Thank you for trying Sticky AMP!!

যে জালিয়াতি ও প্রতারণা করেছিল বোয়িং

৭৩৭ ম্যাক্স মডেলের দুটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে আনা জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে মার্কিন বিচার বিভাগকে ২৫০ কোটি পরিশোধ করতে সম্মত হয়েছে কোম্পানিটি। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি চুক্তি করেছে কোম্পানিটি। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বোয়িংকে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। তারা বলছে, কোম্পানিটি ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের ‘অনিরাপদ নকশা’ সম্পর্কে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অভিহিত করেনি। কোম্পানিটি বিশ্বস্ততার বদলে মুনাফাকে বেছে নিয়েছে, যার ফলে দুটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বোয়িংয়ের এই অর্থের ৫০ কোটি ডলার পাবে দুর্ঘটনায় নিহত ৩৪৬ জনের পরিবার।

বিচার বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বোয়িং কর্মকর্তারা এমসিএএস নামে পরিচিত একটি স্বয়ংক্রিয় ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমের পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্য গোপন করেছিলেন। এর সঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটার সম্পর্ক রয়েছে। এর অর্থ হলো বিমানের পাইলটের প্রশিক্ষণের সময় ম্যানুয়ালগুলোতে সিস্টেম সম্পর্কে তথ্যের অভাব ছিল। এ ছাড়া বোয়িং প্রথম ছয় মাস দুর্ঘটনার তদন্তে কোনো সহযোগিতা করেনি।

Also Read: ইতিহাসের অন্যতম যে করপোরেট ভুল

চুক্তির শর্তাবলি অনুযায়ী, বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করার ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা যদি চুক্তির শর্তাবলি মেনে চলে তবে তিন বছর পর এই অভিযোগ উঠিয়ে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে বোয়িং অর্থ পরিশোধে রাজি হয়েছে। সেই সঙ্গে জরিমানা বাবদ ২৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার পরিশোধ করতেও সম্মত হয়েছে। তবে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, এই চুক্তি বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে তাদের মামলার নিষ্পত্তি করবে না।

২০১৮ সালের অক্টোবরে জাকার্তা বিমানবন্দর থেকে ইন্দোনেশিয়ার লায়ন এয়ারের একটি ফ্লাইট আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আছড়ে পড়ে জাভা সাগরে। এর সাড়ে চার মাস পর ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান আকাশে উড়েছিল কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির উদ্দেশে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই আদ্দিস আবাবা থেকে ৬২ কিলোমিটার দূরে এক শহরের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে।

বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮–এর এই দুটি ফ্লাইটের সব আরোহী মারা যান। দুটি বিমানই উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়। পাঁচ মাসের কম সময়ের মধ্যে দুটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৩৪৬ জন আরোহী নিহত হওয়ার পর বিশ্বের অধিকাংশ এয়ারলাইনস ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এ উড়োজাহাজ ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেয়। একপর্যায়ে বিমান নিরাপত্তার সনদ দেওয়া ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) এক জরুরি আদেশে বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিশ্বব্যাপী এ মডেলের ৩৭১টি বিমান গ্রাউন্ড করা হয়।

পরে গত বছর প্রায় ২০ মাস বসিয়ে রাখার পর আবারও আকাশে ওড়ে এই মডেলের উড়োজাহাজ। এই উড়োজাহাজের জন্য বোয়িংকে যে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাতে বলা যায়, বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম করপোরেট ভুল হলো বোয়িংয়ের এই ৭৩৭ ম্যাক্স।