Thank you for trying Sticky AMP!!

২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মদিন মঙ্গলবার

প্রায় দেড় শ বছরের পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর থেকেই দিনটিকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আগামীকাল মঙ্গলবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

করোনাভাইরাসের কারণে এবার সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে উদ্‌যাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানসূচি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনা এবং শহীদ মিনার চত্বর থেকে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের উদ্বোধন করা হবে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য নবনির্মিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল উদ্বোধন অনুষ্ঠান। এরপর ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলোচনা সভা ও সংগীত বিভাগের আয়োজনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
এ ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভাসহ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সংগঠন নানা আয়োজনে দিবসটি উদ্‌যাপন করবে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদের আওতায় ৩৬টি বিভাগ ও দুটি ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীদের সেমিস্টার পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে শিক্ষার্থী প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার এবং শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৭০০ জন। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় সম্প্রসারণ করে নির্মাণ হচ্ছে নতুন ক্যাম্পাস। এ ছাড়াও নবনির্মিত প্রথম আবাসিক ছাত্রী হল উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টির অনাবাসিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা কাটছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের বৃত্তি ও উদ্দীপনা প্রদান, বিভিন্ন গবেষণাধর্মী প্রকল্প গ্রহণ, এমফিল ও পিএইচডিতে গবেষকদের ভর্তি, বিভাগে নিয়মিত শিক্ষকদের গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ও জার্নাল প্রকাশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের সেবা বৃদ্ধি, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে সাফল্য, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অংশগ্রহণ, বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারসহ পরিবহন সেবা বাড়ানোর মতো নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অল্প সময়ে নানা সংকটের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছানো চেষ্টা চলছে। আমাদের সাফল্যের প্রধান কারণ মেধাবী শিক্ষার্থী ও শিক্ষক।

উপাচার্য বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিভাগে শিক্ষক সংকট নেই। সেশনজট কমিয়ে আনা হয়েছে। অন্য সংকটগুলো সমাধানে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

ইতিহাসে অনন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

১৮৬৮ সালে ‘জগন্নাথ স্কুল’ হিসেবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে। প্রয়াত জগন্নাথ রায় চৌধুরী ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। এর সুখ্যাতি ও প্রসারে অনুপ্রাণিত হয়ে জগন্নাথ রায় চৌধুরীর ছেলে কিশোরী লাল রায় চৌধুরী ১৮৮৪ সালে এটিকে কলেজে উন্নীত করেন।

তখন এর নাম বদলে করা হয় ঢাকা জগন্নাথ কলেজ। পরবর্তী সময়ে ১৮৮৭ সালে শিক্ষা বিভাগের নির্দেশে স্কুল ও কলেজ শাখা আলাদা হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে কলেজটিতে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়। তখন এর নাম ছিল জগন্নাথ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ। এর ২৮ বছর পর ১৯৪৯ সালে এই কলেজে আবার স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৬৮ সালে জগন্নাথ কলেজ সরকারি করা হয়। ১৯৭৫ সাল শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি জগন্নাথ কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হয়। এরপর ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

কেরানীগঞ্জে সম্প্রসারণ হবে ক্যাম্পাস

২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। প্রায় ২০০ একর জমির ওপর ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা এ মাসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য নবনির্মিত বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পনা অনুসারে নতুন ক্যাম্পাসে একাধিক একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবনসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। থাকবে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসনব্যবস্থা, চিকিৎসাকেন্দ্র। ক্যাফেটেরিয়া, খেলার মাঠ, মসজিদ, সুইমিং পুল, লেক, উদ্যানসহ বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের অনুষঙ্গ যুক্ত হবে এর সঙ্গে।

নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের প্রকল্প পরিচালক সেলিম খান প্রথম আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে সব প্রক্রিয়া শেষে প্রায় ২০০ একর জায়গা পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। আগামী সাত বছরের মধ্যে সব অবকাঠামো নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।