Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্যাসিনোর শহর ম্যাকাও থাকবে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে

ক্যাসিনোর জন্য বিখ্যাত বা কুখ্যাত ম্যাকাও থাকবে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে

বিদায়ী বছরটা পুরোপুরি করোনা মহামারি সামলাতেই কেটেছে বিশ্বের। ধনী বা গরিব কোনো দেশই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষাবলয় গড়তে সফল হয়নি। শেষ দিকে এসে টিকার কিছু সুখবর এসেছে, তবে এই টিকা বিশ্ব অর্থনীতিতে কতটা চাঞ্চল্য ফেরাতে পারবে, তা বুঝতে হয়তো আরও কিছুটা সময় লাগবে। করোনা আসলে অদ্ভুত একটি বৈশ্বিক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যে অর্থনীতিগুলোকে অপ্রতিরোধ্য বলে মনে করা হতো, আঘাত যেন সেগুলোর ওপরই বেশি পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, জাপান ও ইউরোপের অর্থনীতি এক রকম টালমাটাল করে ফেলেছে করোনা। যদিও চীন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে আগে যতটা আশা করা হচ্ছিল ২০২১ সালে ততটা প্রবৃদ্ধি হয়তো হবে না দেশটির।

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক পূর্বাভাসে এ তথ্য উঠে এসেছে। তারা বলছে, মহামারি-পরবর্তী প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির গতি বাড়বে, তবে বড় দেশগুলোর কোনোটিই শীর্ষ দশে প্রবেশের জন্য পর্যাপ্ত অবস্থানে যেতে পারবে না। বরং তালিকায় ছোট অঞ্চলগুলোর আধিপত্য থাকবে, যার অর্ধেকই দ্বীপ অর্থনীতি। যাদের মূল অর্থনৈতিক কার্যকলাপই হলো পর্যটননির্ভর।

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী শীর্ষ প্রবৃদ্ধি হবে ম্যাকাওয়ের, ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ। চিনের পশ্চিমে পার্ল ডেল্টা নদীর পাশে গড়ে উঠেছে চিনের অধীন এই শহর। গত বছর করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউন কর্মসূচি নেওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে এই শহর। ম্যাকাওয়ের অর্থনীতি নির্ভর করে রয়েছে পর্যটনশিল্পের ওপর। এই পর্যটনশিল্পের মূলে আবার রয়েছে ক্যাসিনো ব্যবসা। করোনায় এই খাত থেকে আয় কমে হু হু করে। তবে ২০২১ সালে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াবে এর অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি হবে ৩৫ শতাংশ।

এ ছাড়া তালিকায় আছে ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ (প্রবৃদ্ধি হবে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডসের সেন্ট মার্টেন (৯ দশমিক ৩ শতাংশ), অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা (৮ শতাংশ), সেন্ট লুসিয়া (৮ শতাংশ) এবং মালদ্বীপ (৮ শতাংশ)। ২০২১ এই দ্বীপ অঞ্চলগুলো আকর্ষণীয় বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সঙ্গে প্রবৃদ্ধির প্রতিনিধিত্ব করবে।

শীর্ষ দশে থাকা প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব অর্থনৈতিক গল্প রয়েছে। যেমন গৃহযুদ্ধে বিপর্যস্ত লিবিয়ার ২০ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসবে তেলের উৎপাদন ঘিরে। এ ছাড়া করোনা সংক্রমণের বড় প্রভাব পড়েনি এই দেশে। তবে করোনায় আলবেনিয়ার অর্থনীতি ভালোই ক্ষতি দেখেছে। নিজেদের ছাড়াও ইতালির অর্থনৈতিক মন্দার কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটি। কারণ, ইতালি হলো আলবেনিয়ার মূল বাণিজ্যিক অংশীদার।

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট মনে করছে, ২০২০ সালের হারানো অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে পারবে আলবেনিয়া। দেশটির প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৮ শতাংশ। তালিকায় থাকা আরেক দেশ গায়ানা। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের উত্তর উপকূলবর্তী দেশটির ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে কারণ করোনার বড় প্রভাব তাদের ওপর পড়েনি। এ ছাড়া শীর্ষ দশে থাকা সবচেয়ে বড় দেশ পেরুর উত্থানের গল্পটা হবে একদম আলাদা। এ দেশের সুবিধা এর খনিজ সম্পদ। বিশ্বে সোনা উৎপাদনে ষষ্ঠ স্থানে এবং কপার উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে দেশটি। এ বছর খনিজ সম্পদের মূল্য বৃদ্ধির সুফল পাবে পেরু। দেশটির জন্য প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস হলো ৯ দশমিক ২ শতাংশ।

অন্যদিকে বিশ্বের বড় পাঁচ অর্থনীতির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩ দশমিক ৬ শতাংশ, চীনের ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, জাপানের ১ দশমিক ৭ শতাংশ, জার্মানির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ ও ভারতের ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্য ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, ফ্রান্স ৭ দশমিক ১ শতাংশ, ইতালি ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, ব্রাজিল ৩ শতাংশ কানাডা ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। এ বছরও সংকোচন হবে মিসর, অ্যাঙ্গোলা ও সিরিয়ার অর্থনীতির।

বাংলাদেশের জন্য যে পূর্বাভাস

দ্য ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরই প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে কর্মসংস্থান এবং জীবনযাত্রায় যে ধাক্কা লেগেছে, তা কাটিয়ে ৫ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বাংলাদেশের। করোনার আগে এক দশক ধরেই বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে হয়েছে।