Thank you for trying Sticky AMP!!

মার্কিন কংগ্রেস

আংশিক শাটডাউন এড়াতে ঐকমত্যে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস

মার্কিন কংগ্রেসের নেতারা আংশিক শাটডাউন এড়াতে কেন্দ্রীয় সরকারের ২০২৪ সালের মোট ব্যয়ের বিষয়ে ঐকমত্যে এসেছেন।

রিপাবলিকান হাউস স্পিকার মাইক জনসন বলেছেন, চলতি বছরে মার্কিন সরকার মোট ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করবে। এর মধ্যে সামরিক খাতে ব্যয় হবে ৮৮ হাজার ৬০০ কোটি ডলার আর অন্যান্য খাতে ব্যয় হবে ৭০ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। যদিও এসব সংখ্যায় কিছুটা অসামঞ্জস্য এখনো রয়ে গেছে। এই ঐকমত্যের খসড়া এখন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সিনেট সদস্যদের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।

বিবিসির সংবাদে বলা হয়েছে, এখন সিনেট ও হাউস সদস্যদের হাতে দুই সপ্তাহের কম সময় আছে; এর মধ্যে তাঁদের তহবিল জোগান চূড়ান্ত করা ও কিছু কিছু কেন্দ্রীয় সেবা বন্ধের বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে।

ডেমোক্র্যাট সদস্য হাকিম জেফরি এবং চাক শুমার বলেছেন, প্রতিরক্ষা ব্যতীত অন্যান্য খাতে ব্যয়ের জন্য ৭৭ হাজার ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।

স্পিকার মাইক জনসন সহকর্মীদের উদ্দেশে এক চিঠিতে লিখেছেন, প্রতিরক্ষার বাইরে অন্যান্য খাতে ব্যয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে সবাই খুশি হবেন না; আবার অনেকেই যতটা ব্যয় সংকোচন করতে চেয়েছিলেন, অতটা ব্যয় সংকোচন হবে না।

রিপাবলিকান দলের সদস্যরা বাজেটে কিছু কাটছাঁট করে সামগ্রিকভাবে সরকারি ব্যয়ে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে চাইছেন। তবে রোববারের এই ঐকমত্যে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় সংকোচনের বিধান নেই, ডেমোক্র্যাটরা যা চেয়েছিলেন। এদিকে রিপাবলিকানদের মধ্যকার অধিকতর রক্ষণশীল গোষ্ঠী ‘দ্য হাউস ফ্রিডম ককাস’ এই ঐকমত্যকে পূর্ণাঙ্গ ব্যর্থতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

এক বিবৃতিতে হাকিম জেফরি এবং চাক শুমার বলেন, এই ঐকমত্যের মধ্য দিয়ে সরকারের পথ পরিষ্কার হয়ে গেল। এখন তারা আগামী কয়েক সপ্তাহে মার্কিন জনগণের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যয় করতে পারবে এবং সেই সঙ্গে সরকারের পক্ষে শাটডাউন এড়ানো সম্ভব হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে অপ্রয়োজনীয় শাটডাউন এড়ানো এবং জাতীয় অগ্রাধিকার সুরক্ষিত করা সম্ভব হবে।

ছুটি শেষে আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা আবারও আলোচনায় বসবেন—যাতায়াত, গৃহায়ণ ও জ্বালানি খাতের জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত করতে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পাবেন তাঁরা।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ৩৪ ট্রিলিয়ন বা ৩৪ লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন থেকে ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলারে উঠতে খুব একটা সময় নেয়নি। গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশটির জাতীয় ঋণ ৩৩ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করে; এর ৪ মাসের মধ্যে তা ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার স্পর্শ করল। একদিকে দেশটির ফেডারেল রাজস্ব কমছে, অন্যদিকে ব্যয় বাড়ছে—উভয় কারণে দেশটির জাতীয় ঋণ দ্রুত বাড়ছে।

গত বছরও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণের সীমা বাড়ানো নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের সদস্যদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়। শেষ সময় ছিল ৫ জুন, তার মধ্যে জাতীয় ঋণ নিয়ে ঐকমত্য না হলে খেলাপি হয়ে যেত যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত তার আগেই সাময়িকভাবে জাতীয় ঋণসীমা স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়।

এবারও আইনপ্রণেতারা আংশিক শাটডাউন এড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যয়ের বিষয়ে ঐকমত্যে এলেন। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন যেভাবে একই সঙ্গে দুটি যুদ্ধে, অর্থাৎ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেন ও ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে, তাতে দেশটির ঋণের বোঝা আরও বেড়ে যাবে বলেই শঙ্কা।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ইউক্রেনকে ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার সামরিক সহায়তা দিয়েছে। তাদের আরও ৫০ বিলিয়ন বা ৫ হাজার কোটি ডলার সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি পাইপলাইনে আছে।