Thank you for trying Sticky AMP!!

ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)

ঋণদাতা অ্যাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সংস্থা গড়তে চায় ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ভারতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে ঋণ দেওয়া-নেওয়ার অবৈধ অ্যাপ। অনলাইনভিত্তিক এসব অ্যাপের রাশ টানতে এবার ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) ডিজিটাল ইন্ডিয়া ট্রাস্ট এজেন্সি (ডিআইজিআইটিএ বা ডিজিটা) গঠনের চিন্তা করছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের সংবাদে বলা হয়েছে, অনুমোদিত অ্যাপগুলোতে ডিজিটাল ভেরিফিকেশন চিহ্ন বা সত্যতা নিশ্চিতের চিহ্ন থাকবে। যেসব অ্যাপে এই চিহ্ন থাকবে না, সেগুলো অননুমোদিত হিসেবে ধরে নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। ভারতের ডিজিটাল জগতে আর্থিক অপরাধ রুখতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়ে থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ডিজিটার কাজ হবে কমপ্লায়েন্স বা নিয়মকানুনের মান্যতা নিশ্চিত করতে এসব অ্যাপের ঠিকুজি সন্ধান করা, অর্থাৎ সেগুলো বৈধ কি না, তা খতিয়ে দেখা। এসব ঋণদাতা অ্যাপগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করে ডিজিটা জনসমক্ষে তালিকা প্রকাশ করবে যাতে মানুষ বুঝতে পারে, কোন অ্যাপ বৈধ আর কোনটি অবৈধ।

সংবাদে বলা হয়েছে, অ্যাপগুলোর এই সত্যতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হলে ডিজিটাল ঋণের জগতে স্বচ্ছতা আসবে। ভারতে যেভাবে ডিজিটাল ঋণ দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এটি জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে আরবিআই ইতিমধ্যে ৪৪২টি ডিজিটাল ঋণদানকারী অ্যাপের তালিকা গুগলের সাদা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে দেশটির তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে দিয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত গুগলের অ্যাপ স্টোর থেকে ২ হাজার ২০০টি ডিজিটাল অ্যাপ সরিয়ে নেওয়া হয়। জালিয়াতি বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গুগল সম্প্রতি নতুন নীতি বাস্তবায়ন শুরু করেছে। সেটা হলো, আরবিআই-নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান থেকে যেসব অ্যাপ প্রকাশিত হবে সেগুলো অথবা এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতেই অ্যাপ প্লে স্টোরে তোলা হবে। আরবিআই ও ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধের ভিত্তিতে গুগল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বেনামি বিভিন্ন ঋণদাতা অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়েছেন। এমনকি ঋণ পরিশোধের সময় শেষ হওয়ার আগেই চাপ দিতে থাকে এসব অ্যাপের এজেন্টরা। বিশেষ করে নারীদের লক্ষ্যবস্তু করে থাকে এসব অ্যাপ। তাদের কথামতো না চললে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে নারীদের নগ্ন ছবি তৈরি করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এ রকম আরও নানা কায়দায় মানুষকে ব্ল্যাকমেল করা হয় বলে অভিযোগ আছে।

ভারতের সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলেন, মহামারির সময় যখন মানুষের আয়রোজগার কমে গিয়েছিল, তখন কিছু চীনা সংস্থা এমন ফাঁদ পেতেছিল। এ সংস্থাগুলো মানুষকে ঋণ দেওয়ার নাম করে তাঁদের মুঠোফোনে সংরক্ষণ করা সব ফোন নম্বর চুরি করে। তারপর ঋণ পরিশোধে কোনো সমস্যার কথা জানানো হলে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। তাঁরা মনে করেন, পুলিশের উচিত এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধ করতে করতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া। পাশাপাশি মানুষকেও সতর্ক হতে হবে, তা না হলে এই প্রতারণার কারবার ঠেকানো যাবে না।

এ বাস্তবতায় আরবিআই এবার এসব অ্যাপ নিয়ন্ত্রণে বিশেষায়িত সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে।