Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে ২ শতাংশ

করোনাভাইরাসের কারণে ভারতজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণার পর বাড়ি ফিরতে শ্রমিকেরা দিল্লির গাজিয়াবাদে ভিড় জমায়। রয়টার্স ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের আক্রমণের আগে থেকেই ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল খারাপ। প্রতি প্রান্তিকেই প্রবৃদ্ধি কমছিল। এরপর করোনাভাইরাসের হানায় যে অবস্থা আরও সঙিন হবে, তা বোঝাই যাচ্ছিল। আর এবার ফিচ রেটিংস জানাল, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার নামতে পারে ২ শতাংশে, যা আদতে তিন দশক, অর্থাৎ ভারত মুক্ত অর্থনীতির জমানায় প্রবেশের পর সর্বনিম্ন।

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) অবশ্য অতটা নিরাশাজনক ছবি দেয়নি। তারা জানিয়েছে, প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে ৪ শতাংশ। অন্যদিকে করোনা মোকাবিলার জন্য শুক্রবারই ভারতের জন্য ১০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে বিশ্বব্যাংক। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এ বারের মন্দাকে ‘নজিরবিহীন’ বলেছেন। আইএমএফ তো বলেই দিয়েছে, মন্দা শুরু হয়ে গেছে। ইকোনমিক টাইমস ও কোয়ার্টজ ইন্ডিয়া সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।

ফিচ বলেছে, ভোক্তা ব্যয় কমে যাওয়ায় ভারতের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প খাত সবচেয়ে আক্রান্ত হবে। আর এরা যেহেতু মূলত ব্যাংক–বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকে, সেহেতু এই ধাক্কা ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক খাতেও ভালোভাবে অনুভূত হবে। এমনিতেই ভারতের ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক খাতের ঋণপ্রবাহ কমে গিয়েছিল, এই পরিস্থিতিতে তার ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনাও দূর হলো বলে মনে করছে ফিচ।

এদিকে করোনার সংক্রমণের পর থেকে বিশ্বসহ ভারতের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস ভারতের ৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। পূর্বাভাস কমিয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ করেছিল ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ। মুডিস জানিয়েছিল, ২০২০ পঞ্জিকা বর্ষে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার হতে পারে ২ দশমিক ৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি এখন যেভাবে পারস্পরিকভাবে নির্ভরশীল, তাতে বিশ্বের এক অংশে মন্দা এলে বাকি অংশেও তার প্রভাব পড়বে। সেই অর্থে ভারতকেও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। তবে সেই পরিস্থিতি কতটা কঠিন হতে চলেছে, তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে এখনো কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে। বস্তুত বিভিন্ন সংস্থার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসের মধ্যেও ব্যবধান অনেক। শুক্রবার আবার ফিচ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরো অঞ্চলের মন্দার ধাক্কায় চলতি বছরে সারা বিশ্বের অর্থনীতি সরাসরি ১ দশমিক ৯ শতাংশ কমতে পারে।

করোনা মোকাবিলায় প্রথম পর্যায়ে ২৫টি দেশের জন্য ১৯০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে বিশ্বব্যাংক, যার সিংহভাগই পাচ্ছে ভারত। সংক্রমণের পরীক্ষা, সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি, পরিকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতের জন্য এই তহবিল বরাদ্দ করা হয়েছে।
তবে বিশ্লেষকেরা এ–ও বলছেন যে ভারত একভাবে মন্দা এড়াতে পারলেও তার প্রবৃদ্ধির হার অনেকটাই কমে যাবে। আঙ্কটাডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে চীন ও ভারত একভাবে মন্দা এড়াতে পারলেও সারা বিশ্ব মন্দার কবলে পড়বে।