Thank you for trying Sticky AMP!!

নতুন বছরে কর্মক্ষেত্রে যে যে পরিবর্তন আসছে

হোম অফিস করোনাকালের এক বড় বাস্তবতা

এক বিরল বর্ষ পেরিয়ে নতুন বছরে মানবজাতি। বিশ্বজুড়ে বহু মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে দিয়েছে করোনাভাইরাস। নতুন স্বাভাবিকে (নিউ নরমাল) বাঁচতে শিখছি আমরা। কর্মজগতের ধারণা ও সংজ্ঞাও যেন বদলে গেছে। নতুন স্বাভাবিক জীবনে একদল মানুষের কাছে বাড়িটাই পরিণত হয়েছে অফিস, স্কুল-কলেজসহ সবকিছু। গেল ‘অপয়া’ বছরটি অতিক্রম করে আমরা নতুন কিছুর জন্য প্রস্তুত। কিন্তু মহামারির এই বছরের কিছু অংশ, কিছু পরিবর্তন ও অভ্যাস নতুন বছরেও সঙ্গী হবে; এটা বলাই যায়। বিশেষ করে যাপিত জীবনে আমরা কীভাবে কাজ করব, অফিস কীভাবে চলবে, সেটার ওপর এর বড় প্রভাব থাকবে। নতুন বছরে যে যে পরিবর্তন আমাদের সঙ্গী করে নিতে হবে, তার একটি ধারণা দিয়েছেন সিএনএনের ক্যাথরিন ভ্যাসেল।

দ্য এফ ওয়ার্ড: ফ্লেক্সিবিলিটি

নতুন বছরে সপ্তাহের কয়েকটা দিন অফিসে কাজ করতে চাইবেন অনেকেই। এরপর সপ্তাহের বাকিটা সময় বাসায় থেকে অফিস করতে চাইবেন। নতুন স্বাভাবিক জীবনের কারণে কর্মীরা কোথায় থেকে অফিস করতে চান, সে ব্যাপারে কোম্পানিগুলো অপেক্ষাকৃত কম কঠোর থাকবে।

ছবি: সংগৃহীত

দ্য অফিস মেকওভার

উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মী অফিসের বাইরে থেকে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। তাই কোম্পানিগুলোও অফিসের পুনর্গঠন করবে। আর তাই কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকের বসার জায়গা নিয়ে অতটা না ভেবে; বরং সমন্বয়ের পরিবেশ তৈরির দিকেই মনোযোগী হবে অফিসগুলো।

গোয়িং বিয়ন্ড মেডিকেল বেনিফিট

ভবিষ্যতে অনেক নতুন কিছু নিয়ে ভাবতে হবে অফিসগুলোকে। কারণ, কর্মীর পুরো পরিবারের জন্য সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদানের বিষয়টি নিয়েও ভাববে কোম্পানিগুলো। যেমন ভ্রমণ সহায়তা, আর্থিক পরিকল্পনায় সাহায্য এবং বর্ধিত শিশু সুরক্ষাসুবিধা। কারণ, কর্মীর সুরক্ষাই কোম্পানির মূল লক্ষ্য।

কোভিডের টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক হতে পারে?

টিকা বাজারে আসছে। সুরক্ষার জন্য চাকরিজীবীদের কোভিড-১৯ টিকা নেওয়া লাগতে পারে। ব্যবসা খাতের শীর্ষ ব্যক্তিরা টিকা সবার পাওয়ার পক্ষে। কেননা এটা না হলে জটিলতাও থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য ইকুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশন’ বলছে, কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের টিকা নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে। কিন্তু তাদের অবশ্যই এটি করানোর আগে কর্মক্ষেত্রে আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। এক জরিপে দেখা গেছে, বড় বড় কোম্পানিগুলোর ৭০ শতাংশ সিইও চান, সব কর্মী টিকা পাক।

মহামারিতে নারী কর্মীদেরই বেশি ক্ষতি

করোনা মহামারিতে চাকরি হারিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। চাকরি হারাদের ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে এগিয়ে বা ক্ষতির শিকার নারীরাই বেশি। মহামারিতে নারীরাই বেশি সংখ্যায় চাকরি হারিয়েছেন। গত বছরের নভেম্বরের এক হিসাব বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে যতসংখ্যক নারী চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন, মহামারি শুরুর পর সংখ্যাটি কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩ লাখ। এ সংখ্যা পুরুষদের তুলনায় ৪৬ লাখ কম।

তবে কর্মক্ষেত্রে নারীর জন্য কিছু সুখবরও আছে। ২০২০ স্পেনসার স্টুয়ার্ট বোর্ড ইনডেক্স বলছে, এ বছর নতুন পরিচালক হওয়াদের মধ্যে ৪৭ শতাংশই নারী, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ হার।

ব্যবসার ধরনে পরিবর্তন
ব্যবসা চলবে একুট নতুনভাবে। সাধারণ রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে বার্গার কিং কিংবা ম্যাকডোনাল্ড’সের মতো বিখ্যাত চেইন স্টোরগুলোও এখন বাইরের গ্রাহকদের দিকে বেশি মনোযোগী। রেস্তোরাঁয় বসে অর্ডার নেওয়ার চেয়ে অনলাইনে অর্ডার নিতেই এখন তারা বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই বছরে এটা অব্যাহত থাকবে।

ছবি: সংগৃহীত

আমরা কী পেলাম

২০২০ সালটি বেশ বাজেই কেটেছে বিশ্বের। কিন্তু কঠিন এ সময়ে আমরা সবাই কিছু শিক্ষাও নিয়েছি। আমি কিংবা আমরা কীভাবে কাজ করি। সকাল ৯-৫টার অফিস ধারণাটাও পাল্টে যাচ্ছে।

ইউওয়ার্কের সিইও সন্দীপ মাথরানী বলেছেন, ‘কোভিডের কারণে অফিসে কাজের ধরনটাও বদলে গেছে। ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্র কেমন হবে, তার ধারণাও আমরা পেয়েছি। কর্মীদের কাজ করানোর ক্ষেত্রে অফিসের বসেরা নতুন করে ভাবছেন। জোর করে অনেক কোম্পানি কর্মীদের ২০২০-এ হোম অফিসে পাঠিয়েছে। ২০২১-এ হোম অফিসে থেকেই উৎপাদন, নতুন ভাবনা, উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়ার দিকে যেতে হবে।’