Thank you for trying Sticky AMP!!

চীনের পারিবারিক ঋণ ও আয় এখন সমান

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সতর্কতা সত্ত্বেও চীনাদের সম্পত্তি কেনার প্রবণতা বাড়ছে। ছবি: রয়টার্স

চীনের পারিবারিক ঋণ এখন দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের(জিডিপি) ৬০ ভাগ ও পারিবারিক ঋণ এখন পারিবারিক আয়ের সমান হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের ক্রমবর্ধমান পারিবারিক ঋণের ব্যাপারে সতর্ক করেছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়না। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

পিপলস ব্যাংক অব চায়নার বার্ষিক আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পারিবারিক ঋণে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছে তারা। চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ‘পারিবারিক ও ভোক্তা ঋণ এবং নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর ঋণ প্রকৃত অর্থেই বেড়ে গেছে। এসব ঋণের দিকে নজর দেওয়া উচিত’। এই ঋণের রাশ টেনে ধরতে কঠোর নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে তারা।

চীনে সাধারণভাবেই ঋণ বাড়ছে। এতে চাপে পড়ছে অর্থনীতিতে। বাণিজ্য যুদ্ধের পাশাপাশি চীনের এই ক্রমবর্ধমান ঋণ দেশটির মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এত দিন ব্যাপারটা বেসরকারি কোম্পানি ও স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পারিবারিক ঋণ। চীনের ইতিহাসে ভোক্তা ঋণ খুবই সাম্প্রতিক বিষয়।

ঋণের ক্ষেত্রে মর্টগেজের শর্ত শিথিল করে চীনা সরকার এত দিন সম্পত্তিতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করেছে। অন্যদিকে ঋণ বাড়ার কারণে ভোক্তা ব্যয় বেড়েছে। রপ্তানি-নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে চীনা সরকার অভ্যন্তরীণ ভোগ নির্ভরতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকটের পর থেকে। ভোক্তা ব্যয়কেই তারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি করার চেষ্টা করেছে তারা। কিন্তু সেটা এখন গলার কাঁটা হয়ে গেছে।

তা সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে চীন এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে পিছিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের পারিবারিক ঋণ এখন মোট দেশ উৎপাদনের ৭৫ ভাগ। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের(ইইউ) চেয়ে চীনের পারিবারিক ঋণ বেশি। ইইউ-তে পারিবারিক ঋণের অনুপাত জিডিপির ৫০ ভাগ।

২০১২ সালের পর চীনের পারিবারিক ঋণ দ্বিগুণ বেড়েছে। সে জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সতর্ক বার্তা দিচ্ছে যে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের ‘তুলনায়’ চীনের পারিবারিক ঋণ বেশি। ঋণ বেড়ে যাওয়ার আরেকটি বিপদ হলো, এই ঋণ যখন গ্রাহকেরা পরিশোধ করবেন, তখন তাদের ভোগ ব্যয়ে টান পড়বে। এতে অর্থনৈতিক শ্লথগতি আরও তীব্র হতে পারে। ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচ সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘ঋণ আরও বাড়লে এই শ্লথগতির মধ্যে অর্থনীতি আরও বেশি চাপে পড়তে পারে’।

এই ঋণের বড় একটি অংশ বন্ধকি ঋণ। এর বড় একটা অংশ জমিজমা বা সম্পত্তি কেনার জন্য নেওয়া হয়েছে। এই ক্রয়ও আবার মূলত অনুমানভিত্তিক। গত বছর বন্ধকি ঋণগ্রহীতাদের ৬৬শতাংশের ইতিমধ্যে এক বা একাধিক সম্পদের মালিক। পিপলস ব্যাংক মূলত এই অনুমাননির্ভর গৃহ ঋণ এবং পরিবারের ঋণ যোগ্যতা নির্ধারণ নিয়ে সতর্ক হতে বলেছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকেরা বলছেন, শুধু বাণিজ্য যুদ্ধ নয়, আরও অনেক সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে চীনকে। আবার এটা শুধু চীনের বেলাতেই নয়, সবার বেলায়ই প্রযোজ্য।