Thank you for trying Sticky AMP!!

ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি চুক্তি নবায়নে ঢাকার উদ্যোগ চায় ছয় ব্যবসায়ী সংগঠন

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধরত ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণসাগরের মাধ্যমে নিরাপদে শস্য রপ্তানির চুক্তি, যা ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ (বিএসজিআই) হিসেবে পরিচিত, তার মেয়াদ ১৭ জুলাই শেষ হচ্ছে। বাংলাদেশের ছয়টি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে এই চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে জোরালোভাবে চেষ্টা চালাতে দেশের সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছে।

আজ গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো বলেছে, বিএসজিআই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাদ্যনিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লাইফলাইন। এই চুক্তি নবায়ন না হলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যে ঝুঁকির মুখোমুখি হবে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এই সংগঠনগুলো।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মো. সামির সাত্তার, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকার (এমসিসিআই) সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি নাসের এজাজ বিজয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিএসজিআই এখন পর্যন্ত তিনটি ইউক্রেনীয় বন্দর থেকে তিনটি মহাদেশের ৪৫টি দেশে ৩ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টনের বেশি খাদ্যসামগ্রী রপ্তানির সুযোগ তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে স্বল্পোন্নত অর্থনীতিতে রপ্তানি করা গমের পরিমাণ যুদ্ধের আগের তুলনায় অনেকাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই চুক্তির প্রত্যক্ষ ফল হিসেবে রাশিয়া থেকে খাদ্য ও সার রপ্তানির বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের মার্চ থেকে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম ২২ শতাংশ কমেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বিএসজিআই ব্যবস্থার আওতায় ইউক্রেন থেকে ২০২১ সালের মতো একই পরিমাণ, অর্থাৎ সাত লাখ টন গম কিনেছে। এই শস্য আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনে তাদের মানবিক কার্যক্রমে সহায়তা করছে।

ছয় সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেন ও রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির অব্যাহত সুবিধা সে কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যনিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এই চুক্তি নবায়ন না হলে তা বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জন্য খাদ্যের প্রাপ্যতা এবং ক্রয়ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন করবে। এটা হবে এমন এক পরিস্থিতি যার সত্যিকার অর্থে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সবার ওপরে একটি মানবিক পরিণতি থাকবে।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর দেশটি থেকে শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিভিন্ন দেশে খাদ্যসংকট তৈরির শঙ্কা দেখা দিলে গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের তিনটি বন্দর দিয়ে নিরাপদে শস্য রপ্তানিতে দুই দেশের মধ্যে বিএসজিআই চুক্তি হয়। চুক্তির পর গত ১ আগস্ট ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি শুরু হয়। এর আগে কয়েক দফায় এই চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

জানা যায়, কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরুদ্ধ করে রেখেছে রাশিয়া। চুক্তি নবায়ন না হওয়ার অর্থ ইউক্রেনের বন্দর থেকে কোনো শস্যবাহী জাহাজ বিশ্বের কোনো দেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে না রাশিয়া। আবার চুক্তি শেষ হয়ে গেলে ঝুঁকি নিয়ে কোনো বাণিজ্যিক জাহাজও ইউক্রেন থেকে পণ্য পরিবহনে রাজি হবে না। কৃষ্ণসাগর এড়িয়ে সাগরপথে বিকল্প কোনো রুট নেই ইউক্রেনের।