাজারে ভালো করবে।