Thank you for trying Sticky AMP!!

মিসরে বিনিয়োগ থেকে পিছপা হবে না চীন

ডলার

মিসরে বিনিয়োগ থেকে পিছপা হবে না চীন। কিন্তু দেশটিতে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে, তাতে দেশটি চীনা অর্থায়নপুষ্ট বড় প্রকল্পের ভার বহন করতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চীন বলেছে, তারা মিসরে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ্ আল সিসিকে আশ্বস্ত করেন, চীন মিসরের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায়। বিশেষ করে আন্তমহাদেশীয় অঞ্চল ও পথ প্রকল্পে মিসরকে পাশে চায় চীন।

মিসরে চীনের চলমান যেসব প্রকল্প আছে, সেগুলো সময়মতো শেষ করতে চায় তারা। এর মধ্যে আছে রমজান শহরে ট্রেন প্রকল্প ও দেশটির নতুন প্রশাসনিক রাজধানীতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক শহর প্রকল্প। এ ছাড়া তারা চীন-মিসর সুয়েজ ইকোনমিক অ্যান্ড ট্রেড কো-অপারেশন জোন বা সুয়েজ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা অঞ্চল নির্মাণেও এগিয়ে যাবে।

সি চিন পিং গত ডিসেম্বরে বলেন, চীন অর্থায়ন, বিনিয়োগ, যৌথভাবে টিকা উৎপাদন ও মহাশূন্য নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং গত জানুয়ারিতে মিসর সফরকালে দেশটির প্রেসিডেন্ট সিসিকে একই আশ্বাস দিয়েছিলেন।

কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মিসরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশ দুটি থেকে গম আমদানি কমে গেছে। এ ছাড়া মিসরীয় মুদ্রা স্টার্লিং গত মার্চের পর অর্ধেক দর হারিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে এই সূচক।

এই সংকটে মিসরও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয়েছে। ডিসেম্বরে আইএমএফ মিসরের জন্য ৩০০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে। এ ছাড়া চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক দেবে ১০০ কোটি ডলার এবং চীন প্রভাবিত এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক দেবে ৪০ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংক দেবে ১১০ কোটি ডলার। এ ছাড়া আরব ও আফ্রিকার সংস্থাগুলোর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে মিসরের দিকে।

বিশ্লেষকেরা বলেন, মিসর সব সময় ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে। এখনো করছে। যেমন চীনের কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার পাশাপাশি তারা আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকেও অর্থ পাচ্ছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট সিসি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখছেন।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়ই মিসরকে হারাতে চায় না। ফলে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঠেকাতে বিনিয়োগ ও সাহায্য-সহযোগিতা অব্যাহত রাখছে। এই সুযোগ সিসি খুব ভালোভাবেই কাজে লাগাচ্ছেন বলে বিশ্লেষকেরা মনে করছেন।

মিসর মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। চীন যেভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকায় ক্ষমতার বিস্তার করছে, তাতে আফ্রিকার দেশ মিসরও তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে তার অঞ্চল ও পথ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য। সৌদি আরব ও মিসরের ভৌগোলিক অবস্থান কাছাকাছি, এটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ, সৌদি আরবের কাছ থেকে ইউয়ানে তেল কিনতে মরিয়া চীন।

তবে মিসরের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে তার অবস্থাও শ্রীলঙ্কার মতো হয় কি না, সেই সন্দেহ থেকেই যায় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।