Thank you for trying Sticky AMP!!

হাইকোর্ট ভবন

২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ও সার্কুলার অনুসারে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। পৃথক চারটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রায় দেন।

রায় পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রিট আবেদনকারী ২৮৫ প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রিট আবেদনকারীদের মধ্যে শারীরিক, দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক্‌প্রতিবন্ধী রয়েছেন, যাঁরা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে ২০১৮ ও ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি দেয়। ২০১৮ ও ২০২০ সালে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী কোটায় নিয়োগের জন্য রিট আবেদনকারী প্রার্থীরা আবেদন করেন। লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন ও পরে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তবে ওই নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হলে সেখানে প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে দেখা যায়। এ অবস্থায় ২০২২ ও ২০২৩ সালে পৃথক চারটি রিট করেন প্রতিবন্ধী প্রার্থীরা। রিটের প্রাথমিক শুনানি হাইকোর্ট রুল দেন।

আদালতে রিটকারী প্রার্থীরা

রুলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ২০১৮ ও ২০২০ সালের নিয়োগ পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ না দেওয়া কেন অবৈধ হবে না এবং ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কোটা পূরণ করে রিটকারী প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল অ্যাসলিউট (রুল যথাযথ) ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুনতাসীর উদ্দিন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, ২০২০ ও ২০২২ সালে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়, যেখানে কোনো প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। সংস্থাপন মন্ত্রণালয় (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির সহকারী শিক্ষক পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দ্বারা পূরণ করার বিধান রয়েছে। ২০১৯ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালার ৮–এর ২ উপবিধি অনুযায়ী মহিলা, পোষ্য ও পুরুষ কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আপাতত বলবৎ অন্য কোনো বিধি বা সরকারি সিদ্ধান্তে কোনো বিশেষ শ্রেণির কোটা নির্ধারিত থাকলে ওই কোটাসংক্রান্ত বিধান অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে। ২০১৩ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের ধারা ৩৫–এর ১ অনুসারে আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী উপযোগী কোনো কর্মে নিযুক্ত হতে কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্য করা বা তাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।

রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ জানান, আইন ও বিধি অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার বৈধ অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তা প্রতিপালন করা হয়নি, যা তাঁদের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। মূলত এসব যুক্তিতে রিটগুলো করা হয়। রিট আবেদনকারী ২৮৫ জন প্রতিবন্ধী প্রার্থীকে ৯০ দিনের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন।

তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসীর উদ্দিন।

Also Read: শিক্ষাক্রমের মূল্যায়নে প্রয়োজন সাপেক্ষে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে: নতুন শিক্ষামন্ত্রী

Also Read: ওয়ান ব্যাংকে স্নাতক পাসে চাকরি, কর্মস্থল ঢাকা

Also Read: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে চাকরি, আবাসনসহ বেতন ১ লাখ ৬৫ হাজার, আবেদন করুন দ্রুত