Thank you for trying Sticky AMP!!

রুশ ও মার্কিন ব্যাংকের যোগাযোগ বন্ধ, শস্য ও সারের দাম পাচ্ছে না মস্কো

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক জে পি মর্গান রাশিয়ার শস্য ও সারের দাম পরিশোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রাশিয়ার কৃষি ব্যাংককে এই অর্থ পরিশোধ করার কথা ছিল জে পি মর্গানের। এ বাস্তবতায় মস্কো ওয়াশিংটনের কাছে অঙ্গীকার নয়, উদ্যোগ দাবি করেছে। অর্থাৎ মস্কোর দাবি, ওয়াশিংটন এ অর্থ ছাড় করতে ব্যবস্থা নিক।

ওয়াশিংটনের নিশ্চয়তা পেয়ে জে পি মর্গান কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারে বিক্রি হওয়া রাশিয়ার শস্য ও সারের দাম পরিশোধের ব্যবস্থা করছে। তবে মস্কোর দাবি, জে পি মর্গান এ সপ্তাহে সেই সহযোগিতা বন্ধ করেছে। খবর রয়টার্সের।
রাশিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, রাশিয়ান অ্যাগ্রিকালচারাল ব্যাংক ও জে পি মর্গানের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংযোগ ২ আগস্ট বন্ধ হয়ে গেছে।
তবে এ বিষয়ে জাতিসংঘ, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জে পি মর্গান মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

রাশিয়া এক বছর ধরে কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু গত ১৭ জুলাই রাশিয়া এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে। রাশিয়া বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেছে; তারা বলছে, এসব দাবি মানা না হলে তারা আর এ চুক্তিতে ফিরবে না।
কৃষ্ণসাগর চুক্তির অংশ হিসেবে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বিশ্ববাজারে রাশিয়ার শস্য ও সার রপ্তানিতে সহায়তা করতে রাজি হয়েছিলেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সেটা করা হলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তি নবায়ন করব।’
রাশিয়ার দাবিগুলোর অন্যতম হচ্ছে রাশিয়ান অ্যাগ্রিকালচার ব্যাংককে সুইফট ব্যবস্থার সঙ্গে পুনরায় সংযুক্ত করা। ইউক্রেনে হামলার জেরে ২০২২ সালের জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
মারিয়া জাখারোভা আরও বলেন, ‘পশ্চিমা দেশ ও জাতিসংঘ সুইফটের কার্যকর বিকল্প হিসেবে নিজেদের হাজির করার চেষ্টা করেছে।’

ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালানোর পর পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর অনেক ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও খাদ্য ও সার নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে ছিল। কিন্তু মস্কো বলছে, নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও খাদ্য ও সার বিক্রির অর্থ পরিশোধ, উপকরণ ও বিমার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে; তাতে রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞাবিষয়ক কর্মকর্তা জেমস ও’ব্রায়েন শুক্রবার রয়টার্সকে বলেন, রাশিয়া কী চাইছে, সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে, অর্থাৎ তারা ঠিক কী পরিমাণ খাদ্য ও সার রপ্তানি করতে চায়, তা বলতে হবে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা এমন বেশ কিছু দাবি পেয়েছি, তবে এর বেশির ভাগই হলো এ রকম যে রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি খাত থেকে সহায়তা পাচ্ছে না। আমরা পরিষ্কার জানিয়েছি, এ বিষয়ে সহায়তা করতে আমরা প্রস্তুত।’
জেমস ও’ব্রায়েন আরও বলেন, রাশিয়া এখন বিপুল পরিমাণে শস্য রপ্তানি করছে। মাপকাঠি যদি হয় বিশ্বের সব খাদ্য চাহিদা পূরণ করা, তাহলে রাশিয়ার অভিযোগ খুবই নগণ্য। কারণ, এ ব্যবস্থা বেশ ভালোভাবে কাজ করছে।

রাশিয়ার শস্য ইউনিয়নের বরাতে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ মৌসুমে রাশিয়া প্রায় ৫৫ মিলিয়ন বা ৫ কোটি ৫০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করবে; ২০২২-২৩ মৌসুমে তারা রেকর্ড ৫ কোটি ৭০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করেছিল। অর্থাৎ সেই তুলনায় এ মৌসুমে রপ্তানি খুব একটা কমছে না।
এর বিপরীতে ইউক্রেন ২০২২-২৩ মৌসুমে প্রায় ৪ কোটি ৯০ লাখ টন খাদ্যশস্য রপ্তানি করেছে। কৃষ্ণসাগর চুক্তির অধীন রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ টন। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, কৃষ্ণসাগর চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে রাশিয়া খাদ্যকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যদিও এ চুক্তির কারণে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমেছিল। এখানেই শেষ নয়, রাশিয়া ইউক্রেনের শস্যগুদামেও হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেনের খাদ্যশস্য দরিদ্র দেশগুলোতে তেমন একটা যাচ্ছে না। জাতিসংঘ বলছে, এ চুক্তিতে সবাই লাভবান হয়েছে। কারণ, চুক্তির পর বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম ২৩ শতাংশ কমেছে।