Thank you for trying Sticky AMP!!

মরুর বুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে স্যামন মাছ

ফিশ ফার্মের নির্বাহী পরিচালক বদর বিন মুবারক তাঁর খামারে উৎপাদিত একটি স্যামন ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। ছবি: এএফপি

উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের জন্য অপরিচিত নয় দুবাই। আকাশছোঁয়া সব অবকাঠামো তৈরিতে সব সময়ই তারা এগিয়ে। তবে এই মরুর দেশে শীতের দেশের অভিজাত মাছ স্যামনের চাষ একটু যেন অসম্ভবই মনে হয়। তবে সেই অসম্ভব এখন সম্ভাবনার দ্বারে। ফিশ ফার্ম নামের এক খামারে স্যামন মাছের চাষ হচ্ছে। বড় বড় চৌবাচ্চায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে তাগড়া সব জ্যান্ত স্যামন।

দুবাইয়ের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকা জেবেল আলীতে এই স্যামন মাছের খামার গড়ে উঠেছে। মরুর বুকে এই মাছ চাষের উপযোগী অবস্থা তৈরি করে নেওয়া হয়েছে।

ফিশ ফার্ম নামের এই প্রকল্পের নির্বাহী পরিচালক বদর বিন মুবারক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, চারটি বিশাল চৌবাচ্চায় স্যামন চাষের জন্য জলের প্রবাহ ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সঠিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্যাংকে দিনমান সূর্যের আলো প্রবেশের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রচণ্ড স্রোত ও অপেক্ষাকৃত কম স্রোতের ব্যবস্থা আছে, যা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল।

স্যামন শীতল পানির মাছ। আইসল্যান্ড, নরওয়ে, স্কটল্যান্ড, আলাস্কা অঞ্চলে এই মাছ বেশি দেখা যায়। তাই যে দেশে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত ওঠে, সেখানে আটলান্টিক স্যামন চাষের মতো প্রকল্প হাতে নেওয়া আসলেই চ্যালেঞ্জিং। মুবারক বলেন, স্যামনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করাই আমাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল। তবে গভীর পানিতে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে সমুদ্রের মতোই তীব্র স্রোত থাকবে। এমনকি আটলান্টিকের মহাসাগরের মতোই একই রকম তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই ধরনের চৌবাচ্চায় চাষ করা স্যামন মাছ। ছবি: এএফপি

স্কটল্যান্ড থেকে ৪০ হাজার মাছের পোনা কিনে আনে এই খামার। আইসল্যান্ড থেকে কেনা হয় কয়েক হাজার ডিম। প্রথমে মিঠা পানিতে স্যামন জন্মায়। তবে এদের বেঁচে থাকার জন্য লোনা পানির প্রয়োজন। পরে আবার ডিম পাড়ার জন্য লোনা পানি থেকে মিঠা পানিতে যেতে হয় তাদের। দুবাইয়ের এই খামারের চৌবাচ্চায় সাগরের পানি রয়েছে, যা বিশেষ প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার ও পরিশোধন করা হয়েছে। এখান থেকে মাসে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার কিলোগ্রাম স্যামন মাছ উৎপাদন হচ্ছে।

২০১৩ সালে দুবাইয়ের যুবরাজ শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুমের হাত ধরে এই প্রকল্প যাত্রা শুরু করে। এখানে জাপানি সুসি তৈরির উপযোগী মাছও চাষ হয়।

মুবারক বলেন, এই মাছ দুবাইসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন জায়গায় চলে যায়।

এমনিতে দুবাই তাঁদের চাহিদার ৯২ শতাংশ মাছই বিদেশে থেকে আমদানি করে। তবে দুবাইয়ের লক্ষ্য হলো, যে মাছ আমদানি হয়, এর কিছুটা হলেও দেশে উৎপাদন করা। তাহলে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। মূলত দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমদানি ব্যাহত হলে দুবাই যেন নিজের চাহিদা নিজেই পূরণ করতে পারে। এ ছাড়া আরেকটি লক্ষ্য হলো পরিবেশবান্ধব কিছু করা। এ লক্ষ্যে মাছের খামারটি সৌরশক্তিতে পরিচালিত হচ্ছে।