Thank you for trying Sticky AMP!!

আরও তিন চীনা কোম্পানির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল যুক্তরাষ্ট্র

এবার আরও তিন চীনা কোম্পানির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, উইঘুর সম্প্রদায়ের মানুষদের জোরপূর্বক শ্রমের মাধ্যমে যেসব পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে, সেসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করবে না।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। কোম্পানি তিনটি হলো জিনজিয়াং তিয়ানমিয়ান ফাউন্ডেশন টেক্সটাইল কোম্পানি লিমিটেড, জিনজিয়াং তিয়ানসান উল টেক্সটাইল কোম্পানি লিমিটেড ও জিনজিয়ান ঝোংতাই গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড। যুক্তরাষ্ট্রের উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্টের তালিকায় এসব কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে দেশটির সরকারি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এর ফলে এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়াল ২৭।

ইউএস ডিপার্টেমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিবৃতিতে বলেছে, উইঘুর সম্প্রদায়সহ অন্যান্য নিপীড়িত সম্প্রদায়ের মানুষকে উৎপাদনপ্রক্রিয়ায় জড়িত করার কারণে এ তিন কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটিস বিভাগের সচিব আলেহান্দ্রো মায়োকাস বলেন, ‘যেসব কোম্পানি জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহার করে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করে মুনাফা বানায়, আমরা তাদের সহ্য করি না।’

যুক্তরাষ্ট্রে বলেছে, জিনজিয়াং সরকারের সঙ্গে কাজ করত এসব কোম্পানি। এরা উইঘুর, কাজাখ, কিরগিজসহ অন্যান্য নিপীড়িত সম্প্রদায়ের মানুষকে কাজে নিয়োগ দেয়, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যায় ও তাঁদের শ্রম ব্যবহার করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, জিনজিয়াং তিয়ানমিয়ান ফাউন্ডেশন টেক্সটাইল কোম্পানি সুতাসহ অন্যান্য টেক্সটাইল পণ্য উৎপাদন করে। জিনজিয়াং ঝংতাই গ্রুপ কোম্পানি পিভিসি বা পলিভিনাইল ক্লোরাইড, রাসায়নিক ও ভবন নির্মাণসামগ্রী উৎপাদন ও বিক্রি করে। এ ছাড়া জিনজিয়াং তিয়ানশান উল টেক্সটাইল কোম্পানি অন্যান্য পোশাকের সঙ্গে উলের পোশাক বিক্রি করে।

২০২১ সালে প্রণীত যুক্তরাষ্ট্রের উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট জিনজিয়াংয়ে উৎপাদিত পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে, যদি না সংশ্লিষ্ট কোম্পানি প্রমাণ করতে পারে যে এসব পণ্য বাধ্যতামূলক বা জোরপূর্বক শ্রমে উৎপাদিত নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, চীন পশ্চিম জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য শ্রমশিবির নির্মাণ করেছে, যদিও বেইজিং বাধ্যতামূলক শ্রমের অভিযোগ অস্বীকার করে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার জিনজিয়াংয়ের সরবরাহ ব্যবস্থাবিষয়ক ব্যবসায়িক পরামর্শ হালনাগাদ করেছে। সেখানে তারা চীনের ‘জিনজিয়াং প্রদেশে চলমান গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং সেখানে বাধ্যতামূলক শ্রমের ব্যাপক ব্যবহারের তথ্য-প্রমাণ সম্পর্কে’ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

ব্যবসায়ীরা যেন সবকিছু ভালোভাবে খতিয়ে দেখেন, সে আহ্বানও ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

উইঘুর সম্প্রদায় আবার যুক্তরাষ্ট্রের এই আইন প্রয়োগের ধীরগতি নিয়ে চিন্তিত। এ আইন প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত সিনেটর মার্কো রুবিও বাইডেন প্রশাসনকে এই তালিকায় আরও কোম্পানি যুক্ত করার তাগিদ দিয়েছেন।

মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাস্তবে হাজার হাজার চীনভিত্তিক কোম্পানি দাস শ্রমের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এসব কোম্পানিকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে দেরি হওয়ার কারণে যারা এই দাস শ্রম কাজে লাগাচ্ছে, তারা লাভবান হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র গত আগস্ট মাসে এই তালিকায় যুক্ত হওয়া আরও দুটি কোম্পানির পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।