Thank you for trying Sticky AMP!!

এ বছর ‘মোটামুটি ভালো’ যাবে শেয়ারবাজার, ভিন্নমত বিশ্লেষকের

ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের এক জনমত জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৭ শতাংশ এ অভিমত দিয়েছেন। আর ২৩ শতাংশ বলেছেন, বাজার এখনকার অবস্থাতেই থাকবে।

দেশের শেয়ারবাজার চলতি বছর ‘মোটামুটি ভালো’ যাবে বলেই মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। সম্প্রতি এক জরিপে অংশ নিয়ে শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ মতামত দেন। জরিপটি পরিচালনা করেছে দেশের শেয়ারবাজারের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৩৭ শতাংশই মনে করেন, চলতি বছরজুড়ে শেয়ারবাজার ‘মোটামুটি ভালো’ যাবে। আর ২৩ শতাংশ মনে করেন, বাজার এখনকার মতো একই রকম থাকবে। বর্তমানে শেয়ারবাজারে একধরনের মন্দাভাব চলছে। তবে বাজার খুব ভালো হবে বা খুব খারাপ হবে, এমনটা মনে করেন খুব কমসংখ্যক লোক। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ করে এ বছর বাজার ‘খুব ভালো’ হবে। আবার একই সংখ্যক মনে করেন, বাজার ‘খুব খারাপ’ হবে।

Also Read: শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি আনতে একসঙ্গে কাজ করবে ডিএসই ও সিএসই

তবে জরিপের এ মতামতের সঙ্গে একমত নন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউআইইউ) বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ মুসা। তিনি বলেন, শেয়ারবাজার ভালো যাবে, নাকি খারাপ হবে, এটি বোঝার মতো কোনো ব্যবস্থা বর্তমানে বাজারে নেই। কারণ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসের জন্য সিংহভাগ শেয়ারেরই কোনো লেনদেন হয় না। এ অবস্থায় বাজার কেমন হবে, তা অনুমান করা কিছুতেই সম্ভব নয়।

Also Read: চলতি বছর তিন ঝুঁকিতে শেয়ারবাজার

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসের জন্য সিংহভাগ শেয়ারেরই কোনো লেনদেন হয় না। এ অবস্থায় বাজার কেমন হবে, তা অনুমান করা কিছুতেই সম্ভব নয়
মোহাম্মদ মুসা, অধ্যাপক, বাণিজ্য অনুষদ, ইউআইইউ

লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ ‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার সেন্টিমেন্ট সার্ভে-২০২৩’ নামের এ জরিপ করেছে গত ১ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। জরিপে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট ১০১ জনের প্রশ্নোত্তরভিত্তিক মতামত নেওয়া হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন বিনিয়োগ ব্যাংকার, বিদেশি বিনিয়োগকারী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী, ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী, শেয়ারবাজারে লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি বা ট্রেডার, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী। ২০১২ সাল থেকে পুঁজিবাজার নিয়ে এই সেন্টিমেন্ট জরিপ পরিচালনা করে আসছে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজ।

এবারের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, চলতি বছর বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁদের পন্থা বা কৌশল কী হবে। জবাবে সর্বোচ্চ ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের পন্থা অবলম্বন করবেন। আর ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ বলেছেন, তাঁদের বিনিয়োগ পন্থা বা কৌশল হবে মধ্যমেয়াদি।

Also Read: শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্যস্তর আপাতত উঠছে না

জরিপকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, চলতি বছর শেয়ারবাজার সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হতে পারে কোন কারণে। জবাবে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যক অর্থাৎ ২৮ শতাংশ বলেছেন, সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণেই বাজার সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে। আর ২০ শতাংশ বলেছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদ্যোগ বা প্রণোদনা বাজারকে প্রভাবিত করবে।

জরিপের বিষয়ে জানতে চাইলে লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার সাফাত রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে আমরা এ জরিপ করে আসছি। শেয়ারবাজার ও দেশের অর্থনীতি নিয়ে মানুষ কী ভাবছেন, তা জানতেই এ জরিপ করে আসছি আমরা। এর মাধ্যমে আমরা অর্থনীতি ও শেয়ারবাজার নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের ধারণা জানতে পারি।’

এদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারী চলতি বছরের জন্য বাজারের তিনটি প্রধান ঝুঁকি চিহ্নিত করেছেন। এগুলো হলো বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট, দুর্বল নিয়ন্ত্রণ কাঠামো ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমে যাওয়া।

শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকটকেই প্রধান ঝুঁকি বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষক মোহাম্মদ মুসা। তিনি বলেন, যেখানে বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইসের কারণে লেনদেনেরই সুযোগ পাচ্ছেন না, সেখানে তাঁদের আস্থার সংকট দেখা দেবে—এটাই স্বাভাবিক।