Thank you for trying Sticky AMP!!

উৎপাদন এলাকা বগুড়ায় সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না আলু

আলু

দেশে যে কয়টি অঞ্চলে বেশি আলু উৎপাদিত হয়, তার মধ্যে বগুড়া অন্যতম। যদিও বগুড়া অঞ্চলের হিমাগার পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি হচ্ছে না। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঠে নামলেও আলুর দাম কমেনি বগুড়ায়।

হিমাগারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উৎপাদন মৌসুমে হিমাগারে প্রতি কেজি বিদেশি জাতের সাদা আলু সংরক্ষণে ভাড়াসহ খরচ পড়েছে ১৭–১৮ টাকা। আর দেশি জাতের লাল আলু সংরক্ষণে সেই খরচ প্রতি কেজিতে ২২ টাকা। এখন হিমাগার পর্যায়ে বিদেশি জাতের সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা। আর দেশি জাতের লাল আলুর দাম কেজিপ্রতি ৪৫–৪৬ টাকা। খুচরায় আজ মঙ্গলবার বগুড়া শহরে প্রতি কেজি দেশি জাতের আলু ৫০ টাকা ও বিদেশি জাতের সাদা আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। যদিও সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দিয়েছে ৩৫-৩৬ টাকা।

এ দিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা এলাকায় আর অ্যান্ড আর পটেটো স্টোরেজ নামে এক হিমাগার পরিদর্শনে এসেও বেশি দামে আলু বিক্রির সত্যতা খুঁজে পান। এ সময় বেশি দামে আলু বিক্রি ও হিমাগারে আলু মজুতের দায়ে তিন ব্যবসায়ীকে পুলিশে সোপর্দ করে ভোক্তা অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানকালে উপস্থিত ছিলেন অতি‌রিক্ত জেলা প্রশাসক মেজবাউল ক‌রিম, ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম প্রমুখ।

হিমাগার পরিদর্শনকালে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্যবসায়ীদের সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি ও সেই মূল্যসম্বলিত ব্যানার টাঙানো, ক্রয়-বিক্রয়ের পাকা রসিদ সংরক্ষণ এবং কোথায় কার কাছে পণ্যটি বিক্রয় করা হচ্ছে, সেই তথ্য সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। পরে এ এইচ এম সফিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, সরকার বেঁধে দেওয়া দামে আলু ভোক্তা পর্যায়ে পেতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। আলুর সরবরাহব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। সেটি দূর করতে আমরা মাঠপর্যায়ে হিমাগার পরিদর্শন করছি। হিমাগার পর্যায়ে সরকার বেঁধে দেওয়া ২৭ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হলেই বাজারে সেই দাম ৩৫ টাকায় নেমে আসবে।

অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম জানান, বাজার কারসাজি ও অতিরিক্ত আলু মজুত করায় শিবগঞ্জের মোকামতলা ইউনিয়নের চাকলমা গ্রামের রিপন মিয়া, দেউলী ইউনিয়নের ভরিয়া গ্রামের শাহ আলম ও পিরব ইউনিয়নের দাইমোল্লা গ্রামের জাহিদ হাসানকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় গত উৎপাদন মৌসুমে ৯৪ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। আলু উৎপাদিত হয়েছে ২১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮০ মেট্রিক টন। সংরক্ষণে জটিলতা ও খরচের কারণে উৎপাদক পর্যায়ে অর্থাৎ কৃষকেরা ভরা মৌসুমে অনেকটা কম দামে আলু বিক্রি করে দেন। সেই আলুর মধ্যে ২ জেলার ৫৬টি হিমাগারে ৫ লাখ ৫ হাজার ২৬৮ মেট্রিক টন সংরক্ষণ করেছেন ব্যবসায়ী ও মজুতদারেরা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই জেলার হিমাগারে এবার রেকর্ড পরিমাণ আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাড়ছে আলুর দাম।

জানতে চাইলে রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে হলে বাজার পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিটি হিমাগারে সরকারের একজন করে প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া দরকার।