Thank you for trying Sticky AMP!!

দেউলিয়া হতে চায় সিয়ার্স

যুক্তরাষ্ট্রের শতাব্দীপ্রাচীন খুচরা বিক্রির দোকান সিয়ার্স দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার আবেদন করেছে। মূলত ঋণের বোঝা বহন করতে না পেরে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাজনের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে তাদের এ অবস্থা হয়েছে। ফাইল ছবি: এএফপি
>

• যুক্তরাষ্ট্রের দেউলিয়া আইনে আবেদন করেছে সিয়ার্স হোল্ডিং
• ঋণের বোঝা বইতে না পেরে সিয়ার্স এই আবেদন করেছে
• সিয়ার্সের ঋণের বোঝা দাঁড়িয়েছে ৫০০ কোটি ডলার

যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রির বড় প্রতিষ্ঠান সিয়ার্স দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার আবেদন করেছে। কোম্পানিটির পুরো নাম সিয়ার্স হোল্ডিং, যারা একই সঙ্গে কেমার্টেরও মালিক। সোমবার তারা যুক্তরাষ্ট্রের দেউলিয়া আইনের ১১ ধারা অনুসারে এ আবেদন করেছে।

অনলাইন বেচাকেনার যুগে ইট–কাঠের দোকানের পক্ষে ব্যবসা করা সম্ভব নয়, এমন ধারণা অনেক দিন ধরেই বিশ্লেষকেরা পোষণ করে আসছিলেন। সিয়ার্সের এই আবেদনের মধ্য দিয়ে তার বাস্তবায়ন শুরু হলো বলে তাঁরা মনে করছেন।

সিয়ার্সের ঋণের বোঝা দাঁড়িয়েছে ৫০০ কোটি ডলার। এই বোঝা কমাতে তারা দোকান বন্ধ করার পাশাপাশি সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে সিয়ার্সের কর্মীসংখ্যা ৯০ হাজার, যদিও পাঁচ বছর আগে তাদের কর্মী ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার। স্বর্ণসময়ে তাদের ৩ হাজার দোকান ছিল।

১৯৮০–এর দশকে ওয়ালমার্ট আসার আগে সিয়ার্স যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম খুচরা বিক্রেতা ছিল।

সোমবার তাদের ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ঋণের কিস্তি জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা পরিশোধ করতে না পেরে তারা শেষমেশ দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার আবেদন করে। দেউলিয়া আইনের ১১ নম্বর ধারা মার্কিন কোম্পানিকে ঋণ পরিশোধের দায় থেকে সাময়িক মুক্তি দেয়। একই সঙ্গে তাদের ঋণ পুনর্গঠন ও সম্পদের একাংশ বিক্রি করার সুযোগ দেয়।

কোম্পানির প্রধান নির্বাহী এডি ল্যামপার্ট দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচার জন্য এর আগে ঋণ পুনর্গঠনের চেষ্টা করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা অন্য খাতে ব্যবসা নিয়ে যাওয়ার এবং সম্পদের মূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। কিছু অগ্রগতি হলেও এই পরিকল্পনা যে ফল দেবে বলে আমরা আকাঙ্ক্ষা করেছিলাম, তা আমরা পাইনি।’

দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার আবেদনের কথা ঘোষণা করে সিয়ার্স জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা ১৪২টি অলাভজনক শাখা বন্ধ করে দেবে। এর আগে তারা বলেছিল, নভেম্বরে তারা ৪৬টি দোকান বন্ধ করে দেবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিনিয়োগ–স্বল্পতার কারণে সিয়ার্সের সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে। গ্লোবাল ডেটা রিটেইলের নেইল সন্ডার্স বলেন, ১৯৮০–এর দশকে সিয়ার্স বহুমুখী ব্যবসায় ছড়িয়ে পড়লে সমস্যা শুরু হয়। এতে তাদের দক্ষতা কমে যায়। যে দক্ষতার কারণে তারা একসময় বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে উদ্ভাবনী খুচরা বিক্রেতা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সিয়ার্সের মতো একসময় সফলতার শীর্ষে থাকা স্তরীভূত খুচরা বিক্রয়কারী কোম্পানি এভাবে পড়ে যাবে, তা যেমন ভয়ংকর ব্যাপার, তেমনি কলঙ্কজনক।

তিনি মনে করেন, এই ব্র্যান্ডের ভাবমূর্তি ধসে গেছে। অর্থনৈতিক কারণেই এমনটি ঘটছে বলে তাঁর মত। অর্থনৈতিক নিয়মে ভবিষ্যতে এ ধরনের ব্যবসায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

১৮৮৬ সালে মেইল অর্ডার ক্যাটালগ ব্যবসায় আত্মপ্রকাশ করে সিয়ার্স। এরপর তারা ইট–কাঠের দোকান খোলে, যা একসময় দেশটির মূল শপিং মলে পরিণত হয়। কিন্তু ১৯৯০–এর দশকে ওয়ালমার্টের মতো স্বল্প খরচের চেইন শপ চলে এলে তারা বিপদে পড়ে।

২০১২ সালে সিয়ার্সের কানাডা শাখা মূল কোম্পানি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারা গত বছর দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার আবেদন করে।