Thank you for trying Sticky AMP!!

এপ্রিলে ‘অপ্রত্যাশিতভাবে’ কমেছে চীনের শিল্পোৎপাদন

চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের এক সাইকেল কারখানায় কাজ করছেন একজন শ্রমিক।

এপ্রিল মাসে চীনের কারখানাগুলোয় উৎপাদন কমেছে। গত মাসে পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্সের (পিএমআই) মান নেমে এসেছে ৪৯ দশমিক ২–এ। বিষয়টি অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই ঘটেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে।

পিএমআই সূচকের মান ৫০–এর নিচে থাকলে ধরা হয় যে সেই খাত সংকুচিত হয়েছে। আর এই সূচক ৫০–এর ওপরে থাকলে ধরা হয়, সেই খাত সম্প্রসারিত হয়েছে।  
গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশটির উৎপাদন গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে বেড়েছিল। মার্চ মাসেও এটি ছিল ইতিবাচক ধারায়। বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ইতিবাচক। সে জন্য বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল, দ্বিতীয় প্রান্তিকেও চীনের অর্থনীতি ইতিবাচক ধারায় থাকবে। তাই এপ্রিল মাসের এই পরিসংখ্যান একভাবে অপ্রত্যাশিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

গত বছরের শেষ দিকে গণবিক্ষোভের মুখে কোভিডজনিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করে নেয় চীন। তখন থেকেই দেশটির অর্থনীতির পালে হাওয়া লাগে। কিন্তু বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথগতি ও দেশটির সম্পত্তির বাজারের অভ্যন্তরীণ নানা দুর্বলতার কারণে এপ্রিল মাসে দেশটির উৎপাদন কমেছে বলে রয়টার্সের সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে।
অথচ এর আগে রয়টার্সেরই এক জরিপে অর্থনীতিবিদেরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, এপ্রিল মাসে চীনের পিএমআই মান ৫১ দশমিক ৪–এ উঠতে পারে। কিন্তু বাস্তবে গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর এই প্রথম পিএমআই সংকুচিত হলো।

চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের তথ্যানুসারে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস ছিল, প্রবৃদ্ধি হবে ৪ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকেও তা একই ধারায় থাকবে বলে ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু বৈশ্বিক চাহিদা কমে যাওয়া, দেশটির বাজারে মূল্যহ্রাস ও ব্যাংকে সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়তে থাকায় মানুষের চাহিদা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

চীনের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক অর্থাৎ দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো বলেছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার টেকসই করতে চাহিদা ফিরিয়ে আনা ও বৃদ্ধি করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাদের সতর্কবার্তা, এখন যে উন্নতি বা প্রথম প্রান্তিকে যে উন্নতি হয়েছে, তা মূলত সঞ্জীবনী প্রকৃতির, অর্থাৎ গত বছরের শ্লথগতির কারণে এবার বেড়েছে, কিন্তু তার গতি কম ও চাহিদাও অপর্যাপ্ত।
এদিকে দেশটির উৎপাদন খাত সংকুচিত হলেও অন্যান্য খাত এখনো প্রবৃদ্ধির ধারায় আছে, যদিও মার্চ মাসের তুলনায় তার হার কমেছে। উৎপাদন–বহির্ভূত খাতের পিএমআই সূচকের মান মার্চ মাসে ছিল ৫৮ দশমিক ২; তবে এপ্রিল মাসে তা ৫৬ দশমিক ৪–এ নেমে এসেছে।

এপ্রিল মাসের তথ্যে দেখা গেছে, মার্চ মাসে ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এর কারণ হচ্ছে, ভিত্তি সময় অর্থাৎ গত বছরের একই মাসে তা ছিল অনেক কম।
এদিকে চলতি অর্থবছরে (২০২৩) মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ‘প্রায় ৫ শতাংশ’ প্রবৃদ্ধির আনুষ্ঠানিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চীন। সিএনএন জানিয়েছে, চীনের আইনসভা ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) বার্ষিক অধিবেশনের উদ্বোধনের সময় গত মার্চ মাসে দেশটির বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লি কেছিয়াং এ তথ্য প্রকাশ করেন।